ঢাকা,মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪

দেশের সবচেয়ে উঁচু সড়কের বেহাল দশা।। পাহাড়ি ঢলের চাপে বিধ্বস্ত হয়েছে আলীকদম-থানচির এই সড়ক

bbanআলীকদম প্রতিনিধি, বান্দরবান  ::

সাম্প্রতিক ভারী বর্ষণে পাহাড়ি ঢলের পানির চাপে দেশের সর্বোচ্চ উচ্চতায় র্নির্মিত ৩৪কিলোমিটার দীর্ঘ বান্দরবানের আলীকদমথানচি সড়কটি বিধ্বস্ত হয়েছে। এ সড়কের ডিমপাহাড় এলাকাটি দেশিবিদেশি হাজারও পর্যটকের জন্যে একটি আকর্ষণীয় স্থানও বটে। এ সড়কপথে ব্যাপক উঁচুনিচু পাহাড় থাকায় ফিবছরই পাহাড়ি ঢলের চাপে বিধ্বস্ত হয়ে পড়ছে। প্রায় ১২০কোটি টাকা ব্যয়ে সেনাবাহিনীর নির্মাণ প্রকৌশল ব্যাটালিয়নের সদস্যরা এ সড়কটি নির্মাণ করে। ২০১৫ সালের ১৪ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সেরের মাধ্যমে দেশের সবচে উচ্চতায় নির্মিত এ সড়কপথের উদ্বোধন করেছিলেন। এর পর থেকেই প্রতিদিন বিপুল পর্যটকের যাতায়াতও শুরু হয় এই সড়কের ডিমপাহাড় এলাকাসহ নানাস্থানে। আধুনিকতার ছোঁয়ায় পুরো সড়কপথ দৃষ্টিনন্দন হয়ে দাঁড়ায়। তবে সাম্প্রতিক ভারী বর্ষণে এ সড়কের ২২টি স্থানে পাহাড়ের অংশ ধস এবং ১৯স্থানে পাহাড়ি ঢলের পানির চাপে ড্রেনেজসহ সড়ক বিধ্বস্ত হয়েছে।

সওজ বিভাগের জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মো.নাজমুল ইসলাম খান বলেন, আলীকদমথানচি সড়কটি ব্যবহারের উপযোগী করে তোলার জন্যে জরুরি ভিত্তিতে কমপ ে ৫০ লাখ টাকা প্রয়োজন এবং এ সড়ককে সর্বসাধারণের জন্য পুনরায় চালু করতে প্রয়োজন হবে কমপক্ষে ২কোটি টাকা। তিনি জানান, মেরামতসহ জরুরি কাজের জন্য প্রাক্কলন তৈরির কাজ চলছে। সরকারের উচ্চ মহলে সেই প্রাক্কলন দাখিল করা হবে। প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দসহ নির্দেশনা পাবার পরই এ সড়কপথের পুননির্মাণ বা মেরামত কাজ শুরু করা সম্ভব হবে। নির্মাণ কাজ শেষে মাত্র একবছর আগেই সড়কটির র নাবে ণের দায়িত্ব ফিরিয়ে দেয়া হয় সওজ বিভাগের কাছে। তিনি বলেন, এ সড়কটি মূলত ব্যাপক উচুঁনিচু পাহাড়ের ওপর দিয়েই নির্মিত, তাই প্রবলবর্ষণেই পাহাড়ি ঢলের পানির চাপে বিধ্বস্ত হচ্ছে। পরিবেশবিদরা বলছেন, বান্দরবানের পাহাড়ি মাটি নরমপ্রকৃতির। তাই বেশি উচুঁপাহাড়ে নির্মিত সড়কপথ ঝুকিপূর্ণ।

গত ৫জুলাই থেকে এ সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। গতবছর বর্ষাতেও এ সড়কের নানাস্থান ক্ষতবিক্ষত হয়ে গিয়েছিল। ওই সময় কয়েকমাস যানবাহন চলাচলও বন্ধ থাকে। তবে জরুরি মেরামতের মাধ্যমে ছোট যানবাহন চলাচল উপযোগী করে তোলা হয় সড়কটি। এবারের বর্ষাতেও ব্যাপক পাহাড়ধস নামে সড়কপথের ওপর। প্রায় ২ হাজার ৫০০ ফুট উঁচুতে পাথুরে পাহাড়ের গায়ে আঁকাবাঁকা ধাপ কেটে ৩৪ কিলোমিটারের সড়কটি নির্মাণ করা হয়।

থানচি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্যহ্লাচিং মার্মা বলেন,সড়কটি পাহাড়ের বুকে নান্দনিক সৌন্দর্যের প্রতীক। এ সড়ক দেখতে সারাবছর শত শত পর্যটক আসেন। সাম্প্রতিক ভারী বর্ষণে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হওয়ায় পর্যটকরা আসতে পারবে না। তাছাড়াও থানচি এবং আলীকদম উপজেলার দুর্গম এলাকার কয়েক হাজার পাহাড়ি কৃষক তাদের কৃষিপণ্য পরিবহনেও সুযোগ হারাবে।

এ ব্যাপারে আলীকদম উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, আলীকদমথানচি সড়কটিতে বড় ধরনের ধস হয়েছে। ধসের কারণে ছোটবড় সব যান চলাচল বন্ধ আছে। সড়কটি কবে নাগাদ যান চলাচলের জন্য উপযোগী করা যাবে সে বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না।

 

পাঠকের মতামত: