ঢাকা,শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

বিশ্বজিৎ হত্যা: ফাঁসির দণ্ড থেকে ছাত্রলীগের ৬ জনের রেহাই

014356kalerkantho-07-08-2017-26অনলাইন ডেস্ক :::

বিএনপি জোটের ডাকা অবরোধের মধ্যে পুরান ঢাকায় দিনদুপুরে নৃশংসভাবে কুপিয়ে ও পিটিয়ে নিরীহ দর্জি দোকানি বিশ্বজিৎ দাসকে হত্যা করেছিল ছাত্রলীগ ক্যাডাররা। সেই খুনের মামলায় আটজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন নিম্ন আদালত। দণ্ডিতদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানি শেষে গতকাল রবিবার হাইকোর্ট রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে দুজনের ফাঁসি বহাল রেখেছেন;  ফাঁসির দণ্ড পাওয়া অন্য চারজনের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। বাকি দুজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে। অন্য আসামিদের মধ্যে নিম্ন আদালতের রায়ে যাবজ্জীবন পাওয়া দুজনকেও খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট।

গতকাল বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। এ মামলার ২১ আসামির মধ্যে পলাতক রয়েছে ১৩ জন। তাদের মধ্যে নিম্ন আদালতের রায়ে যাবজ্জীবন দণ্ড পেয়েছে ১১ জন। রায়ের বিরুদ্ধে আপিল না করায় তাদের বিষয়ে হাইকোর্ট রায়ে কোনো মন্তব্য করেননি। এ অবস্থায় আইনজীবীরা বলেছেন, পলাতক ১১ জনের ক্ষেত্রে আগের যাবজ্জীবনের সাজা এখনো বহাল থাকবে। আসামিদের সবাই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সাবেক নেতাকর্মী।

বিশ্বজিতের লাশের সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনকে ত্রুটিপূর্ণ উল্লেখ করে হাইকোর্ট সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তা ও চিকিৎসকের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। আদালত বলেছেন, সুরতহাল প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে—বিশ্বজিতের হাতে একটি কোপের চিহ্ন রয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বিশ্বজিতের শরীরে একটি কোপ রয়েছে। অথচ গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন সংবাদচিত্র ও ভিডিও চিত্র এবং সাক্ষীদের জবানবন্দিতেও এটা স্পষ্ট যে বিশ্বজিৎকে উপর্যুপরি আঘাতে হত্যা করা হয়েছে। রায়ে বলা হয়েছে, গণমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিও চিত্র ও স্থিরচিত্র আমলে নিয়েই বিচারকাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের এসব চিত্র অবশ্যই বিচারার্থে গ্রহণ করা প্রয়োজন বলেও মনে করেন হাইকোর্ট। ২০১৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪-এর বিচারক এ বি এম নিজামুল হক বিশ্বজিৎ হত্যা মামলার রায় দেন। ওই রায়ে আটজনের মৃত্যুদণ্ড এবং ১৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। নিম্ন আদালতের রায়ের পর দণ্ডিতদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানি হয় হাইকোর্টে। শুনানি শেষে গতকাল রায়ের জন্য দিন নির্ধারিত ছিল। হাইকোর্টের রায়ে ছাত্রলীগ ক্যাডার রফিকুল ইসলাম ওরফে শাকিল (চাপাতি শাকিল) ও রাজন তালুকদারের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়েছে। মাহফুজুর রহমান নাহিদ, ইমদাদুল হক এমদাদ, জি এম রাশেদুজ্জামান শাওন ও মীর মো. নূরে আলম লিমনের মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। নিম্ন আদালতে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া দুই ছাত্রলীগ ক্যাডার কাইউম মিয়া টিপু ও সাইফুল ইসলামকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট।

 নিম্ন আদালতের রায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পেয়েছিল গোলাম মোস্তফা ও এইচ এম কিবরিয়া। রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছিল তারা। হাইকোর্টের রায়ে তারাও খালাস পেয়েছে। এ দুজনসহ মামলার আসামিদের মধ্যে ৯ জন কারাগারে রয়েছে। পলাতক ১৩ জনের মধ্যে হাইকোর্টে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত রাজন তালুকদার এবং যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত নূরে আলম লিমনও রয়েছে।

নিম্ন আদালতে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামিরা হলো খন্দকার মো. ইউনুস আলী, তারিক বিন জোহর তমাল, মো. আলাউদ্দিন, ওবায়দুল কাদের ওরফে তাহসিন, ইমরান হোসেন ইমরান, আজিজুর রহমান ওরফে আজিজ, আল আমিন শেখ, মো. রফিকুল ইসলাম, মনিরুল হক পাভেল, কামরুল হাসান ও মোশারফ হোসেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নজীবুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, যারা আপিল করেনি তাদের সাজা বহাল রয়েছে। তাদের কেউ যখন গ্রেপ্তার হবে বা আদালতে আত্মসমর্পণ করবে এবং যদি কখনো আপিল করার সুযোগ পায় তবেই তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। আপিল না করা পর্যন্ত সাজা বহাল থাকবে।

পুলিশ ও চিকিৎসকের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ : বিশ্বজিৎ নিহত হওয়ার পর লাশের সুরতহাল প্রস্তুতকারী সূত্রাপুর থানার এসআই জাহিদুল হক ও ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মাকসুদুর রহমানের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। তাঁদের প্রতিবেদন ত্রুটিপূর্ণ উল্লেখ করে হাইকোর্ট উষ্মা প্রকাশ করে বলেন, তদন্তে গাফিলতি সমাজকে বিপন্ন করতে পারে। এ জাতীয় চাঞ্চল্যকর ঘটনা তদন্তে ত্রুটির কারণে আরেকটি অপরাধের ক্ষেত্র প্রস্তুত করে।

রায়ে বলা হয়, মামলায় দাখিলকৃত বিভিন্ন প্রতিবেদন, সাক্ষীদের জাবনবন্দি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, বিশ্বজিৎ নিহত হওয়ার পর তাঁর লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে এসআই জাহিদ উল্লেখ করেছেন, বিশ্বজিতের হাতে একটি কোপের চিহ্ন রয়েছে। ময়নাতদন্তকারী ডা. মাকসুদ উল্লেখ করেছেন, বিশ্বজিতের শরীরে একটি কোপ রয়েছে। কিন্তু গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন সংবাদচিত্র ও ভিডিও চিত্রে দেখা গেছে, বিশ্বজিতের শরীরে উপর্যুপরি কোপের চিহ্ন রয়েছে। একাধিক ব্যক্তি মিলে বিশ্বজিৎকে কোপানোর চিত্র রয়েছে। বিশেষ করে বিশ্বজিতের ভাই উত্তম দাস ও অন্য সাক্ষীদের জবানবন্দিতেও এটা স্পষ্ট যে বিশ্বজিৎকে উপর্যুপরি আঘাতে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশ ও চিকিৎসক কিভাবে এ ধরনের প্রতিবেদন দিয়েছেন তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে হবে।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তদন্তের নির্দেশ দিয়ে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ও পিস ফর বাংলাদেশের সভাপতি অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদকে তদন্ত কার্যক্রমের পর্যবেক্ষকও নিয়োগ দেন হাইকোর্ট। তাঁকে তদন্ত কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে সময়ে সময়ে হাইকোর্টকে অবহিত করতে বলা হয়।

রায়ে বলা হয়েছে, গণমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিও চিত্র ও স্থিরচিত্র আমলে নিয়েই বিচারকাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের এসব চিত্র অবশ্যই বিচারার্থে গ্রহণ করা প্রয়োজন বলেও মনে করেন হাইকোর্ট। রায়ে গণমাধ্যমের প্রশংসা করা হয়।

প্রসঙ্গত, বিশ্বজিৎকে হত্যার নির্মম চিত্র ধারণ করে কয়েকটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল। বিভিন্ন পত্রিকার সংবাদকর্মীরাও বিশ্বজিৎকে হত্যার আলোকচিত্র ধারণ করেন। এগুলো গণমাধ্যমগুলো ফলাও করে প্রচার করে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ভিডিও ও স্থিরচিত্রের ফুটেজগুলো সংগ্রহ করে আলামত হিসেবে জব্দ করেন, যা আদালতে দাখিল করা হয়। আদালতও এসব চিত্র পর্যবেক্ষণ করেন বলে জানা গেছে। এতে গ্রেপ্তার আসামিদের জড়িত থাকার প্রমাণ রয়েছে। কার গায়ে কোন পোশাক ছিল, পায়ে কী ছিল, কে কিভাবে বিশ্বজিৎকে কুপিয়েছে, মেরেছে, তাও এসব চিত্রে স্পষ্ট হয়।

বিচারিক আদালতের রায় : বিচারিক আদালতের রায়ে দর্জি দোকানি বিশ্বজিৎকে হত্যার দায়ে আটজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ১৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। ফাঁসির দণ্ড পেয়েছিল ছাত্রলীগ ক্যাডার রফিকুল ইসলাম ওরফে শাকিল (চাপাতি শাকিল), রাজন তালুকদার, মাহফুজুর রহমান নাহিদ, ইমদাদুল হক এমদাদ, জি এম রাশেদুজ্জামান শাওন, কাইউম মিয়া টিপু, সাইফুল ইসলাম ও মীর মো. নূরে আলম লিমন।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পেয়েছিল খন্দকার মো. ইউনুস আলী, তারিক বিন জোহর তমাল, গোলাম মোস্তফা, মো. আলাউদ্দিন, ওবায়দুল কাদের ওরফে তাহসিন, ইমরান হোসেন ইমরান, আজিজুর রহমান ওরফে আজিজ, আল আমিন শেখ, মো. রফিকুল ইসলাম, এইচ এম কিবরিয়া, মনিরুল হক পাভেল, কামরুল হাসান ও মোশারফ হোসেন।

নিম্ন আদালতের রায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি ১৩ আসামিকে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। জরিমানার টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হলে প্রত্যেককে আরো এক বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে বলে রায়ে বলা হয়। এ ছাড়া এ দণ্ডের অতিরিক্ত বেআইনি সমাবেশে অংশ নেওয়ার অপরাধে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তদের প্রত্যেককে ছয় মাস করে কারাদণ্ড ও ৫০০ টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরো ১৫ দিন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছিলেন ট্রাইব্যুনাল।

মামলা দায়েরের এক বছর ১০ দিনের মাথায় বিচারকাজ শেষ হয়। ট্রাইব্যুনাল রায়ে বলেন, মানবসমাজে কোনো রকম অশান্তি সৃষ্টি, নৈরাজ্য, বিশৃঙ্খলা, হানাহানি, উগ্রতা, বর্বরতা, সহিংসতা ও হত্যাকাণ্ড কোনো বিবেকবান ও গণতন্ত্রকামী মানুষের কাম্য নয়। এ কারণে এ ধরনের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। বিচারক বলেন, ধনী, গরিব, প্রভাবশালী, ছাত্র বা যে ধরনের ব্যক্তিই হোক না কেন, হত্যাকারীর বিচার হতেই হবে। আর যথাযথ শাস্তি তার প্রাপ্য।

ট্রাইব্যুনাল রায়ে আরো বলেন, আলোচ্য খুন নিষ্ঠুর, মর্মান্তিক ও বর্বরোচিত বিধায় এ মামলার ঘটনা, পারিপার্শ্বিক অবস্থা, অপরাধের মাত্রা ও গভীরতা বিবেচনায় কয়েক আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া সমীচীন মনে করেন আদালত। অন্যদেরও ঘটনায় অংশগ্রহণের কারণে সাজা দেওয়া প্রয়োজন।

ঘটনার বিবরণ : ২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর বিএনপি জোটের অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে সকাল সোয়া ৯টার দিকে ঢাকা জজকোর্ট এলাকা থেকে বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত আইনজীবীরা একটি মিছিল নিয়ে বাহাদুর শাহ পার্কের (ভিক্টোরিয়া পার্ক) কাছে গেলে দুটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটে। এ সময় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও কবি কাজী নজরুল কলেজ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আইনজীবীদের ধাওয়া করে। দুই পক্ষের মাঝে পড়েন পথচারী দর্জি দোকানি বিশ্বজিৎ। তাঁকে ছাত্রলীগের মিছিল থেকে কয়েকজন ছাত্র ধাওয়া করে। তাড়া খেয়ে দৌড়ে পার্কের পাশেই একটি মার্কেটের দোতলায় ডেন্টাল ক্লিনিকে আশ্রয় নেন বিশ্বজিৎ। মিছিলকারীদের মধ্য থেকে কয়েকজন দোতলায় গিয়ে বিশ্বজিৎকে এলোপাতাড়ি লোহার রড দিয়ে মারধর করে এবং চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। এরপর বিশ্বজিৎকে সেখান থেকে শার্টের কলার ধরে টেনেহিঁচড়ে রাস্তায় এনে নির্দয়ভাবে পেটাতে থাকে। গুরুতর আহত অবস্থায় বিশ্বজিৎ দৌড়াতে থাকেন। কিন্তু একপর্যায়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এ সময় রিকশাচালক রিপন মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে যান বিশ্বজিৎকে। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

এরপর পুলিশের এসআই জালাল উদ্দিন বাদী হয়ে সূত্রাপুর থানায় একটি মামলা করেন। ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।

মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য অভিযোগপত্র দেওয়ার পর তা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়। পরে ২১ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।

স্বীকারোক্তি : মামলার পর আটজন আসামিকে পর্যায়ক্রমে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের মধ্যে শাকিল, নাহিদ, ইমদাদ ও শাওনকে গ্রেপ্তারের পর তারা বিশ্বজিৎ হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা আদালতে স্বীকার করে। একই সঙ্গে এ ঘটনায় কারা জড়িত ছিল, তাদের ভূমিকা কী ছিল তাও আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বর্ণনা করে। ঘটনার পর এই আসামিদের স্বীকারোক্তি মতে ঘটনায় ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্রও জব্দ করা হয়।

‘রায় মানি না’ : শরীয়তপুর প্রতিনিধি জানান, উচ্চ আদালতের রায় শোনার পর অসন্তোষ প্রকাশ করেছে বিশ্বজিতের পরিবার। বাবা অনন্ত দাস ও মা কল্পনা রানি দাস কালের কণ্ঠকে বলেছেন, ‘প্রায় পাঁচ বছর ধরে আমার ছেলে আমাকে মা বলে ডাকে না। মা হিসেবে এটা যে কত বেদনাদায়ক তা কি কেউ বোঝে না? ওর মৃত্যুর পরের বছর আটজনের মৃত্যুদণ্ড এবং ১৩ জনের যাবজ্জীবন সাজা হলো। আশায় বুক বেঁধে ছিলাম অপরাধীদের শাস্তি বাস্তবায়ন হবে। কিন্তু এখন কী হলো? উল্টো তাদের সাজা কমল, কেউ কেউ খালাসও পেল। আমরা এ রায় মানি না। রাষ্ট্রের কাছে আমাদের চাওয়া বিশ্বজিতের হত্যাকারীরা যেন পার পেয়ে না যায়। ’

শরীয়তপুর নড়িয়া সড়কের পাশে মশুরা গ্রাম। গ্রামের ঘোষপাড়ায় বিশ্বজিতের পরিবারের বাস। বসতঘরের পাশে উঠানের এক কোণে স্বজনরা বিশ্বজিতের একটি প্রতিকৃতি তৈরি করছে। গতকাল রায়ের পর ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, মা-বাবা ও বোন রুপা দাস রায় শুনে বিশ্বজিতের শ্মশানের কাছে কান্নাকাটি করছেন। প্রতিবেশীরা এসেছে সান্ত্বনা দিতে। কালের কন্ঠ

 

পাঠকের মতামত: