ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

ধর্ষণের ভিডিও ফেরত দিলে মামলা তুলে নিবেন তরুণী

image_183376_0নিজস্ব প্রতিবেদক ::

ঢাকা: ধর্ষণের ভিডিও ক্লিপগুলো ফেরত দিলে মামলা তুলে নিতে রাজি আছেন ধর্ষিত তরুণী (বাদী) নিজেই।

শনিবার ইভান ও ধর্ষিতা তরুণীকে মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদের সময় বনানী থানার ওসি বিএম ফরমান আলীর রুমে বসে এ শর্ত দেন ওই তরুণী।
বনানীতে বাসায় ডেকে ধর্ষণের অভিযোগে দায়েরকৃত মামলার তদন্ত করছেন বনানী থানার এসআই সুলতানা আক্তার। শনিবার দুপুর ১২টা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত মামলার বাদী এক তরুণী ও রিমান্ডে থাকা আসামি বাহাউদ্দিন ইভানকে মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
তিনটি শর্ত দিয়েছেন ধর্ষিত তরুণী। প্রথমটি হচ্ছে, ধর্ষণের ভিডিও ক্লিপগুলো ফেরত দিতে হবে। দ্বিতীয়ত, বিভিন্ন সময়ে তরুণীর কাছ থেকে নেয়া প্রায় দুই লাখ টাকা ফেরত দিতে হবে। তৃতীয়ত, ইভান ওই তরুণীকে আর কখনও ডিস্টার্ব করবে না এটা লিখিতভাবে নিশ্চিত করতে হবে।

ইভানের বাসায় ডেকে নিয়ে ধর্ষণ এবং তার (ইভানের) সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে বিস্তারিত বর্ণনা তরুণী। তার ভাষ্য, “আমি মামলা করতে চাইনি। পুলিশকে বলেছিলাম, ইভানের কাছ থেকে ধর্ষণের ভিডিও, মোবাইল সেট, মোমোরি কার্ড এবং ব্যাগটি উদ্ধার করে দিলেই চলবে।”

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তরুণী জানিয়েছেন, মঙ্গলবার রাতে তিনি প্রথম ইভানের বাসায় যান। একই সঙ্গে তরুণী দাবি করেন,  তার নিজের বাসা, খিলক্ষেতের ৩০০ ফুট এলাকা, নিকুঞ্জ, বনানী এবং ইভানের গাড়িতে বেশ কয়েকদিন তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক হয়েছে। তবে এ সম্পর্ককেও ধর্ষণ হিসেবে উল্লেখ করেন তরুণী।

পুলিশের তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, তরুণীর গ্রামের বাড়ি কুড়িগ্রামের উলিপুর থানায় হলেও এজাহারে তিনি কুড়িগ্রাম সদর থানা উল্লেখ করেছেন। এ তরুণী প্রথমে পুলিশকে জানিয়েছিলেন মা-বাবার সঙ্গে তার যোগাযোগ নেই (পরে জানান, মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ আছে। কিন্তু মোবাইল নম্বর মুখস্থ নেই)। এসব কারণে তরুণীর অভিভাবকদের খুঁজে পেতে সমস্যা হচ্ছিল।

ইভানের স্ত্রী টুম্পার অভিযোগ, “পাঁচ হাজার টাকার কন্ট্রাক্টে ইভানের বাসায় এসেছিল ওই তরুণী। শারীরিক সম্পর্কের পর পুরো টাকা পরিশোধ করেনি ইভান। কারণ, তখন বাসায় টাকা ছিল না। এ নিয়ে দু’জনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়।”

টুম্পার দাবি, “তরুণী একা ওই বাসায় আসেননি। তার এক ছেলে বন্ধুকে নিয়ে এসেছিলেন। ওই ছেলে বন্ধু বাসার বাইরে অবস্থান করছিল। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ওই ছেলে বন্ধুকে ফোন করে তরুণী জানায়, ১০-১২ পিস ইয়াবা নিয়ে আয়।

এই বাসায় বসে ইয়াবা খাব। তখন ইভান বলেন, বাসায় এসব হলে মা-বাবা ঘুম থেকে জেগে যাবে। পরে সমস্যা হবে। এ নিয়ে বাদানুবাদের এক পর্যায়ে তরুণীকে জোর করে বাসা থেকে বের করে দেয় ইভান।”

এদেকে ইভান বলেন, “আমি তাকে কোনো জন্মদিনের কথা বলিনি। বাসায় এ ধরনের কোনো আয়োজনও ছিল না। সে আমার কাছে টাকা ধার চেয়েছিল। আমিও টাকা দিতে রাজি ছিলাম। তাই তাকে বাসায় আসতে বলেছি। গভীর রাতে দুজনের সম্মতিতেই শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়েছি। সে নিজের ইচ্ছায় তার ড্রেস খুলে আমার টি-শার্ট ও থ্রি কোয়ার্টার প্যান্ট পরে।”

এর আগে গত ২৮ মার্চ বনানীর রেইনট্রি হোটেলে জন্মদিনের দাওয়াতে ডেকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে শাফাত আহমেদ, শাফাতের বন্ধু নাঈম আশরাফ ওরফে আবদুল হালিমসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। অপর তিন আসামি হলেন শাফাতের বন্ধু সাদমান সাকিফ, গাড়িচালক বিল্লাল হোসেন ও দেহরক্ষী রহমত আলী ওরফে আজাদ।

শাফাতসহ সব আসামি বর্তমানে কারাগারে আছেন। এ মামলায় ওই পাঁচজনের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে অভিযোগপত্র দেয়া হয়েছে।

পাঠকের মতামত: