ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

ত্রাণের জন্য রোহিঙ্গাদের হাহাকার সহায়তায় এগিয়ে আসছে মানুষ

ssssssssssssssশাহজাহান চৌধুরী শাহীন, কক্সবাজার ॥

কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার পালংখালী ও কুতুপালং এলাকায় পৌছে দীর্ঘ পথ হাটার কা¬ন্তি এবং অনাহার অর্ধাহারে শিশু এবং বৃদ্ধরা অনেকে অসুসস্থ হয়ে পড়েছেন। খোলা আকাশের নিচে এসব রোহিঙ্গা নিত্য সঙ্গি হয়েছে রোদ বৃষ্টি। পেটের ক্ষুধা মেঠাতে তারা পান করছে পানি। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মাঝে খাদ্যের জন্য হাহাকার, আশ্রয়ের আশায় ছুটছে রোহিঙ্গারা।

জানা যায়, প্রাণ বাঁচাতে সীমান্ত অতিক্রম করে রোহিঙ্গারা পালিয়ে আসার সময় মিয়ানমার সেনাদের নির্যাতন ও সীমান্তে পুতে রাখা স্থল মাইন বিস্ফোরণে আহত হয়েছে অনেকে। চিকিৎসা ও ওধুদের অভাবে কাতরাচ্ছে তারা। চারদিকে কান্নার রোল আর হাহাকার পড়ে গেছে।

স্থানীয়দের মতে, রোহিঙ্গারা মানষিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছে। আশ্রয় নেয়া এসব মানুষের জন্য প্রয়োজন খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও চিকিৎসা সুবিধা। তারা মানবিক সহায়তা পাচ্ছে না। আর্ন্তজাতিক যেসব সাহায্য সংস্থা রয়েছে তাদেরও তেমন সহায়তা এখনো এসে পৌছেনি। প্রতিদিনই ব্যক্তিগত ও বিভিন্ন প্রতিষ্টানের উদযোগে কিছু কিছু ত্রাণ সহায়তা দেয়া হচ্ছে। ত্রাণ বিতরণ মনিটরিং করা জন্য খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। সেই সাথে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও প্রতিদিন ১০ হাজার রোহিঙ্গাকে রান্না করা খাবার বিতরণ করা হচ্ছে, জানালেন উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।

উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাঈন উদ্দিন জানান, রোহিঙ্গাদের মাঝে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্টান থেকে দেয়া ত্রাণ বিতরণে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা হয়েছে। রাস্তার পাশে থাকা বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থকা অনুপ্রবেশকারীদের এক জায়গায় আনার চেষ্টা অব্যাহত আছে। এতে সবাই ত্রাণ পাবে এবং রাস্তায় যানজট কমে যাব্।ে

কুতুপালং শরনার্থী শিবির ও টেকনাফের নয়াপাড়া এলাকায় ইতোমধ্যে ত্রাণ বিতরণ করেছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির একটি টিম। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীমের নেতৃত্বে টিমের সদস্যরা প্রায় ১৫০০০ মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিকদের মাঝে এ ত্রাণ বিতরণ করেন। এর আগে কক্সবাজার শহরের কলাতলি সর্বস্তরের আর্দশ গ্রামবাসির পক্ষ থেকে রোহিঙ্গার মাঝে ১৫০০ প্যাকেট রান্না করা খাবার (বিরানী) ও ৩ হাজার প্যাকেট কাপড় বিতরণ করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন, নাছির উদ্দিন, সাহাব উদ্দিন, রিদুয়ান, মহিউদ্দিন, হাজী ইলিয়াছ সওদাগর উপস্থিত ছিলেন।

স্থানীয় ভাবে ব্যক্তিগত উদযোগে যে ত্রাণ সহায়তা ও খাদ্য দেয়া হচ্ছে তা চাহিদার তুলনায় একেবারেই অপ্রতুল, জানালেন ত্রাণ দিতে আসা লোকজন।

কক্সবাজার শহরের কলাতলি আর্দশ গ্রাম হতে ত্রাণ বিদরণ করতে আসা নাছির উদ্দিন ও হাজী মোহাম্মদ ইলিয়াছ সওদাগর জানান, উখিয়ার বিভিন্ন স্থানে হাজার হাজার রোহিঙ্গা খাদ্য, পানি ও চিকিৎসা অভাব রয়েছে। খাদ্যের জন্য সর্বত্র হাহাকার বিরাজ করছে। তারা বলেন, যে যেভাবে পারেন, যার যার অস্থান থেকে রোহিঙ্গাদের ত্রাণ সহায়তা দেয়া দরকার।

গত ২৩ আগষ্টের পর থেকে পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ হয়েছে বলে ধারনা করছেন স্থানীয়রা। রাস্তার দুই পাশে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে অবস্থান নেয়া হাজার হাজার রোহিঙ্গা বিশেষ করে খাবারের আশায় অপেক্ষা করছে। খাবারবাহি কোন গাড়ি দেখলেই তারা দ্রুত ছুঠে যাচ্ছে সেদিকে। হুড়–হুড়ি করে তারা খাবার কেড়ে নেয়ার চেষ্টা করছে। পাহাড় বা বন জঙ্গলে বসতিগুলো স্থাপনা করা মানুষগুলো যেমন খাবার পাচ্ছে না, ঠিক রাস্তার পাশে যারা বসতি পাইনি বা বসতি স্থাপন করতে রাস্তার পাশে অবস্থান করছে তাদেরও একই চিত্র।

বিশ্লেষকদের মতে, এখনই এসবের জোগান নিশ্চিত না হলে সংকট হঠাৎ করে মারাত্মক আকার ধারন করতে পারে। এরপরেও ইউএনএইচসিআর নিবন্ধিত ক্যাম্পে আসা রোহিঙ্গাদের সীমিত আকারে তাবু খাদ্য ও ওষুধ বিতরণ করছেন। অনিবন্ধিত ক্যাম্পে আসা রোহিঙ্গাদের মাঝে খাদ্য, ওষুধ ও বিশুদ্ধ পানির সংকট মারাত্ম আকার ধারণ করেছে।

পাঠকের মতামত: