ঢাকা,শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

চকরিয়ায় অনুমোদনহীন দোকানে বিক্রি হচ্ছে ভেজাল ধান বীজ, আতঙ্কে কৃষক!

amoএম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া ::

চকরিয়া উপজেলায় চলতি মৌসুমে ৪৮ হাজার ৭০ একর জমিতে আমন চাষ শেষ হয়েছে। কৃষি কর্মকর্তাদের দিকনির্দেশনায় কৃষকরা চকরিয়া শহর ও আশপাশের ইউনিয়নে অবৈধভাবে গড়ে উঠা দোকান থেকে ধান বীজ কিনে জমিতে রোপন করেছেন। কিছু এলাকায় চাষাবাদ ভাল হলেও একাধিক এলাকায় রোপনকৃত ধান ক্ষেত মরে যাচ্ছে, আবার লালচে হয়ে যাচ্ছে। বিপুল টাকা খরচ করে জমিতে চাষ করে ধানক্ষেত মরে যাওয়ার উপক্রম হওয়ার কারনে বর্তমানে ভুক্তভোগী কৃষকদের মাঝে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এদিকে ভেজাল বীজ কিনে কৃষকরা প্রতারিত হলেও উপজেলা কৃষি বিভাগ এব্যাপারে অনেকটা নির্বিকার বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।

কৃষকরা অভিযোগ করেছেন, মাঠ পর্যায়ে কর্মরত উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তাদের দিকনির্দেশনায় আমরা তাদের দেখিয়ে দেখা দোকান থেকে বীজ কিনে রোপন করেছি। এখন জমির ধানক্ষেতে থোঁড় আসার মুর্হুতে দেখছি গাছ লালচে হয়ে যাচ্ছে। আবার অনেক ক্ষেত্রে মরে যাচ্ছে। বীজ দোকানদারদের প্রতারণা ও অতি লাভের যাতাকলে আটকে গিয়ে আমাদের অপুরনীয় ক্ষতির শিকার হতে হচ্ছে।

চকরিয়া পৌরসভার সোসাইটি মসজিদের পাশে দোকানে ভেজাল ধান বীজ বিক্রির অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী কৃষকরা। প্রতারণার শিকার হয়ে গত সপ্তাহে চকরিয়া পৌরসভার ২নম্বর ওয়ার্ডের হালকাকারা গ্রামের শতাধিক গ্রাহক উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার দপ্তরে অভিযোগ করেছেন। বর্তমানে অভিযুক্ত দোকান মালিক ঘটনাটি আপোষ মিমাংসা করতে কৃষি কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন মহলে তদবির করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

সর্বশেষ চকরিয়া শহরের তিনটি দোকান থেকে ধানের বীজ ক্রয় করে কৃষকরা প্রতারনার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযুক্ত দুটি বীজ দোকানের অবস্থান চকরিয়া শহরের সোসাইটি এলাকায় ও অপরটি ডুলাহাজারা ইউনিয়নে।

উপজেলার কাকারা, লক্ষ্যারচর ও ডুলাহাজারা ইউনিয়নের ভুক্তভোগী কৃষকরা জানান, দুই মাস পূর্বে চকরিয়া শহরের সোসাইটিস্থ মোক্তার আহমদের বীজ দোকান বীজ ঘর, আল মদিনা বীজঘর ও ডুলাহাজারা কালু দোকান থেকে হরি ধান জাতের আমন ধান বীজ ক্রয় করেন। কিন্তু দোকানীরা হরি ধান জাতের ধান বীজ প্যাকেটে অন্য জাতের ধান ঢুকিয়ে দিয়ে বিক্রি করেন।

কৃষকরা জানান, হরিধান বীজ রোপনের ২০ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে ঢিলারিং অবস্থায় থোড় এবং শীষ বের হয়ে যায়। কিন্তু ভেজাল বীজ দেয়ার কারনে তাদের জমিতে এখনো ধানক্ষেতের কোন অবস্থা দেখা যাচ্ছেনা। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। ভেজাল ধান বীজে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন কৃষক উপজেলার উত্তর লক্ষ্যারচরের মাঝের পাড়া গ্রামের মোহাম্মদ ইউনুস, মনজুর আলম, ৯ নম্বর ওয়ার্ডের আনোয়ার হোসেন, আমির হোসেন, আবদুল হামিদ, আবদুল মালেক, কাকারা সাকের মোহাম্মদচর এলাকার নাজেম উদ্দিন, ডুলাহাজারা জসিম উদ্দিন ও বাটাখালীর হাবিব উল্লাহ।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো.আতিক উল্লাহ বলেন, চাষের আগে মাঠ পর্যায়ে কর্মরত উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তারা ভাল বীজ কিনতে এবং রোপন করতে কৃষকদেরকে দিকনির্দেশনা দেন। যাতে কৃষকরা ভেজাল বীজ কিনে কোন ধরণের প্রতারণা বা ক্ষতির শিকার না হন। অনেক দোকানে ভাল মানের বীজ বিক্রি করা হলেও কিছু অবৈধ মুনাফালোভী দোকানী কারসাজির মাধ্যমে ভেজাল বীজ বিক্রি করে কৃষকরা ঠকাচ্ছে। তিনি বলেন, এসব ব্যাপারে আমরা লিখিত অভিযোগ পেলে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকের ক্ষতিপুরণের ব্যবস্থা নেব। পাশাপাশি অভিযুক্ত দোকানদারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেব।#

পাঠকের মতামত: