ঢাকা,শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

পেকুয়ায় অনুমোদনহীন ‘লাইফ কেয়ার হসপিটাল’র গলাকাটা বানিজ্য!

life care pekuaপেকুয়া প্রতিনিধি :::

কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার প্রশাসনের নাকের ঢগায় পেকুয়া চৌমুহুণীর পশ্চিম পার্শে একটি ভবন ভাড়া নিয়ে ‘পেকুয়া লাইফ কেয়ার হসপিটাল’র নামে অনুমোদনহীন ক্লিনিকের রমরমা বানিজ্য চলছে বলে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে কোন ধরনের অনুমোদন গ্রহণ না করেই গত ৫/৬ মাস ধরে হাসপাতাল খুলে চিকিৎসার নামে বানিজ্য চালালেও স্থানীয় প্রশাসন কোন রহস্যজনক কারণে কোন ধরনের আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। নিয়মানুযায়ী সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাছ থেকে ক্লিনিক/ হাসাপাতলে লাইন্সেস গ্রহণ করে ক্লিনিকের কার্যক্রম চালানোর সুস্পষ্ট বিধি-বিধান থাকলেও পেকুয়া লাইফ কেয়ার হসপিটালের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম! স্থানীয় প্রভাবশালী গুটিকয়েক লোক সংঘবদ্ধ হয়ে সম্প্রতি সময়ে পেকুয়া চৌমুহুনীর পশ্চিম পার্শ্বে একটি ভবন ভাড়া নিয়ে ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে সরকারী চিকিৎসকদের ভাড়া করে এনে রমরমা বানিজ্য চালাচ্ছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন। এমনকি পেকুয়া উপজেলার সাত ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের রোগীদের আকৃষ্ট করতে ওই অনুমোদনহীন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ব্যাপক মাইকিং করে প্রচার ও প্রচারণা চালাচ্ছে। আর এতে সাধারান রোগীরা প্রতিনিয়তই ওই অনুমোদনহীন হাসাপাতালে ভীড় জমাচ্ছে। অপরদিকে সরকারী অনুমোদনহীনবিহীন ওই হাসাপাতালে জরুরী বিভাগ, শিশু ওয়ার্ড় খুলে প্রতিনিয়তই রোগী ভর্তি করাচ্ছেন। আর প্রতিটি রোগীকে নানান উপায়ে তাদের ল্যাবে পরীক্ষার নামে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে অর্থ। প্রতিনিরয়তই অসংখ্য রোগী ওই অনুমোদনহীন হাসাপাতালে এসে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন।

 কক্সবাজার জেলা সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, পেকুয়া উপজেলায় লাইফ কেয়ার হসপিটাল নামের কোন হাসপাতাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে অনুমোদন নেননি। অনুমোদনের পূর্বে রোগী ভর্তি করে চিকিৎসা সেবা কার্যাক্রম পরিচালনা করা আইনত দন্ডনীয় অপরাধ।

 সরেজমিনে গত কয়েক দিন পূর্বে ওই অনুমোদনহীন হাসাপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, একটি বহুতল ভবনের পুরোটাই ভাড়া নিয়ে এক্সরে মেশিন, নানা ধরনের দামী প্যাথলজী সরঞ্জাম, চিকিৎসকদের চেম্বার, পুরুষ ওয়ার্ড়, মহিলা ওয়ার্ড়, শিশু ওয়ার্ড়, ডেলিভারী অপারেশন ওয়ার্ড়, চিকিৎসকদের প্রতিটি চেম্বারে একটি করে সিটও বসানো হয়েছে। আর হাসাপাতালের সামনে সু-বিশাল ওয়েটিং রুমও সাজানো হয়েছে। সেখানে কয়েক জন রিসিপসনিষ্ট দায়িত্ব পালন করছেন। হাসপাতালের নিচতলায় একটি ফার্মেসীও খোলা হয়েছে। দিবারাত্রি ওই ফার্মেসী খোলা রেখে হাসপাতালে আগত রোগীদের কাছ থেকে ঔষধের দাম আদায় করা হয় দ্বিগুণ হারে। আর ওই অনুমোদনহীন হাসাপাতালের চিকিৎসকরা রোগীদের প্রেসক্রিপশনের পাশাপাশি ও তাদের নিজস্ব ল্যাব থেকে নানা ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্যও বলছেন।

 খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই অনুমোদনহীন হাসাপাতালের সাথে ঢাকা ও চট্টগ্রামের কিছু অসাধু সরকারী চিকিৎসক প্রাইভেট চেম্বার খুলে গলাকাটা বানিজ্য ও শুরু করেছে। অনুমোদনহীন হাসাপাতালে সরকারী হাসপাতালের চিকিৎসকের প্রাইভেট চেম্বার খুলে কার্যক্রম চালানোর ঘটনায় হতভাগ হয়েছেন পেকুয়ার সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।

 তবে পেকুয়া লাইফ কেয়ার হসপিটাল পরিচালনার সাথে জড়িত এমন কয়েকজন ভদ্রমহোদয় দাবী করেছেন, তারা গত কয়েক মাস পূর্বে ঢাকাস্থ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে তাদের প্রতিষ্টানের অনুমোদনের জন্য আবেদন করেছেন। সরেজমিনে তদন্ত করে প্রতিবেদন অধিদপ্তরে প্রেরণের জন্য আবেদনখানা পরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে কক্সবাজার জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। তাদের হাসপাতাল অনুমোদনের অফেক্ষায় রয়েছে। আর হাসাপাতালে গলাকাটা বানিজ্যের বিষয়টি তারা সরাসরি অস্বীকার করেছেন।

 পেকুয়া স্বাস্থ্য কমপেক্সের ভারপ্রাপ্ত টিএইচও ডা: মো. মুজিবুর রহমান এ ব্যাপারে জানান, কোন প্রকার অনুমতি গ্রহণ না করেই পেকুয়া লাইফ কেয়ার হসপিটাল অবৈধভাবে কার্যক্রম চালাচ্ছে। তিনি এ ব্যাপারে খোঁজ-খবর নিয়ে উর্দ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অবগত করবেন বলে জানিয়েছেন।

পাঠকের মতামত: