ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

উখিয়ার বালুখালী বিট কর্মকর্তার বেপরোয়া দাপটে এলাকাবাসী অতিষ্ট

Bit-EmployerPic-Ukhiya-15.07.2017-426x540-426x540ফারুক আহমদ, উখিয়া :
উখিয়ার বালুখালী ঘাট বনবিটের বিট কর্মকর্তা, বাগান মালি ও হেডম্যানদের ব্যাপক উৎকোচ বাণিজ্য, অপতৎপরতা এবং বেপরোয়া দাপটের কারণে স্থানীয় জনগণ অতিষ্ট হয়ে পড়েছে। গুরুতর অভিযোগ উঠেছে বন বিভাগের কর্মীরা বালুখালিতে গড়ে উঠা নতুন রোহিঙ্গা বস্তিতে নতুন করে টার্গেট নিয়েছে। মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা নির্যাতিত রোহিঙ্গারা উক্ত বস্তিতে আশ্রয় নিতে চাইলে বন কর্মীরা টাকা দাবি করে বসে। কেউ দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে ঝুপড়ি বস্তি ঘরটি ভেঙ্গে দেয়। এখন কেউ ওই বস্তিতে বসবাস করলেই ১ হাজার টাকা থেকে সর্ব নি¤œ ৫ শত টাকা অবশ্যই বিট কর্মকর্তা মোবারক আলী কে দিতে হয়।
বালুখালীতে নতুন ভাবে গড়ে ওঠা রোহিঙ্গা বস্তিতে গেলে নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের নানা মুখী সমস্যাসহ যন্ত্রনার দুর্বিহ চিত্র ও বন বিভাগের ব্যাপক উৎকোচ বাণিজ্যের কথা এ প্রতিবেদককে রোহিঙ্গারা জানান। রোহিঙ্গা রফিক(৫০), বেগম বাহার (৬০), রাবেয়া খাতুন (৬৫) আবেগ প্রবন হয়ে বলেন, এ বস্তিতে নান যন্ত্রনায় রয়েছি। নেই খাদ্য, চিকিৎসা সেবা, থাকার ঘর ও অন্যদিকে বন বিভাগের লোকজনের দিন রাত হুমকি ধুমকি মারধর ও চাঁদা দাবীর বিষয়টি চরম অসহনীয় হয়ে পড়েছে। বিধবা রোহিঙ্গা নারী আলমাছ খাতুন ও জুবায়ের মাঝি অভিযোগ করে বলেছেন, উখিয়ার ঘাট বালুখালী বিট কর্মকর্তা মোবারক আলী সহ তার সাথে থাকা বন প্রহরী সাঈদ, মহসিন ও হেডম্যান নামধারী আমির হোসেন, কামাল আহমদ এরা প্রতিদিন রোহিঙ্গা বস্তিতে এসে আমাদের ছোট ছোট বস্তিঘর ভেঙ্গে দিচ্ছে। তাদের কথামত ঘর প্রতি ১ হাজার টাকা করে মাসিক না দিলে বস্তিতে এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার হুমকি ধুমকি দিচ্ছে।
এ অবস্থায় পরিবার পরিজন নিয়ে আমরা বৃষ্টিতে যাবো কোথায়?
অনেক সাধারণ রোহিঙ্গারা জানিয়েছেন, এ বস্তিতে প্রায় ৩ হাজার ৩শত পরিবার রোহিঙ্গারা কোন ধরনের সরকারি/বেসরকারি এনজিও ও দাতা সংস্থার পক্ষ থেকে কোন ত্রাণ সামগ্রী ও সাহায্য সহযোগীতা না পাওয়ায় তারা চরমভাবে না খেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
বালুখালী রোহিঙ্গা বস্তিতে জি-২ ব্লকের আয়ুব মাঝি বলেন, বিট কর্মকর্তা মোবারক আলী ও তার লোকজন ১৫শ পরিবারের কাছ থেকে ১ হাজার টাকা করে চাঁদা আদায় করছে। না হলে বনবিভাগের জায়গায় তাদেরকে থাকতে দেওয়া হবে না। উচ্ছেদ করে দিচ্ছি এমন অভিযোগ অসংখ্য রোহিঙ্গার। অপরদিকে এইচ ব্লকের জোবাইর মাঝি কাছ থেকে মসজিদ নির্মাণ করায় বনবিভাগের এই সেই মোবারক ৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে সত্যাতা নিশ্চিত করেছেন খোদ জোবাইর মাঝি।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে অভিযুক্ত উখিয়ার ঘাট বালুখালী বিট কর্মকর্তা মোবারক আলী তার বিরুদ্ধে রোহিঙ্গাদের আনিত অভিযোগ সত্য নয় দাবী করে বলেন, রোহিঙ্গারা বন বিভাগের জায়গা জবর দখল করে দিন দিন বসতি স্থাপন করায় বনবিভাগের লোকজন বাঁধা দিলে তারা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছে। স্থানীয় গ্রামবাসিদের অভিযোগ উখিয়া টিভি টাওয়ারের পাশে বন বিভাগের জায়গা প্লট আকারে বিক্রি করে উক্ত বিট কর্মকর্তা লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। যা সরেজমিনে তদন্ত করলে বন বিভাগের জায়গার উপর গড়ে উঠা বড় বড় দালান দেখতে পাওয়া যাবে। এব্যাপারে দক্ষিণ বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সচেতন মহল।

পাঠকের মতামত: