ঢাকা,বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

সৌদি আরবে বিয়ের বয়স পেরিয়ে গেছে ৪০ লাখ নারীর

ksa-kingঅনলাইন ডেস্ক ::

সৌদি আরবে ৪০ লাখ নারীর বিয়ের বয়স পেরিয়ে গেছে। এর মধ্যে রয়েছেন বিধবা, তালাকপ্রাপ্তা ও অবিবাহিত নারী। এটাকে উদ্বেগজনক এক প্রবণতা হিসেবে আখ্যায়িত করেছে অনলাইন সৌদি গেজেট। এতে বলা হয়েছে, ২০১৫ সালেই সৌদি আরবে বিয়ের বয়স পাড় করেছেন ৪০ লাখ। এখন পরিসংখ্যানের রিপোর্ট অনুযায়ী তারপর থেকে এ সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছেই। এত বেশি যুবতীর বিয়ে বয়স পেরিয়ে যাওয়ায় তাদের পরিবারগুলো রয়েছেন উদ্বেগে। মেয়ের ভবিষ্যত কি হবে তা নিয়ে সবচেয়ে আতঙ্কে রয়েছেন তারা। আল আহসা সিটির একটি মসজিদের ইমাম ড. আহমেদ আলবো আলী। তিনি বলেন, সৌদি আরবে বিয়ের স্বাভাবিক বিয়ের বয়স পেরিয়ে গেছে এমন নারীর সংখ্যা ২০০৫ সালে ছিল ১৫ লাখ। ২০১৫ সালে এসে তা দাঁড়িয়েছে ৪০ লাখে। এর অর্থ হলো গত ১০ বছরে সৌদি আরবের ৩০ বছরের বেশি বয়সী নারীদের দুই-তৃতীয়াংশ বিয়ে করেন নি। বিধবা বা তালাকপ্রাপ্তা নারীর আবার বিয়ে করার পূর্ণাঙ্গ অধিকার আছে। তবে বেশির ভাগ মানুষ ওইসব যুবতীকে বিয়ে করতে পছন্দ করেন যাদের এর আগে বিয়ে হয় নি। এর ফলে বিধবা ও তালাকপ্রাপ্তা নারীর সংখ্যা বাড়ছে। এটা এমন নারীদের কোনো ভুল নয়। যেসব যুবতীর এখনও বিয়ে হয় নি তাদের চেয়ে এসব নারীর সচেতনতার মাত্রা বেশি। তবে এমনও অনেক তালাকপ্রাপ্তা নারী আছেন, যারা আবার বিয়ে করে স্বামীর সঙ্গে সুখী দাম্পত্য জীবন যাপন করছেন। আল ওয়ুন সিটি ফ্যামিলি ডেভেলপমেন্ট সেন্টারের পরিচালক মুহাম্মদ আল সালিম বলেছেন, তালাকপ্রাপ্তা নারীকে ভিন্ন চোখে দেখা হয় আরবের সমাজে। তাদের বিষয়ে সমাজে এক রকম ব্যাধি আছে। বেশির ভাগ মানুষই তালাক পাওয়ার জন্য নারীদের দায়ী করেন। এতে এসব নারীর প্রতি অবিচার করা হয়। তার মতে, একজন তালাকপ্রাপ্তা নারীর বিষয়ে তড়িঘড়ি করে এমন ধারণা নেয়া ভুল। এমনও তো হতে পারে ওই নারী নিরপরাধ। তিনি কোনো নিষ্ঠুর স্বামীর নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। অথবা এমনও তো হতে পারে যে, তিনি স্বামীর মাদকাসক্তির শিকার। তাই তালাকপ্রাপ্তা নারীর বিষয়ে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টানো উচিত। সামাজিক উন্নয়ন বিষয়ক বিশেষজ্ঞ হোসেন আল ওবাইদা তালাকপ্রাপ্তা নারীর সংখ্যা এত বেড়ে যাওয়ার জন্য সামাজিক যোগাযোগ বিষয়ক ওয়েবসাইটের বিস্তারকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, একে অন্যের খেয়াল রাখার পরিবর্তে স্বামী ও স্ত্রীরা এখন এসব সামাজিক ওয়েবসাইটে বেশি সময় ব্যস্ত থাকেন। এর ফলে একের প্রতি অন্যের যে আবেগ বা ভালবাসা থাকে তা কমতে থাকে। এর বাইরেও অনেক স্বামী আছেন, যিনি বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে বেশি ব্যস্ত থাকেন। এসব কারণে একজন নারী বীতশ্রদ্ধ হয়ে পড়েন। এতে তালাকের ঘটনা ঘটে। সমাজকর্মী আহমেদ আল ওতাফি বলেন, অনেক আরব দেশ আছে, যেখানে বিয়ের বয়স পেরিয়ে যাওয়া নারীদের সংখ্যা বাড়ছে। এর মধ্যে অনেকে পোস্ট গ্রাজুয়েট সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে করতে রাজি হন না। আবার অনেক যুবতীর বিয়েই করা হয় না। কারণ, তাদের পরিবারের সদস্যরা তাদেরকে অনুমতি দেন না। এসব নারী তার পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম হওয়ায় এমনটি ঘটে।

পাঠকের মতামত: