ঢাকা,শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

জেলার অধিকাংশ এনজিও মহাজনী ব্যবসায়

সৈয়দুল কাদের :
জেলায় অধিকাংশ এনজিও সেবামুলক কার্যক্রমের চেয়ে ঝুঁকে পড়ছে মহাজনী ব্যবসায়। কয়েকটি এনজিও সেবামুলক কার্যক্রমকে অগ্রাধিকার দিয়ে ক্রেডিট প্রোগ্রাম চালালেও অন্যরা অনেক পিছিয়ে। এ ছাড়া জেলা প্রশাসনের তালিকাভুক্ত ৯৪টি এনজিও’র মধ্যে অধিকাংশের কোন কার্যক্রম নেই। এখন নিজেদের সাইনবোর্ডই প্রধান সম্বল। কোন কর্মকর্তা কর্মচারী কিংবা অফিস নেই এসব এনজিও’র। যিনি পরিচালক তিনি মালিক। তালিকভুক্ত ৯৪ এনজিও’র অধিকাংশই অস্তিত্বহীন। যেগুলো সচল আছে এদের অধিকাংশ মহাজনী ব্যবসাকেই প্রাধান্য দিচ্ছে। কোথাও সাইনবোর্ডও নেই, অফিস নেই এমন এনজিও রয়েছে কক্সবাজারে। অনেক খোঁজ করেও তাদের অস্তিত্ব পাওয়া কঠিন হলেও জেলা প্রশাসনের তালিকায় নাম আছে খুব সুন্দর ভাবে। অনেকে সাইনবোর্ডটি ঝুলিয়ে দিয়েছেন কোন বাসাবাড়ি কিংবা দোকানে। তালিকা অনুযায়ী সরকারি/বেসরকারি বিভিন্ন দাওয়াতে অংশগ্রহনই তাদের প্রধান লক্ষ্য। তবে পুরোদমে সক্রিয় রয়েছে এমন এনজিও রয়েছে অন্তত ২০/২৫টি।
জানা যায়, বিভিন্ন দাতা সংস্থা দেশে বিভিন্ন প্রকল্প এনজিও’র মাধ্যমে বাস্তবায়ন করায় অনেক এনজিও নিবন্ধিত হয়। নিবন্ধিত এনজিও এর মধ্যে সুনামের সাথে কাজ করছে এমন এনজিও’র সংখ্যা কম নয়। দাতা সংস্থাগুলো বিগত সময়ে জনস্বাস্থ্য, সচেতনতামুলক, নারী অধিকার প্রতিষ্ঠা নিয়ে বিভিন্ন প্রকল্পে সহযোগীতা দিয়েছে বিগত সময়ে। বর্তমানে এ সব প্রকল্প আর বাস্তবায়ন করছেন না দাতা সংস্থাগুলো। তারা এখন বিভিন্ন কারিগরি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়ার উপর গুরুত্বারোপ করে বিভিন্ন প্রকল্প দিচ্ছে দক্ষতা সম্পন্ন বিভিন্ন এনজিওকে। তাই দাতা সংস্থাগুলো অর্থায়নে প্রস্তুত থাকলেও দক্ষতার অভাবে প্রকল্প গ্রহন করতে পারছে না অধিকাংশ এনজিও। যার ফলে সাইনবোর্ড সর্বস্ব হয়ে পড়েছে নিবন্ধিত অধিকাংশ এনজিও।
কক্সবাজারে ৯৪টি এনজিও’র মধ্যে রয়েছে, বাংলা জার্মান সম্প্রীতি, বাস্তব, প্রশিকা, পালস, আশা, সার্ভ, মুক্তি কক্সবাজার, জেলা উপকূলীয় পল্লী উন্নয়ন পরিষদ, ব্রাক, আরডিএফ, ওয়ার্ল্ড ভিশন, কনসার্স ইউনির্ভাসেল, বায়তুশ শরফ, কেয়ার বাংলাদেশ, আইডিএফ, উদ্দিপন, বিসিভিডি, সিএনআর এস, ইসলামিক রিলিফ ওর্য়াল্ড ওয়াইড, এফডিএসআর, সিডিএস, প্রত্যয়, কোষ্ট ট্রাস্ট, হেলফ কক্সবাজার মেরি স্টোফ, এফপিএবি, গণস্বাস্থ্য,একলাব, সেইভ দ্যা সিলড্রেন ইন্টারন্যাশনাল, ইফসা, কোডেক, রিক, প্রত্যাশী, মেঘনা সোস্যাল হেলথ এন্ড ডেভলাবমেন্ট ফাউন্ডেশন, এসিডিআই, সিসিডবি, সেড, আনন্দ, ইসডো, আজাদ, কারিতাস বাংলাদেশ, হীড বাংলাদেশ, ঘরণী বাংলাদেশে, সিডিএস, ব্যুরো বাংলাদেশ, নোঙ্গর, গ্রীণ কক্সবাজার, এ এসসি, ওবিনীগ, ওসেড, ওয়েস্কা ম্যানগ্রোভ রিফরেট্রেশন প্রজেক্ট, টিআইবি, জনতা, এক্সফেউরুল, ডাকভাঙ্গা, সিলেট যুব একাডেমী, চট্টগ্রাম তৃণমুল ফাউন্ডেশন, শহিদুল আলম ফাউন্ডেশন, শক্তি ফাউন্ডেশন, ওয়েট এনসি, হোফ ফাউন্ডেশন, ভিটা, গ্রীণ বাংলাদেশ, ভার্ক, প্রয়াশ, মুসলিম এইড, কান্ট্রি ভিশন, উন্নত বাংলাদেশ, হিউম্যান এ্যাপিল, ফ্রেব, এসিএফ, দুর্জয় নারী সংঘ, পদক্ষেপ মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্র, সিসিডিআর, প্রকাশ গনকেন্দ্র, নেচার কনজারভেশন ম্যানেজম্যান্ট, বিয়ান মনি সোসাইটি, সচেতন বাংলাদেশ, রিসো কোসোই কাই, সলিডারিটি ইন্টারন্যাশনাল, ব্লাস্ট, অগ্রযাত্রা, খান ফাউন্ডেশন,দি লেপ্রসি মিশন, এসডিআই, এসভিডিডিও।
মুক্তি কক্সবাজারের তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তা অশোক কুমার চৌধুরী জানিয়েছেন, একটি ক্রেডিড প্রোগ্রাম ছাড়া আর সবক’টি প্রকল্পই সেবামুলক। বিভিন্ন দাতা সংস্থার কাজ বাস্তবায়ন করছে মুক্তি। এখনো অন্তত ১০/১১টি সেবামুলক প্রকল্প চলমান রয়েছে। যা নিখুঁতভাবে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
খুব সক্রিয় ভাবে কার্যক্রম চালাচ্ছে এমন এনজিও বাংলা জার্মান সম্প্রীতির প্রকল্প পরিচালক মোঃ আবদুর রহিম জানিয়েছেন, জার্মান সম্প্রীতি ইতোমধ্যে কয়েকটি সরকারী ও দাতা সংস্থার প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। আর্ন্তজাতিক অভিভাসন সংস্থার প্রকল্প এখন চলমান রয়েছে। টেকনাফ-উখিয়ার ৫টি ইউনিয়নে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে।
এনজিও পালস এর প্রকল্প বাস্তবায়নকারী কর্মকর্তা আবিদুর রহমান জানিয়েছেন, ৬/৭টি শিক্ষামুলক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে এই সংস্থা। যা করা হচ্ছে সব সেবামুলক কাজ। এখানে মাইক্রোক্রেডিটের কোন কার্যক্রম নেই।
জেলা উপকূলীয় পল্লী উন্নয়ন পরিষদের প্রকল্প পরিচালক নুরুল আমিন ছিদ্দিক বিগত সময়ে কিছু কাজ করেছেন বলে তিনি দাবী করেন।

পাঠকের মতামত: