ঢাকা,মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪

মংডুতে রোহিঙ্গাদের বাড়িঘর ভাঙচুরে বাধ্য করে ভিডিও করছে সেনারা

কক্সবাজার সংবাদদাতা ::

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু এলাকার প্রতিটি নেম্রের রোহিঙ্গা গ্রামের ২০টি করে ঘর ভাঙার দৃশ্য ধারণ করে সেই ভিডিও গতকাল শুক্রবারের মধ্যে সেনা ক্যাম্পে জমা দেয়ার নির্দেশ দেয় স্থানীয় সেনা প্রশাসন। এই নির্দেশ অমান্য করলে বাড়িঘরে আগুন দিয়ে রোহিঙ্গাদের পুড়িয়ে মারা হবে বলে হুমকি দেয়া হয়।

সীমান্তের ওপারের সুত্র জানায়, মংডু ৬ নম্বর নেম্রের রোহিঙ্গাদেরকে নিজেদের বাড়িঘর ভাঙচুর করতে বাধ্য করে ভিডিও ধারণ করছে সেনা প্রশাসন। শুক্রবার বিকেলে বস্যু পাড়া ও আইজ্জা পাড়ায় সেনা সদস্যরা ঢুকে অস্ত্রের মুখে নিজেদের ঘরবাড়ি ভাঙচুর করতে রোহিঙ্গাদের বাধ্য করে। এসময় সেনা সদস্যরা তা ভিডিও করে। আজ শনিবার দুপুরে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সেখানে ভাঙচুর চলছে বলে সূত্র জানায়।

উল্লেখ্য, মংডুর ৬নং নেম্রের ৭-৮টি গ্রামে আগে হামলা করেনি সৈন্যরা। যেকোনো মুহূর্তে সেনাদের হাতে জীবন হারানোর আশঙ্কার মধ্যেও প্রায় পাঁচ হাজার রোহিঙ্গা এখনো সেখানে বাস করছেন। অপরদিকে মিথ্যা সাক্ষ্যদাতা হিন্দুদের পুরষ্কৃত করছেন বৌদ্ধ ভিক্ষুরা।

মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর প্রলোভনে পড়ে রোহিঙ্গা মুসলমানরা হিন্দুদের হত্যা করছে এমন মিথ্যা ও বানোয়াট সাক্ষ্যদাতা হিন্দুদের পুরষ্কৃত করছেন বৌদ্ধ ভিক্ষুরা। মুসলমান বিদ্বেষি বৌদ্ধ ভিক্ষু উইরাথু ও তার সাঙ্গ-পাঙ্গরা গত শুক্রবার মংডু সফরকালে এক বৌদ্ধ বিহারে হিন্দুদের পুরষ্কৃত করেন। হিন্দুদেরকে তাদের দেয়া বিবৃতিতে অটল থাকার জন্য নগদ অর্থ দেয়া হয় বলে সূত্র জানিয়েছে।

সূত্র আরো জানিয়েছে, মংডুর ফকিরা বাজারে পাহাড়ের গণকবর থেকে উত্তোলিত রোহিঙ্গা মুসলমানদের লাশকে হিন্দুর লাশ বলে প্রচার এবং হত্যার দায় মুসলমানদের উপর দিতে কতিপয় হিন্দুকে বাধ্য করে প্রশাসন। প্রাণ বাঁচাতে হিন্দুরা বর্মী সেনাবাহিনীর শিখিয়ে দেয়া বুলি মিডিয়ার সামনে বলতে বাধ্য হয়। সেসব হিন্দুকেই পুরষ্কৃত করেছে বৌদ্ধ সন্যাসীরা।

অশ্বিন উইরাথু গত বুধবার আকিয়াব হয়ে মংডু যান। সেখানকার রাখাইনদের রোহিঙ্গা মুসলমানদের বিরুদ্ধে দাঁড় করাতে উসকানি দেন। প্রয়োজনে রাজপথে নামার নির্দেশনা দেন।

এদিকে গুপ্তচরের সহায়তায় বাংলাদেশ থেকে নিয়ে যাওয়া হিন্দু নারীদের মংডুর সেনা সদর দফতরে রাখা হয়েছে। বাড়ি-গাড়ি ও জমি জমার প্রলোভন দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে রোহিঙ্গা মুসলমান বিরোধী স্টেটমেন্ট নিয়েছে সেনাবাহিনী। সেসব প্রচার করা হচ্ছে মিয়ানমারের গণমাধ্যমে।

পাঠকের মতামত: