ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

লামায় অর্ধশত স্থানে পাহাড় ধস ॥ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

Photo 25.07.17 (13)মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা (বান্দরবান) প্রতিনিধি ঃ
টানা ৭ দিনের ভারী বর্ষণে লামা উপজেলার প্রায় অর্ধ শতাধিক স্থানে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। লামা-চকরিয়া সড়কের মিরিঞ্জা পাহাড় এলাকায় সোমবার দিবাগত রাতে পাহাড় ভেঙ্গে সারাদেশের সাথে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। অপরদিকে পাহাড় চাপা পড়ে বসতবাড়ি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় অনেক মানুষ পড়েছে চরম কষ্টে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রত্যন্ত অঞ্চলের এই সব ক্ষতিগ্রস্থ মানুষ সব কিছু হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে বা অন্য কারো ঘরে আশ্রয় নিয়ে আছে। তাদের কাছে পৌঁছায়নি সরকারী বে-সরকারী কোন সহায়তা। এমনকি পাহাড় ধসের ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের কোন তালিকা নেই উপজেলা প্রশাসনের কাছে।
লামা পৌরসভার চেয়ারম্যান পাড়া এলাকার খোরশেদ আলম (৫৫) বলেন, গতরাত ১টার দিকে আমার বাড়ির উপর পাহাড় ভেঙ্গে পড়ে। প্রায় ৭শত ফুট উপর থেকে পাহাড় ভেঙ্গে ঘরে এসে পড়ে। সতর্ক থাকায় প্রানহানির ঘটনা ঘটেনি। পাশাপাশি আরো ৩টি পরিবার এখন মাটির নিচে। লামা পৌরসভার মেয়র জহিরুল ইসলাম সকালে ক্ষতিগ্রস্থ বাড়িঘর পরিদর্শন করেন।
লামার আজিজনগর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড চেয়ারম্যান পাড়া এলাকার বাসিন্দা মো. শাহজাহান মাষ্টার (৩৫) ও কামরুন্নাহার (৩২) বলেন, পাশের পাহাড় ভেঙ্গে বসতবাড়ি এখন মাটির নিচে। সন্তানদের নিয়ে কষ্ট পাচ্ছি। পার্শ্ববর্তী রাশেদা বেগম (৩৫) ও মো. মহসিন বলেন, আমরা ঝুঁকিতে আছি। জানিনা কখন আমাদের বাড়িতেও পাহাড় ভেঙ্গে পড়ে।
এছাড়া উপজেলা প্রায় প্রত্যেকটি ইউনিয়নে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে বলে ইউপি চেয়ারম্যানরা জানিয়েছেন। অতিমাত্রার বৃষ্টিপাতের কারণে লামা-চকরিয়া, লামা-রুপসীপাড়া ও লামা-আলীকদম সড়ক এখন পানির নিচে। পাহাড় থেকে নেমে আসা পানিতে নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
রুপসীপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান ছাচিং প্রু মার্মা বলেন, আমার ইউনিয়নে অনেক স্থানে পাহাড় ধস হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করা হচ্ছে।
লামা পৌরসভার মেয়র মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, সকালে লামা পৌরসভার ডোজার দিয়ে মিরিঞ্জায় রাস্তা পরিষ্কার করে দেয়া হয়েছে। উদ্ধার কাজে ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, সড়ক ও জনপদ, পৌরসভা ও স্থানীয় বাসিন্দারা অংশ নেয়। মঙ্গলবার বিকাল ৪টার দিকে রাস্তা পরিষ্কার করে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করা হয়েছে।
এবিষয়ে লামা উপজেলা চেয়ারম্যান থোয়াইনু অং চৌধুরী বলেন, পাহাড় ধস আর বন্যার পানিতে কষ্ট পাচ্ছে লামাবাসি। মাতামুহুরী নদীর গতিপদ পরিবর্তন না করলে বন্যা সমস্যা স্থায়ী নিরসন সম্ভব নয়।

পাঠকের মতামত: