ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

‘রিক্সাওয়ালা থেকে কোটিপতি’ ইয়াবা চোরাচালানে ভূট্টো

yabavuttoকক্সবাজার প্রতিনিধি ::

ইয়াবা চোরাচালান চক্রের ১১ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যাদের মধ্যে অবৈধ এই মাদক ‘ব্যবসার’ অর্থের যোগানদাতারাও আছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। গ্রেপ্তারদের মধ্যে চারজন একই পরিবারের; নুরুল হক ওরফে ভুট্রো, তার ভাই নুরুল আলম এবং তাদের ভাগ্নে মো বেলাল ও জালাল উদ্দিন। বছর তিনেক আগের রিকশাচালক নুরুল হক এখন কোটি টাকার মালিক বলে জানান সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মোল্যা নজরুল ইসলাম।
এই চক্রকে ধরতে তদন্তে নেতৃত্ব দেওয়া সিআইডির এই কর্মকর্তা বলেন, “নুরুল হকের ভাগ্নে জালাল ছিল লবণ চাষী। তাদের সহযোগী হিসেবে গ্রেপ্তার নরুল আলম ছিল জেলে। “এখন এরা প্রত্যেকে কোটিপতি। চট্টগ্রামের চন্দনাইশে তাদের সুরম্য অট্টালিকা রয়েছে। প্রত্যেকের ব্যাংক ও বিকাশ একাউন্ট যাচাই করে দেখা গেছে, গত পাঁচ-ছয় মাসে তারা প্রায় ১৫ থেকে ১৬ কোটি টাকা লেনদেন করেছে।”
নুরুলদের সহযোগী হিসেবে নরুল ছাড়াও সৈয়দ আলম ও আরিফ নামে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া বিকাশ এজেন্ট আব্দুর রহমান, তৈয়ব ও নুরুল মোস্তফাসহ চারজন ধরা পড়েছে সিআইডির হাতে। তাদের কাছ থেকে শতাধিক মোবাইল সিম, ২০টি মোবাইল সেট এবং অবৈধভাবে অর্জিত ২০ লাখ টাকা জব্দ করা হয়েছে বলে সিআইডি জানিয়েছে। চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলা ও কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে সোম ও মঙ্গলবার এই ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয় জানিয়ে মোল্যা নজরুল ইসলাম বলেন, তারা সবাই ওই দুটি উপজেলার বাসিন্দা।
সিআইডির এই পুলিশ সুপার জানান, গত এপ্রিলে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানায় দায়ের হওয়া দুটি মাদক মামলা তদন্ত করতে গিয়ে এই চক্রের সন্ধান পান তারা। একজনের কাছ থেকে তিন হাজার এবং অপর একজনের কাছ থেকে পাঁচ হাজার ইয়াবা উদ্ধার নিয়ে ওই মামলা দুটি হয়েছিল। তদন্তে গিয়ে তারা ইয়াবা চোরাচালানে অর্থের যোগানদাতাদের চিহ্নিত করার উপর গুরুত্ব দিয়ে এই চক্রটিকে ধরেন বলে জানান মোল্যা নজরুল।
“এরাই মূলত ইয়াবা ব্যবসায় কোটি টাকা অর্থের যোগান দিত। তারা নিজ নিজ পেশার ফাঁকে ইয়াবা ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে এবং খুব অল্প সময়ের মধ্যে কোটিপতি হয়ে এই ব্যবসায় অর্থের যোগান দেওয়া শুরু করে।” চক্রের প্রধান নুরুল হক ভুট্রোর বিরুদ্ধে সাতটি মাদক মামলা থাকলেও তিনি এর আগে ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিলেন। এদের বিরুদ্ধে মুদ্রাপাচার প্রতিরোধ আইনেও মামলা হয়েছে বলে সিআইডি কর্মকর্তা নজরুল জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে ১৩ মে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে ভূট্টো এবং তার বাহিনীর হামলার শিকার হন কক্সবাজারের কর্মরত ছয়জন টিভি সাংবাদিক। এসময় তাদের কাছে থাকা ক্যামেরা, ল্যপটপ সহ ব্যবহৃত গাড়ি ভাংচুর করা হয়। হামলার দুই দিন পর ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের সাংবাদিক তৌফিকুল ইসলাম লিপু বাদী হয়ে ভুট্টোকে প্রধান আসামী করে টেকনাফ থানায় একটি দ্রুত বিচার আইনের মামলা করেন।

পাঠকের মতামত: