ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

লামায় শ্রেণী কক্ষে বৃষ্টির পানি ছাত্রছাত্রীরা ছাতা নিয়ে ক্লাস করছে

Lama-লামা প্রতিনিধি ::

শ্রেণী কক্ষের ভিতর বৃষ্টির পানি পড়ায় ছাতা খোলে ক্লাস করছে লামা পৌর শহরের ৪নং ওয়ার্ডে অবস্থিত চেয়ারম্যাম পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা। ব্যবহারের উপযোগী ভবন না থাকায় এ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাঠদান চলছে এভাবে। স্কুলটির ভাঙ্গা ভবন নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। বৃষ্টিতে প্রতিনিয়ত ভিজার কারণে ছাত্র- ছাত্রীরা রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আব্দুর রহিম এ প্রতিবেদককে বলেন, বিদ্যালয়ের এ ভবনটি ১৯৮১ সালে নির্মান করা হয়। গত ২০১১ সালে টিনসেড এ ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। বিদ্যালয়ের শ্রেণী কক্ষসহ নানা সমস্যা উল্লেখ করে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয় ও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সূত্র জানায়, ১৯৮১ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয় এবং একই বছর ৩ কক্ষ বিশিষ্ট ভবনটি নির্মাণ করা হয়। ভবনটির বিভিন্ন অংশে ফাটল এবং টিনগুলো ছিদ্র হয়ে যায়। ভবনটির নড়বড় অবস্থা দেখে ২০১১সালে ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী বেশী হওয়ার কারণে কোন উপায় না দেখে শিক্ষকরা উক্ত ঝুকি পূর্ণ ভবনের মাঝে পাঠদান চালাচ্ছে। বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে শিক্ষার্থী রয়েছে ৩৬১ জন। শিক্ষক ১০জন। তৎমধ্যে কর্মরত আছেন প্রধান শিক্ষকসহ ৬জন। বাকী ৪জন শিক্ষকের মধ্যে দু’ই সহকারী শিক্ষিকা মাতৃত্বকালীন, অক্যাচিং মার্মা ডিপিএড ট্রেনিংয়ে আছেন। তবে বিদ্যালয়ে শিক্ষক স্বল্পতার মাঝেও গত গত ১৭ জুলাই জেলা শিক্ষা অফিস রিক্তা আরা বেগম নামের সহকারী শিক্ষককে ডেপুটিশনে নাইক্ষ্যংছড়ি মডেল মডেল সরকারী বিদ্যালয়ে পাঠিয়েছে।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক উথোয়াই য়ই মার্মা জয়, মিরা রানী দাশ, ফারহেনা ভবন, রাবেয়া বসরী প্রথম আলোকে বলেন, বিদ্যালয়টিতে ভবন ছাড়াও হাই বেঞ্চ লো-বেঞ্চ সংকট রয়েছে। এ ছাড়া পানির সংকট রয়েছে। দুটি শৌচাগারের একটি ভেঙে গেছে। তারা বলেন, শ্রেণী কক্ষ না থাকার কারণে আমরা বাধ্য হয়ে পরিত্যাক্ত ভবনে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করতে হচ্ছে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা যতিন্দ্র মমোহন মন্ডল বলেন, বিদ্যালয়ের ভবনের জন্য মন্ত্রণালয়ে পত্র পাঠিয়েছি। জরুরী ভিত্তিতে বিদ্যালয়ের পাঠদানের জন্য আঁপাতত কাঁচা কোন ঘর তৈরী করার ব্যবস্থা থাকলে শিক্ষা অফিস তড়িঘরি করে করে দিতো।
বিদ্যালয় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের পুরানো ভবনটিতে বড় বড় ফাটল। টিন ছিদ্র হয়ে পড়ায় শ্রেণী কক্ষে বৃষ্টির পানি পড়ছে। এর মাঝে ৩য় শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীরা শ্রেণী কক্ষে ছাতাখুলে ক্লাস করছেন। এর কারণে ছাত্র-ছাত্রীদের বই খাতান ভিজে নষ্ট হচ্ছে। পাশাপাশি ছাত্র-ছাত্রীরা প্রতিনিয়ত বৃষ্টি ভিজার কারণে অসুখে আক্রান্ত হয়ে পড়ছে।
৩য়শ্রেণীর ছাত্রী কনিকা আক্তার,মোঃ সাকিন ও নিশা পুরিমোঃমেহেদী হাসান এর কাছে জানতে চাইলে তারা বলে বৃষ্টি পড়লে বৃষ্টির মাঝে আমাদের ছাতা খুলে ক্লাস করতে হয়। এ বর্ষায় প্রতিদিন ক্লাসে ভিজতে হয় আমাদের। আমরা ভিজে ভিজে বাড়ি চলে যায়। আমাদের অনেক কষ্ট হচ্ছে। আমাদের শ্রেণী কক্ষটি জরুরী ভিত্তিতে মেরামত করার দাবী জানিয়ে বিদ্যালয়ে আরেকটি নতুন ভবনের দাবী করে ছাত্র- ছাত্রীরা।

পাঠকের মতামত: