ঢাকা,শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

চকরিয়া গরু চোরের অত্যাচারে অতিষ্ঠ মানুষ: একেরপর এক অভিযানে গ্রেফতার করতে পারেনি সিন্ডিকেট প্রধান নবী হোসেনকে

Picture-Chakaria-19-07-17চকরিয়া অফিস :

চকরিয়া গরু চোরের বেপরোয়া অত্যাচারে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। পুলিশের তৎপরতা থাকার পরও গরু চুরি বন্ধ হচ্ছে না। এমন কি গরু চুরি করে থানার পাশ দিয়ে নির্বিঘেœ পালিয়ে যাচ্ছে চোরেরা। ফলে গ্রামের হতদরদ্রি মানুষগুলো মুল্যবান গরু হারিয়ে বিপাকে পড়েছে। মাঝে মধ্যে গরু চোর হাতে নাতে ধরা পড়লেও আইনের ফাঁক ফোকর দিয়ে জামিনে বের হয়ে আবারো গরু চুরিতে লিপ্ত থাকে। কোন ভাবেই গরু চুরি ঠেকানো যাচ্ছে না।

এদিকে দক্ষিণ অঞ্চলের আলোচিত গরু চোর নবী হোসেন (৩৪) এখনো পুলিশের ধরাছোয়ার বাইরে রয়েছেন। একেরপর পর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালালেও তাকে ধরতে পারছে না পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে চকরিয়া উপজেলার সাহারবিল ইউনিয়নের কোরালখালীস্থ তার বাড়িতে পুলিশ অভিযান চালানোর সময় কৌশলে পালিয়ে যায় নবী হোসেন। ওইসময় বাড়ি থেকে তার দুই সহযোগিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, চকরিয়া উপজেলা সাহারবিল ইউনিয়নের কোরালখালী এলাকার মৃত হাবিবুর রহমানের পুত্র নবী হোসেন। গত ৪-৫ বছর ধরে কক্সবাজার জেলায় আলোচিত নাম। মূলত বিভিন্ন এলাকা থেকে গরুচুরি করার কারণে বার বার আলোচিত হচ্ছে এই নামটি। বিভিন্ন স্থান থেকে গরু চুরি করে এনে নবীর বাড়িতে মজুদ রাখে। পরে এসব গবাদি পশু সুবিধা মত দেশের বিভিন্ন স্থানে রাতের আধারে পাচার করে থাকে। এ ধরনের অহররহ অপরাধের অভিযোগ রয়েছে নবীর বিরুদ্ধে। কিন্তু তার ক্ষমতার দাপটে এতোদিন কেউ মুখ খুলার বা থানায় অভিযোগ দেওয়ার সাহস পায়নি।

স্থানীয় লোকজন আরও জানান, নবীর ২০-২৫ জনের একটি বাহিনী রয়েছে। এই বাহিনীর হাতে রয়েছে অবৈধ অস্ত্র। তার বাহিনীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ চকরিয়া, পেকুয়া, বাশখালী, লোহাগাড়া, রামু, ঈদগাও মানুষ। এসব এলাকা থেকে গরু চুরি করে নিয়ে আসেন। নবী বাহিনীর নেতৃত্বে বিভিন্ন এলাকা থেকে মাইক্রোবাসে করে গরু চুরি করে নিয়ে আসেন তার খামারে। সেখানে গরু জবাই করার পর মাংস গুলো রাতেই পৌছে দিচ্ছেন বিভিন্ন স্থানে। অভিযোগ রয়েছে, বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের বাঘ ও সিংহের খাবার নবীর কাছ থেকে নেওয়া হয়। তাছাড়া বিভিন্ন কসাইয়ের দোকানে মাংস নেওয়া হয় তার কাছ থেকে। এসব অপকর্মে করে নবী হোসেন কয়েক কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। তার বেশ কয়েকটি গাড়িও রয়েছে।

রাতদিন কোন না কোন গ্রাম থেকে গরু চুরির ঘটনা ঘটছে। গরু চুরির ঘটনা আপাত দৃষ্টিতে মামুলি মনে হলেও গ্রামে হতদরিদ্র গরু পালকদের স্বপ্ন ধুলিসাৎ হয়ে পথে বসছে। সহায় সম্বল বিক্রি করে গ্রামের স্বল্প পুজির মানুষ গরু পালন করে আর্থিক সচ্ছলতা ফেরানো স্বপ্ন দেখলেও গরু চোরের উপদ্রুবে গরু পালকদের চোখের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। গত সপ্তাহে পৌরসভার স্বপ্নপুরী এলাকা থেকে চকরিয়া থানা পুলিশ নবীর অন্যতম সহযোগীকে একটি দেশীয় অস্ত্রসহ আটক করেছে। তাদের ব্যবহৃত একটি মোটর সাইকেলও উদ্ধার করেছে। তবে গরু চোর সিন্ডিকেটের প্রধান নবী পালিয়ে যায়।

চকরিয়া থানার সেকেন্ড অফিসার তানবির জানান, নবী হোসেনকে গ্রেফতার করতে বেশ কয়েকবার তার বাড়িতে অভিযান চালানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে তার বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। সেখান থেকে তার ভাই বাবলু (৩৪) সহ দুইজন গ্রেফতার করা হয়েছে।

চকরিয়া থানার ওসি বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী জানান, নবীকে ধরার জন্য ব্যাপক অভিযান চলছে। যে কোনভাবে তাকে গ্রেফতার করা হবে। ইতোমধ্যে তিন-চার দফা অভিযান চালানো হয়েছে। তার বিরুদ্ধে দুইটি মামলাও রয়েছে বলে তিনি জানান।

পাঠকের মতামত: