কক্সবাজার অফিস ::

শুভ মহালয়ার মাধ্যমে গত মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। দেবী দুর্গার আগমনী বার্তা শুরু হয়েছে এই মহালয়া থেকে। আনুষ্ঠানিকভাবে পূজা ও ভক্তির মাধ্যমে দুর্গাপূজার সূচনা করা হয়। দেবী দুর্গার আগমনীর এই আয়োজনের নাম মহালয়া। তবে আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর ৬ষ্ঠীর মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে উৎসবমুখর পরিবেশে শুরু হবে শারদীয় দুর্গা পূজা। দুর্গোৎসবকে সামনে রেখে কক্সবাজার জেলার ২৯৩টি পূজা মন্ডপে চলছে প্রতিমা তৈরি ও সাজসজ্জার শেষ মুহূর্তের কাজ। তুলির আঁচড়ে দেবী দুর্গাকে পরিপূর্ণ করে তুলতে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা তৈরির কারিগররা। তুলির আঁচড়ে মা দুর্গার পাশাপাশি সুন্দর করে তোলা হচ্ছে দুর্গা, গণেশ, কার্তিক, সরস্বতী, লক্ষ্মী ও মহিষাসুরের প্রতিমা।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি রনজিত কুমার বড়–য়া বলেন, সদরে ৪৩ টি পূজা মন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। এই পকেমন্ড ঘিরে শতভাগ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পুলিশ অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সবসময় প্রস্তুত রয়েছে।
পূজা উদ্যাপন পরিষদের দেয়া তথ্য মতে, এবার জেলায় ১৩৪টি প্রতিমা ও ১৫৯টি ঘট পূজাসহ সর্বমোট ২৯৩টি পূজা মন্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। এরমধ্যে কক্সবাজার সদরে (কক্সবাজার পৌরসভাসহ) ৪৩টি প্রতিমা, ৩৮টি ঘট, চকরিয়া উপজেলায় (পৌর এলাকাসহ) ৪৪টি প্রতিমা ও ৩৭টি ঘট, পেকুয়া উপজেলায় ৬টি প্রতিমা ও ৭টি ঘট, কুতুবদিয়া উপজেলায় ১২টি প্রতিমা ও ২৮টি ঘট, উখিয়া উপজেলায় ৪টি প্রতিমা ও ৮টি ঘট, টেকনাফ উপজেলায় ৫টি প্রতিমা, রামু উপজেলায় ১৯টি প্রতিমা ও ১০টি ঘট এবং মহেশখালী উপজেলায় ১টি প্রতিমা ও ৩১টি ঘট পূজার মন্ডপ স্থাপন করা হবে। এদিকে পূজা সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। তাছাড়া গত সোমবার পুলিশ প্রশাসনের উদ্যোগে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়েছে। দুর্গাপূজা শুরুর বাকি আর মাত্র ৬ দিন। এরই মেধ্য সনাতনী সম্প্রদায়ের মানুষের মাঝে লক্ষ্য করা যাচ্ছে দুর্গোৎসবের আমেজ। শুধু সনাতনী সম্প্রদায় নয়, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এ বাংলাদেশে সকল সম্প্রদায়ের লোকজনের কাছে এ দুর্গোৎসব একটি সামাজিক উৎসবও বটে। দুর্গোৎসবকে সামনে রেখে শহরের প্রধান সড়কস্থ সরস্বতী বাড়িতে চলছে জেলার প্রবীন প্রতিমা কারিগর নেপাল ভট্টাচার্য্যর তত্ত্বাবধানে প্রতিমা তৈরির কাজ।
জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের কর্মকর্তা বলরাম দাশ অনুপম জানান, এবার জেলার ২৯৩টি পূজা মন্ডপে চলছে দুর্গোৎসবের সর্বশেষ প্রস্তুতি। জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি এডভোকেট রনজিত দাশ জানান, এবছর দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে। এখন শেষ পর্যায়ে পৌঁছেছে প্রতিমা ও পূজার মঞ্চ তৈরির কাজ। তারা পূজা সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে উদ্যাপনের জন্য প্রশাসনসহ সকল সম্প্রদায়ের মানুষের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেছেন। এদিকে পুলিশ সুপার ড. এ.কে.এম ইকবাল হোসেন জানান, পূজাকে কেন্দ্র করে বরাবরের মতোই পুলিশের পক্ষ থেকে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হবে। আর সে লক্ষ্যেই সোমবার পূজা কমিটি নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। উল্লেখ্য, আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর মহাষষ্ঠী পূজার মধ্যে দিয়ে শুরু হয়ে এ দুর্গোৎসব সপ্তমী, অষ্ঠমী ও মহানবমী শেষে ৩০ সেপ্টেম্বর বিজয়া দশমীর দিনে সমুদ্র সৈকতে প্রতিমা বির্সজনের মধ্যে দিয়ে সম্পন্ন হবে।