ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

বাঁশ দিয়ে নির্মিত হচ্ছে বান্দরবান সরকারি মহিলা কলেজের একাডেমিক ভবন

বান্দরবান  প্রতিনিধি ::::
এবার বাঁশ দিয়ে নির্মিত হচ্ছে বান্দরবান সরকারি মহিলা কলেজের একাডেমিক ভবন । অথচ ভবনে লোহার ব্যবহার করার নিময় রয়েছে। তা না করে ঠিকাদার লোহার পরিবর্তে বাঁশের কঞ্চি ব্যবহার করছে। বুধবার বিকেলের দিকে তাড়াহুড়া করে একাডেমী ভবনের তৃতীয় তলার ড্রপ ওয়ালে বাঁশের কঞ্চি ব্যবহার করছে রাজমিস্ত্রিরা। বিষয়টি শিক্ষার্থীরা জানার পরে আতঙ্ক প্রকাশ করে। পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে একাডেমী ভবনের তৃতীয় তলাটি নির্মিত হচ্ছে। কাজের ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৯০ লাখ টাকা। তবে কোন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের নামে কাজটি করা হচ্ছে তা জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেছে কর্তৃপক্ষ।
বুধবার বিকেলে দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বান্দরবান সরকারি মহিলা কলেজে গিয়ে দেখা যায়, কলেজের একাডেমী ভবনের তৃতীয় তলা সম্প্রসারণের কাজ চলছে। তৃতীয় তলার ড্রপ ওয়ালগুলোতে বাঁশের কঞ্চি ব্যবহার করছে রাজমিস্ত্রি। সিমেন্ট ধরানোর জন্য বাঁশের কঞ্চি ব্যবহার করছে বলে জানায় রাজমিস্ত্রি আলী হোসেন। তিনি বলেন, ঠিকাদার যেভাবে বলেছে সেইভাবে কাজ করছি। ঠিকাদার বাঁশের কঞ্চি ব্যবহার করতে বলেছে তাই লাগানো হচ্ছে। এতে আমার দোষ কি? তিনি জানান, কলেজ ভবনের কাজটি সাব ঠিকাদার হিসেবে নিয়েছে মো: আঞ্জুমিয়া। তিনি তাকে কাজে নিয়োগ দিয়েছেন। সাব ঠিকাদার মো: আঞ্জুমিয়ার সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি বলেন, আমি কিছু জানিনা। আমি বেশ কয়েকদিন ধরে কাজের বাইরে আছি। কাজের মূল ঠিকাদার হলো উজ্জ্বল কান্তি দাশ ও তাপন কান্তি দাশ। তারাই কাজটি করছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ঠিকাদার জানান, ঠিকাদারেরা প্রভাবশালী হওয়ায় শুধু ড্রপ ওয়াল নয় ভবনটির ছাদেও কিছু কিছু বাঁশ ব্যবহার করা হয়েছে। রাজমিস্ত্রি আলী হোসেন জানায়, ভবনের ছাদের কাজটি শেষ হয়েছে গত জুন মাসের আগে।
সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রদীপ বড়ুয়া বলেন, এই কাজে আমাকে কোনো কিছু জানানো হয়নি। কত টাকা কাজ, কি ধরণের কাজ হবে। আমাকে কোনো কিছুই জানায়নি ঠিকাদারেরা। কাজ কি ধরণের হচ্ছে তাই বলতে পারবোনা।
বান্দরবান সরকারি মহিলা কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের তাদের নতুন কলেজ ভবনটি সম্পর্কে জানানো হলে তারাও নতুন ভবনটির নিকটে গিয়ে দেখতে যান। তাঁরা লোহার পরিবর্তে বাঁশের কঞ্চি দেখে চমকে যান। তাঁরা এসময় আতঙ্ক প্রকাশ করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ঠিকাদার জানান, বান্দরবান সরকারি মহিলা কলেজের একাডেমী ভবনের তৃতীয় তলার কাজে কোনো ধরণের টেন্ডার আহ্বান করা হয়নি। টেন্ডার ছাড়াই কাজটি করা হচ্ছে।
ঠিকাদার উজ্জ্বল দাশ ও তাপস কান্তি দাশ বলেন, আমরা এই ব্যাপারে কোনো কিছুই জানিনা। রাজমিস্ত্রি লোহার পরিবর্তে বাঁশ ব্যবহার করছে সাংবাদিকদের মাধ্যমে জানতে পারছি। বাঁশ ব্যবহারের জন্য সিডিউলে এরকম কোনো কিছু ধরা নেই। রাজমিস্ত্রি নিজের সুবিধার জন্য এমনটি করতে পারে। কাজটির ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের নাম কি জানতে চাওয়া হলে, তাঁরা প্রকাশে অপারগতা জানান।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের বান্দরবানের ইউনিট অফিসার আব্দুল আজিজ বলেন, সাংবাদিকদের মাধ্যমে জানতে পারছি কলেজ ভবনে লোহা পরিবর্তে বাঁশ ব্যবহার করা হচ্ছে। সাংবাদিকদের মাধ্যমে জানার পর সঙ্গে সঙ্গে কাজটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের নাম জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, এই মুহূর্তে জানা নেই। ফাইল দেখে জানাতে পারবো।

পাঠকের মতামত: