ঢাকা,শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

শামলাপুরে অবৈধভাবে ফিশিং ট্রলার তৈরির অভিযোগ

হাফেজ মুহাম্মদ কাশেম, টেকনাফ:
টেকনাফের উপকুলীয় ইউনিয়ন বাহারছড়ার শামলাপুরে অবৈধভাবে ফিশিং ট্রলার তৈরীর অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিভিন্ন স্থান থেকে লম্বা তক্তা সংগ্রহ করে এনে শামলাপুর সৈকতের ঝাউগাছ কেটে এসব অবৈধ ফিশিং ট্রলার তৈরীর কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে দেখা গেছে শামলাপুর সৈকত এবং শামলাপুর পুলিশ ফাঁড়ির নিকটবর্তী নয়াপাড়া আছারবনিয়ায় কয়েকটি ফিশিং ট্রলার নির্মাণাধীন। স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, মৃত পেঠান কাদেরের পুত্র নুরুল ইসলাম দীর্ঘ দিন ধরে অবৈধভাবে ফিশিং ট্রলার তৈরীর ব্যবসা করে যাচ্ছেন। বিভিন্ন স্থান থেকে লম্বা তক্তা সংগ্রহ করে এনে শামলাপুর সৈকতের ঝাউগাছ কেটে সাট, বিরালী, বাঁকা-গোছ করে এসব অবৈধ ফিশিং ট্রলার তৈরীর কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। তাঁর ছোট ভাই নুরুল আবসার বিভিন্ন স্থান থেকে লম্বা তক্তা জোগাড় করে আনেন। রাতদিন চলে কাজ। একটি ফিশিং ট্রলার তৈরী করার পর সাড়ে তিন থেকে চার লক্ষ টাকা করে বিক্রি করে থাকে।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, এসব ফিশিং ট্রলার ব্যবসায়ীরা বন বিভাগের স্থানীয় কতিপয় অসাধু কর্মকর্ত-কর্মচারীদের যোগসাজসে দুর্লভ ও মুল্যবান ‘মাদার ট্রি’ গর্জন গাছ কেটে লম্বা তক্তা চিরাই করে ফিশিং ট্রলার তৈরীর কাজে ব্যবহার করছে। টেকনাফের উপকুলীয় ইউনিয়ন বাহারছড়ার শামলাপুর থেকে সুদুর টেকনাফ সদর ইউনিয়নের দরগাহরছড়া পর্যন্ত রয়েছে প্রাকৃতিক মনোরম দুর্লভ ও মুল্যবান ‘মাদার ট্রি’ গর্জন গাছ। প্রত্যেক গাছের বয়স শত শত বছর। ফিশিং ট্রলার তৈরীতে লম্বা তক্তা দুর্লভ হওয়ায় ফিশিং ট্রলার ব্যবসায়ীরা দৃষ্টি দিয়েছে এসব শতবর্ষী গর্জন গাছের উপর। শুধু শামলাপুর নয়, বাহারছড়া ইউনিয়নের শীলখালী, জাহাজপুরা, মাথাভাঙ্গা, বড়ডেইল, রাজারছড়া এলাকায় বন বিভাগের অনুমতি ছাড়া চোরাই কাঠ দিয়ে ফিশিং ট্রলার তৈরী করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
শামলাপুর ঘাটে ফিশিং ট্রলার তৈরীর কাজে নিয়োজিত মিস্ত্রি শাহ আলম বলেন, ‘মালামাল জোগাড় থাকলে একটি ফিশিং ট্রলার তৈরীর সম্পন্ন হতে ১৫ দিনের বেশী লাগেনা। আমি বিদেশেও ফিশিং ট্রলার তৈরী করেছি।’
এব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে সহকারী বন সংরক্ষক দেওয়ান মোহাম্মদ আবদুল হাই আজাদ বলেন ‘এসব ফিশিং ট্রলার তৈরীর সরকারী কোন অনুমতি নেই। লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ ও বন ভুমিতে আশ্রয় নেয়া নিয়ে ব্যস্ত থাকা সত্বে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গত কিছু দিন আগেও বাহারছড়ার উত্তর শীলখালী মুজাহের মিয়ার বাড়ির নিকট থেকে ২ লক্ষাধিক মুল্যের ১০৩টি লম্বা তক্তা এবং শামলাপুর থেকে ৫ লক্ষাধিক টাকা মুল্যের ২টি ফিশিং ট্রলার জব্দ করা হয়েছে। শীঘ্রই অবৈধভাবে ফিশিং ট্রলার ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হবে’।

পাঠকের মতামত: