ঢাকা,মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪

চকরিয়ায় বন্যায় সড়ক, গ্রামীণ রাস্তা খানাখন্দক ও বিশাল গর্ত

মিজবাউল হক :
ভয়াবহ বন্যায় চকরিয়া উপজেলার ১৮টি ইউনিয়ন একটি পৌরসভার আভ্যন্তরীণ সড়ক ও গ্রামীণ রাস্তাগুলো খানাখন্দক ও বিশাল গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। অধিকাংশ সড়কে যান চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। পৌরশহরের সাথে বিভিন্ন ইউনিয়নের মধ্যে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এতে করে দুটি দপ্তরের প্রায় ৪২ কোটি ৫০ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে। এরমধ্যে এলজিইডির সড়কের ক্ষতি ৩০ কোটি এবং সওজের ১২ কোটি ৫০ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে।
জানা যায়, সম্প্রতি ভারি বর্ষণে ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের পানিতে উপজেলার ১৮টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ড প্লাবিত হয়েছে। পুরো উপজেলার অন্তত দুই লাখ মানুষ পানিবন্দি ছিলো। এখনো খাবার সংকট কাটেনি বন্যা দূর্গত এলাকায়। তবে এবারের বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে এলজিইডি, সওজের আভ্যন্তরীণ সড়ক ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাধগুলো। প্রত্যেক ইউনিয়নে আভ্যন্তরীণ সড়ক, রাস্তাগুলো খানাখন্দক ও বিশাল গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। অনেক স্থানে সড়ক ও রাস্তা গুলো মাতামুুহুরী নদীতে বিলিন হয়ে গেছে। বিশেষ করে চিরিঙ্গা-বদরখালী কেবি জালালউদ্দিন ও জকরিয়া সড়ক, চিরিঙ্গা-বেতুয়াবাজার সড়ক, ছিকলঘাট-কৈয়ারবিল সড়ক, ছিকলঘাট-কাকারা সড়ক, কাকারা-মানিকপুর সড়ক, সাহারবিল পরিষদ ও আঠারকুম সড়ক, কোনাখালী বাংলাবাজার সড়ক সহ বিভিন্ন স্থানে বন্যার পানির তোড়ে খানাখন্দক ও বিশাল গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ড, খুটাখালী, ডুলাহাজারা, ফাঁশিয়াখালী, বরইতলী, হারবাং, ঢেমুশিয়া, বিএমচর, পূর্ববড়ভেওলা ও পশ্চিমবড়ভেওলা ইউনিয়নের অধিকাংশ সড়ক ও রাস্তা ভেঙ্গে গেছে। এসব ইউনিয়নের রাস্তা গুলো ক্ষত-বিক্ষত হয়ে পৌরশহরের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। অনেক স্থানে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
সাহারবিল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাতামুহুরী থানা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মহসিন বাবুল জানান, তার ইউনিয়নে ভয়াবহ বন্যায় সড়ক ও রাস্তাগুলো ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অনেক স্থানে বিশাল গর্ত ও খানাখন্দক হওয়ায় যান চলাচলে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে।
উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ফাঁশিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী জানান, তার ইউনিয়নের আভ্যন্তরীণ সড়ক গুলো ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। একাধিক রাস্তায় বড়বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। তাছাড়া দিগরপানখালী-ঘুনিয়ার ১নং বাঁধটি মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। ইতোমধ্যে গণি সিকদারপাড়া পয়েন্টে প্রাথমিক ভাবে ১০টি স্পার দিয়ে রক্ষার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। পাশাপাশি স্থানীয় মানুষের সহায়তায় বাঁধ রক্ষার জন্য মাটি দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
সওজ ও এলজিইডি’র অফিস জানায়, বন্যার পানিতে এলজিইডি ও সওজের আওতাধীন অধিকাংশ গ্রামীণ সড়কে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। অনেক জায়গায় বিশাল গর্ত হয়েছে। আর এতে দুটি দপ্তরের ৪২ কোটি ৫০ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে এলজিইডির সড়কের ক্ষতি হয়েছে ৩০ কোটি টাকার এবং সওজের ক্ষতি হয়েছে ১২ কোটি ৫০ লাখ টাকার।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী রানা প্রিয় বড়–য়া বলেন, সম্প্রাতিক ভয়াবহ বন্যার ফলে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে ২০কিলোমিটার এবং চকরিয়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ৫০ কিলোমিটার সড়কে খানাখন্দ ও গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে প্রায় ১২ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ক্ষয়-ক্ষতির চিত্র তুলে ধরে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে তথ্য পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ আসলেই দ্রুত সময়ের মধ্যে সড়ক গুলো সংস্কার কাজ শুরু করা হবে।
চকরিয়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো: সাহেদুল ইসলাম বলেন, বন্যায় ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ নিরুপণ করে বিভিন্ন দপ্তরে তথ্য পাঠানো হয়েছে। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রামীণ সড়কগুলো মেরামতের কাজ শুরু করা হবে। যাতে করে সাধারণ মানুষের দু:খ লাঘব হয়।

পাঠকের মতামত: