ঢাকা,শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

ঈদগাঁওতে আমন ধান মৌসুমে ব্যাপক ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা

2মোঃ রেজাউল করিম, ঈদগাঁও, কক্সবাজার ::
ঈদগাঁওতে ভেজাল বীজ রোপনের কারণে চলতি মৌসুমে আমন চাষে কৃষকের বড় ধরণের ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা করা হচ্ছে। বৃহত্তর এলাকার নানা অঞ্চলের কৃষকের মাঝে ভেজাল বীজ বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে প্রান্তিক কৃষকদের কাছ থেকে। একাধিক বীজ দোকান মালিক ও কতিপয় চক্র প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে কৃষকদের নানা প্রলোভনে ফেলে অধিক টাকা হাতিয়ে নেয়ার লক্ষ্যে দীর্ঘদিন ধরে ভেজাল বীজ বিক্রিতে জড়িত রয়েছে। প্রাপ্ত অভিযোগে প্রকাশ, চকরিয়ায় গড়ে উঠা বেশির ভাগ বীজ দোকান মালিক মৌসুমের শুরুতে উন্নতমানের বিভিন্ন কোম্পানীর প্যাকেট এবং লোগো জালিয়াতি করে নিজেদের গুদামে বা গোপনীয় স্থানে প্যাকেটজাত করে নি¤œমানের ভেজাল বীজ বাজারজাত করে আসছে। আর এসব ভেজাল বীজ কিনে জমিতে রোপন করে দরিদ্র কৃষকরা ফলন বিপর্যয়ের শিকার হচ্ছেন। ঈদগাঁও দক্ষিণ মাইজ পাড়ার বর্গা চাষী কৃষক আবদু শুক্কুর জানান, তিনি দু’কানি (৮০ শতক) জমি ১২ হাজার টাকায় বর্গা নিয়ে আমন মৌসুমে চাষাবাদ করেন। প্রায় তিন মাস আগে রোপন করা এ ধানের বীজ তিনি ক্রয় করেছেন চকরিয়া ডিজিটাল বীজঘর থেকে। রোপনকৃত ধানের নাম ব্রী ধান-৪৯। স্বর্ণালী বীজ কোম্পানীর উফশী জাতের এ ধান বীজের সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান হচ্ছে বীজ উৎপাদন ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠান এডভান্সড মাল্টিফার্ম লিমিটেড। ‘ভাল বীজে ভাল ফসল’ এ শ্লোগানে বাংলাদেশ-জার্মান বীজ উন্নয়ন প্রকল্পের সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠিত উক্ত কোম্পানীর ধান বীজ রোপন করলে কানি প্রতি ৮০/৯০ আরি ধান পাওয়ার কথা। চকরিয়া হারবাং গয়ালমারায় উক্ত কোম্পানীর প্রজেক্ট অফিস রয়েছে। দক্ষিণ মাইজ পাড়া মৌজায় রোপনকৃত এ চাষের জন্য তিনি ৫ কেজির ২টি প্যাকেট ৭২০ টাকা দিয়ে ক্রয় করেন উক্ত ডিজিটাল বীজঘর থেকে। প্যাকেটে উল্লেখ আছে, উক্ত আমন চাষের জীবনকাল ১৩৫ দিন। বীজ রোপনের সময় আষাঢ় মাসের ১ থেকে ৩০ তারিখ। যার গড় ফলন হবে ৫.৫। দরিদ্র এ কৃষক আরো জানান, তার ৮০ শতক জমিতে উক্ত ধানের বীজ রোপন করে এখন তিনি পড়েছেন মহাবিপদে। আমন চাষ পরিণত হয়েছে ব্রী ধান-২৮ এ। এতে তার প্রায় ৩০ হাজার টাকার মত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এতে ধানের ফলন পাওয়া যাবে কানি প্রতি সর্বোচ্চ ১৫ থেকে ১৬ আরি। এদিকে চকরিয়া উপজেলা বর্গাচাষী সমিতির সভাপতি মহি উদ্দীন পুতু বীজ জালিয়াতির কারণে তার এলাকায় অন্তত শতাধিক কৃষক প্রায় ৫০ লাখ টাকার আর্থিক ক্ষতির শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন। মৌসুমের শুরুতে চকরিয়া পৌরসভার ১নং ও ২নং ওয়ার্ডের অন্তত শতাধিক কৃষক সুপ্রীম সীড কোম্পানীর অঙ্গারিকা জাতের মরিচ রোপন করে ফলন বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছেন। পাশাপাশি ঐ এলাকার আরো অনেক কৃষক টাঙ্গাইলের মধুপুর এলাকার একটি কোম্পানীর ধানবীজ কিনে জমিতে রোপন করে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি বিভাগে অভিযোগও করেছিলেন তারা। অভিযোগের ব্যাপারে বীজ বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান চকরিয়া ডিজিটাল বীজঘরের প্রোপাইটর মো. শফিকুল ইসলামের মুঠোফোনে (০১৮১৬-০২৯০৭৩) একাধিকবার যোগাযোগ করেও সংযোগ না পাওয়ায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।

পাঠকের মতামত: