ঢাকা,শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

লামা পৌরসভায় অনুমোদনহীন ভবন নির্মাণে বিপর্যয়ের আশঙ্কা

েোাাামোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা (বান্দরবান) প্রতিনিধি ঃ

অনুমোদনহীন ভবন নির্মাণ নিষিদ্ধ থাকলেও লামা পৌরসভায় অনুমতি ছাড়া নির্মিত হয়েছে অর্ধ শতাধিক ভবন। এছাড়া ইমারত নির্মাণ বিধিমালা/১৯৯৬ এর কোন নিয়ম নীতি ও আইনের তোয়াক্কা না করে তৈরি এসব ভবনগুলোকে অনুমোদন দিচ্ছে লামা পৌরসভা। সাধারণ মানের কোন ভুমিকম্প হলে ভবনগুলো হেলে বা ধসে পড়ার আশঙ্কা করছেন সচেতন মহল।

জানা গেছে, পার্বত্য এলাকা ভূমিকম্পন প্রবণ এলাকা হওয়ায় পাহাড় কাটা ও ৪ তলা অধিক ইমারত নির্মাণ সম্পূর্ণ নিষেধ করেছে সরকার। ইমারত নির্মাণ বিধিমালা মতে নির্মাণ ভবনের চারপাশে অনুপাত হারে খালি জায়গা, ইমারত সাইট সংলগ্ন ৩.৬৫ মিটার প্রশস্ত রাস্তা, বৈদ্যুতিক লাইন থেকে নিরাপদ দূরত্বে, গাড়ি পার্কিং ব্যবস্থা, পর্যাপ্ত আলো বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা, জরুরী নির্গমন পথ, সিঁড়ির লবি, অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা, বজ্রপাত নিরোধকের ব্যবস্থা, পয়-নিস্কাসন ব্যবস্থা, একাধিক তলাবিশিষ্ট ইমারতের ক্ষেত্রে ১.৭৫ মিটার প্রশস্ত নির্গমন পথ, ইমারতের সামনে ৫মিটার, পাশাপাশি ২.৫ মিটার স্থান উম্মুক্ত, বাণিজ্যিক ভবনের ক্ষেত্রে গুদাম নির্মাণ নিয়ম রয়েছে। যার কোনটি মানছেনা লামা পৌরসভার আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনের মালিকরা। মনগড়া নকসা দিয়ে তৈরি হচ্ছে ভবন গুলো। অপরদিকে ১ বা ২ তলা ফাউন্ডেশন দিয়ে তৈরি করছে ৪বার ততোধিক তলা বিল্ডিং। আবার তার উপরে তৈরি করছে মোবাইল কোম্পানীর বড় বড় টাওয়ার। দখল করা হচ্ছে রাস্তা, সরকারী খাস জায়গা ও পুকুর।

লামা বাজারের নিউ মার্কেট এর মালিক কাজল বরণ দাশ কে ইমারত নির্মাণ বিধিমালা অমান্য করার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে উত্তর পাওয়া যায়নি। অপরদিকে লামা বাজারের স্টার শপিং কমপ্লেক্স সহ একাধিক ভবনের মালিক রনজিৎ শীল কে মার্কেটের পয়নিস্কাসন ও চার তলা ভবনের উপরের মোবাইল টাওয়ার স্থাপনের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি এপ্রতিবেদককে উত্তর দিতে অস্বীকার করেন। যারা অনুমোদন দিয়েছে তাদের প্রশ্ন করতে বলেন। পরিদর্শন কালে দেখা যায় লামা বাজারের ১৫/২০ বাণিজ্যিক মার্কেটের একটিতেও নেই গাড়ি পাকিং, পয়-নিস্কাসন ব্যবস্থা। যার দরুণ কেনাকাটা করতে আসা নারী, পুরুষ ও শিশুরা গাড়ি পাকিং এবং প্র¯্রাব, মল ত্যাগ করা নিয়ে বেকায়দায় পড়ে।

লামা ফায়ার সার্ভিস এর স্টেশন অফিসার পুলক কান্তি সরকার বলেন, কোন শহরে ভবন নির্মান করতে হলে ভবন মালিককে ফায়ার সার্ভিস হেড কোয়ার্টারে আবেদন করতে হয়। তখন হেড কোয়ার্টার সেই ভবন নির্মানে অগ্নিনির্বাপন ব্যাবস্থা ঠিক রাখছে কিনা সেটা যাচাইয়ের জন্য দায়ীত্ব দেয় সেই জেলা/শহরের ফায়ার সাভির্সকে। তখন সংশ্লিষ্ট ফায়ার সার্ভিস সব যাচাই বাচাই করার পর সঠিক মনে করলে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ ভবন নির্মাণে অনুমোদন দেয়। কিন্তু লামায় বহুতল ভবনগুলো এই আইন ভঙ্গ করেই নির্মান করা হচ্ছে।

লামা শহরে বহুতল ভবন ও অনুমোদনহীন ভবনের সংখ্যা কত এব্যাপারে জানতে চাইলে লামা পৌরসভার সহকারি প্রকৌশলী এম. মুকবুল হোসেন তার কোন সঠিক হিসেব দিতে পারেননি।

এ বিষয়ে লামা পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র আলী আহামদ বলেন, ভবনের মালিকরা আমাদের কাছ থেকে নকসা অনুমোদন করেন। কিন্তু বাস্তবে তারা নকসা অনুসরণ না করে ভবন গুলো নির্মাণ করে। ইমারত নির্মাণ বিধিমালা আইন ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পাঠকের মতামত: