ঢাকা,শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

পরকীয়া সহ্য করতে না পেরে স্ত্রী হত্যা করল স্বামীকে

শাহজাহান চেšধুরী শাহীন, কক্সবাজার ॥Coxsbazar bpict 19.10.2017

স্বামীর পরকীয় প্রেম সহ্য করতে না পেরেই দেবর, ভাগীনা ও স্ত্রী মিলে হত্যা করে মোঃ দেলোয়ার হোসেন প্রকাশ পুতিক্যা (৩৫) কে। গত মঙ্গলবার সকালে কক্সবাজার উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নস্থ পশ্চিম লারপাড়া ইসলামাবাদ এলাকার জনৈক আবদু শুক্কুরের জমিতে হতে উদ্ধার করা হয় দেলোয়ারের মরদেহ। স্বল্প সময়ে এই হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন ও আসামী স্ত্রী রুবি আকতারকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পুলিশ। ঘাতক স্ত্রী কক্সবাজার ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে দোষ স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করেন বলে জানিয়েছেন পুলিশ।

জানা গেছে, গত ১৭ অক্টোবর সকাল ৭ টার সময় কক্সবাজার সদর উপজেলাধীন ঝিলংজা ইউনিয়নের ০১নং ওয়ার্ডের পশ্চিম লারপাড়া ইসলামাবাদ এলাকার জনৈক আবদু শুক্কুরের জমিতে অর্ধনগ্ন ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত সন্বলিত একটি মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত ব্যক্তির নাম মোঃ দেলোয়ার হোসেন প্রকাশ পুতিক্যা (৩৫) । তাহার বাড়ী লারপাড়া ইসলামাবাদ এলাকায়। মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিহতের পরিবার বা এলাকার লোকজনের নিকট হতে পুলিশ কোন তথ্য না পাওয়ায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামী করে কক্সবাজার সদর মডেল থানার মামলা নং- ৪৪, তারিখ- ১৮/১০/২০১৭ ইং, ধারা- ৩০২/৩৪ দঃ বিঃ রুজু করা হয়। এ মামলার তদন্তভার দেয়া হয় সৈকত পুলিশ ফাঁড়ী ইনচাজ পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) মোঃ আবুল কালামকে। ১৭ অক্টোবর ময়না তদন্ত শেষে রাতেই দেলোয়ারের লাশ দাফন করা হয়।

তদন্তকারী কর্মকর্তা মোঃ আবুল কালাম জানান, মামলার তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার পর পরই কক্সবাজার সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রনজিত কুমার বড়–য়ার নেতৃত্বে পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ কামরুল আজম ও পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) জনাব মোঃ মাইন উদ্দিন এর সমন্বয়ে রহস্য উদঘাটনে নামি। পুলিশ অফিসারদেও ঐকান্তিক প্রচেষ্টার কারণে অতি স্বল্প সময়ে ক্লু-বিহীন হত্যা কান্ডের রহস্য উদঘাটন করা হয়।

তিনি আরো জানান, ঘঁনার ২৪ ঘন্টার মধ্যে হত্যাকান্ডে জড়িত মূল আসামী নিহত দেলোয়ারের স্ত্রী রুবি আকতার ও রুবি আকতারের সহযোগী নিহত দেলোয়ারের আপন ছোট ভাই কামাল হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়।

তদন্তকারী কর্মকর্তা আবুল কালাম আরো জানান, গ্রেফতারকৃতদের স্বীকারোক্তি মতে নিহতের বসতঘর হতে ঘটনাটি ভিন্ন খাতে প্রভাবিত করার অপচেষ্টা স্বরূপ ঘঁনায় জড়িতদের দ্বারা লুকায়িত নিহতের ব্যবহৃত দুইটি মোবাইল সেট, ব্যবহৃত মোটর সাইকেলের চাবি ও তার অফিসের চাবি উদ্ধার করা হয়।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রনজিত কুমার বড়–য়া জানান, হত্যা কান্ডে জড়িত মূল আসামী নিহত দেলোয়ারের স্ত্রী রুবি আকতার বুধবার কক্সবাজার আদালতে সোর্পদ করা হয়। আসামী রুবি বিজ্ঞ আদালতে দোষ স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। এই হত্যা কান্ডের প্রত্যক্ষদর্শী ও সাক্ষী নিহত দেলোয়ারের বড় ছেলে হৃদয় সুলতান তার মা’ই তার বাবাকে খুন করার বিষয়টি তদন্তকারী কর্মকর্তা ও বিজ্ঞ আদালতে জবানবন্দি প্রদান করেন।

তিনি আরো বলেন, নিহত দেলোয়ার ও রুবি আকতারের ১৭ বৎসরের দাম্পত্য জীবন। সংসার জীবনে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্বের কারণে বিশেষ স্বামীর পরকিয়া প্রেমের বিষয়টি স্ত্রী রুবি আকতার মেনে নিতে না পেরে ঝগড়া-বিবাদ হয়। এক পর্যায়ে উক্ত হত্যাকান্ডটি সংগঠিত করে নিহত দেলোয়ারের ভাই কামাল ও মূল রুবি আকতারের বোনের ছেলে বাবুর সহায়তায় মরদেহটি ঘর হতে বের করে পার্শ্ববর্তী জমিতে ফেলে রাখে।

পাঠকের মতামত: