ঢাকা,শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

জেলায় দুর্ধর্ষ শত অপরাধ বাহিনী তৎপর

বিশেষ প্রতিবেদক:
গহীন পাহাড়ে জঙ্গী আস্তানা আর সাগরে জলদূস্যদের বসতি। পাহাড়ের গা ঘেষে রয়েছে ডাকাতের বাড়ি আর অস্ত্র তৈরির কারখানা।  তারি সাথে পাল্লা দিয়ে মিয়ানমার সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করছে মরণ নেশা ইয়াবা। সাগর পথে আসছে বিদেশী মরণাস্ত্র। সাগর, পাহাড় আর সীমান্তের কারনে কক্সবাজার জেলা ভৌগলিকভাবেই ঝূকিপূর্ণ। এর সাথে যোগ হয়েছে ক্ষমতাসীনদের মদদ আর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রশ্রয়। ফলে সময়ের পরিবর্তণে ভয়ংকর, অপ্রতিরোধ্য আর দূর্ধর্ষরূপ ধারণ করছে জেলার শতাধিক ডাকাতদল, সন্ত্রাসী ও জলদূস্য অপরাধী বাহিনীগুলো।
অপহরণ, খুন, ধর্ষণ, জমি দখল, পাহাড় কর্তন, গাছ কাটা, মুক্তিপন আদায়, চিংড়ী ঘের দখল, ডাকাতি আর সাগরে জলদূস্যতা এখন এদের নিত্য নৈমত্তিক ঘটনা। ওইসব বাহিনীর হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে জেলার ২৬ লক্ষ জনগন। গত এক সপ্তাহে এদের হাতে খুন হয়েছে ৭ জন। অচিরেই ওইসব অপরাধ বন্ধে যৌথ অভিযান পরিচালনার দাবী করেছেন জনগন।
এ বিষয়ে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলী জানান, জেলার চিহ্নিত সন্ত্রাসী বাহিনীর বিরুদ্ধে যৌথ অভিযান চালানোর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা হচ্ছে। শীঘ্রই অভিযানটি পরিচালিত হবে।
জেলা পুলিশ, কমিউনিটি পুলিশ সূত্র জানায়, কক্সবাজার জেলায় কমপক্ষে শতাধিক সন্ত্রাসী, ডাকাত ও জলদূস্য বাহিনী রয়েছে। প্রধানের নাম অনুসারেই এসব বাহিনীর নাম। এর মধ্যে একটি বাহিনীর প্রধান একজন নারী। আর এক একটি বাহিনীতে ১০/ ১৫ জন করে সক্রিয় সদস্য রয়েছে। এসব বাহিনীর প্রধানরা নিজেদের ক্ষমতাসীন দলের লোকজন বলে পরিচয় দেয়। তবে অনুসন্ধানে জানা যায় এরা কেউ আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে সরাসরি জড়িত নয়। কিন্তু কারো কারো সাথে ক্ষমতাসীন  রাজনৈতিক দলের নেতাদের রয়েছে সুসম্পর্ক। সদর উপজেলার লিংকরোড় ও সরকারি কলেজের পেছনের পাহাড়ে ৪ টি সন্ত্রাসী বাহিনীর আস্তানা রয়েছে। এর মধ্যে লিয়াকত বাহিনী ও কুদরত বাহিনী অনেক পুরানো হলেও নতুনভাবে গঠিত হয়েছে জাফর বাহিনী ও ইদ্রিছ বাহিনী। আর এদের গডফাদার হিসেবে অন্তরালে থেকে কাজ করে জনৈক ভিপি বাহাদুর। কলেজের পেছনে অবৈধভাবে গড়ে উঠা একটি স্কুলেই মজুদ থাকে এসব বাহিনীর অধিকাংশ অস্ত্র। এছাড়া নির্মাণীধিন কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ এলাকায় রয়েছে লাল বাহাদুরের আধিপত্য। এছাড়া বাস টার্মিনাল উত্তর ডিককুলে রয়েছে হাজীপাড়ার ডেইঙ্গা বাহিনী ও কাশেম বাহিনী। এ দুই বাহিনীর আস্তানা মেডিকেল কলেজের পেছনের পাহাড়ে। এরা দিনের বেলায় বের হয় না। তবে রাতে ও ভোররাতে মহাসড়কে ডাকাতি, ছিনতাই, ও অপহরন করে আবার ফিরে যায় তাদের আস্তানায়।আর উত্তর ডিককুলে রয়েছে সিরাজ বাহিনী। এ বাহিনী মূলত মানুষের বসত বাড়ি নির্মাণে বাধা দিয়ে চাদা আদায় করে। দক্ষিন হাজী পাড়ার খোরশেদ বাহিনী ।আর পাহাড় হাউজ থেকে টার্মিনাল পর্যন্ত রাজত্ব কায়েম করেছে বকুল বাহিনী। আর এ বাহিনীর প্রধান পাহাড় হাউজ এলাকার মৃত ইদ্রিছের ছেলে শাহী ফেরদৌস বকুল। যিনি নিজকে কখনো গোয়েন্দা পুলিশ কখনো র‌্যাব পরিচয় দেয়। এ বাহিনী টমটম ছিনতাই, চাদাবাজী, অন্যের জমি দখল, ভাড়াটে সন্ত্রাসী, অপহরণে জড়িত।
দিনে দিনে শহরের সবচেয়ে ভয়ংকর হচ্ছে নুরু বাহিনী। বাসটার্মিনাল পশ্চিমপাশের মসজিদের পাশের পাহাড়ে তার  বসতবাড়ি। আর তার বাহিনীর আস্তানা উত্তরণের পেছনে ও পালস স্কুলের পেছনের পাহাড়ে। এ বাহিনীতে রয়েছে জেলায় বিভিন্ন উপজেলার দাগী আসামীরা। এছাড়া পালস স্কুলের পেছনের আস্তানায় রয়েছে বাহিনীটির টর্চার সেল। রাতের বেলায় বের হয়ে বিভিন্ন এলাকায় গনহারে ডাকাতি, ছিনতাই ও পর্যটকদের অপহরণ করে আস্তানায় নিয়ে যায়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জাকির মোস্তফা খুনের পর জাকির বাহিনীর অধিকাংশ সদস্য ও কিলিং মিশনে অস্ত্র নিয়ে অংশ নেওয়া অধিকাংশ ক্যাডার এখন নুরু বাহিনীতে যোগ দিয়েছে। আর এরা পাহাড়ের গহীনের সেই আস্তানায় বাস করছে। জেল গেইট এলাকার পুলিশের লাইনের পাশের পাহাড়ে রয়েছে ডাকাত নুরালম বাহিনীর আস্তানা। একই এলাকায় রয়েছে জাফর বাহিনীর দাপট। কলাতলীর আর্দশ গ্রামে রয়েছে মিজান বাহিনীর আস্তানা। আর বাহিনী প্রধান একই এলাকার পাখি সওদাগরের ছেলে মিজান। কলাতলীর সৈকত পাড়ায় রয়েছে নাসিমা বাহিনীর আস্তানা। বাহিনীটির কাজ কটেজ পল্লী থেকে নিয়মিত চাদা আদায় ও অপহরণ করে মুক্তিপন আদায়। নাসিমা বাহিনীর একাংশের প্রধানের লাইট হাউজ  পাড়ার এনামের রয়েছে  এনাম বাহিনী। এ বাহিনীর সদস্যরা পর্যটকদের ছিনতাই ও অপহরণ করে মুক্তিপন আদায় করে। এ বাহিনীর প্রধান আতœগোপনে থাকলেও বাহিনীর সদস্যরা রয়েছে সক্রিয়। তাছাড়া ঘোনারপাড়ার সত্তরঘোনা ও আশেপাশের পাহাড়ি অঞ্চলে খোরশেদ বাহিনী প্রকাশ কালা খোরশেদ বাহিনী, শমসু বাহিনী, রাসেল বাহিনী ও সাগর বাহিনীর ভয়ে এলাকার মানুষজন রাত ৮ টার পর চলাচল করতে আর সাহস করেনা। পাহাড়তলীর সন্ত্রাসী সিফাত ও আরাফাত নিহত হওয়ার পর এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে হাফেজ প্রকাশ বার্মাইয়া হাফেজ বাহিনী। আরো রয়েছে নিশান বাহিনী, গালকাটা শাহালম বাহিনী, ভুলু বাহিনী ও বালতি জাফর বাহিনী। দক্ষিণ রুমালিয়ারছড়ার সবুজবাগ, বার্মাইয়া পাহাড় ও টেকনাইফ্যা পাহাড়ে রয়েছে রকি বাহিনী। বর্তমানে রকি কারাগারে থাকলেও বাহিনীটি নিয়ন্ত্রন করছে বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড রানা ও ইসমাঈল। শহরের বর্তমানের সবচেয়ে ভয়ংকর বাহিনীর নাম হাসনাত বাহিনী। বাহিনী প্রধান বর্তমানে জেলে থাকলেও অত্যন্ত দাপটের সাথে এ বাহিনী নানা অপকর্ম চালাচ্ছে। আর বাহিনীটি পরিচালনার দায়িত্ব পালন করে বাহিনীর সেকেন্ড কমান্ড রমজান । এছাড়া রয়েছে ক্রসফায়ার শাহাবুদ্দিন বাহিনী, কালাবদা বাহিনী, বার্মাইয়া আবু সালেহ বাহিনী, বশর বাহিনী, হালিমা পাড়ার মুজিব বাহিনী ।
সদর উপজেলার পিএমখালির মাইজপাড়ার আবুল কালামের কালাম বাহিনী, চেরাংঘরে জিয়াউদ্দিন শিবলুর শিবলু বাহিনী,ছনখোলার শহিদুল আলমের আলম বাহিনী ও আবদুল্লাহ বাহিনী, মুবিন সরওয়ার প্রকাশ বাবুলের বাবুল বাহিনী, তুতুকখালির কলিমউল্লাহ’র কইল্যাবাহিনী। ঈদগাওয়ের সবচেয়ে ভয়ংকর বাহিনী পুলিশ হত্যা মামলার আসামী ইসলামাবাদ ভিলেজার পাড়ার ইদ্রিছের ইদ্রিছ বাহিনী। এসব বাহিনীর পাশাপাশি চৌফলদন্ডি, খুরুশ্কুল ও ইসলামপুরে রয়েছে আরো একাধিক সন্ত্রাসী বাহিনী।
রামু উপজেলা দিনে দিনে সন্ত্রাসী বাহিনীর হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে। রামু দূর্ধর্ষ সন্ত্রাসী বাহিনী রাজাকার আবদুল হক প্রকাশ হক সাব বাহিনীর দাপটে অসহায় হয়ে পড়েছে স্থানীয়রা। স্বাধীনতার ৪৫ বছর পরও ওই রাজাকার ও তার বাহিনী অত্যন্ত দাপুটে ও ক্ষমতাবান। ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের অফিসের চর গ্রামের হাজারো লোক এখনো তার হাতে জিম্মি। সরকারি গেজেটে শান্তি কমিটির সেক্রেটারি এবং রাজাকার কমান্ডার হিসেবে আবদুল হকের নাম থাকলেও তিনি এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে ।
সাম্প্রতিক রাজাকার আবদুল হক ও তার সহযোগিদের হাতে নির্যাতন, মিথ্যা মামলা, জমি জবর-দখল সহ নানাভাবে হয়রানির হয়েছেন শতাধিক এলাকাবাসী। এ ব্যাপারে প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়ার পরও কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বলে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন। এছাড়া ঈদগড়ে কাটাজঙ্গল এলাকার ভয়ংকর সন্ত্রাসী বাহিনীর নাম কাশেম বাহিনী। বছরের শুরুতে সংগঠিত শিক্ষক হত্যা মামলার ওই আসামীর বাহিনীটি প্রতিদিন অপহরণ ও ডাকাতির মতো ঘটনা ঘটাচ্ছে। এছাড়া গড়ে উঠেছে সরকারী দলের নাম ভাঙ্গিয়ে কয়েকটি বাহিনী। এদের মধ্যে রয়েছে আব্দুল্লাহ বিদ্যুতের বিদ্যুৎ বাহিনী।
রামু উপজেলা অস্ত্র ও মাদক পাচারের নিরাপদ রুটে পরিনত হয়েছে। একদিকে আরএসও অন্যদিকে রামুর গহীন বনে একাধিক কারখানায় চলছে দেশীয় অস্ত্র তৈরীর কাজ।
রামু উপজেলার অস্ত্রের ডিপোখ্যাত ঈদগড় ইউনিয়নে সরেজমিন গিয়ে জানা গেছে, ঈদগড় ইউনিয়নটি অধিকাংশ পাহাড়ি বনাঞ্চল। এখানকার কোদালিয়াকাটা ও পাইন্যাসিয়া ঘোনা এলাকায় যুগযুগ ধরে চলে আসছে দেশীয় অস্ত্র তৈরী এবং বিক্রির কাজ। এখানে রয়েছে দক্ষ অস্ত্র প্রস্তুতকারি (কারিগর)। এদের মধ্যে ঈদগড় কোদালিয়াকাটা এলাকার মৃত মনির আহমদের ছেলে বজল আহমদ (৪০), মৃত আবদুল জলিলের ছেলে মনিরুল হক (৩৭) ও ফজলুল হক (৩০)। জানা গেছে, এদের নেতৃত্বে এলাকার ১০/১২ জনের একটি দল পূর্বদিকে মনিরুজ্জামান মেম্বারের পিতা বদুর বাপের ঘোনারআগা নামক পাহাড়ি এলাকাসহ বিভিন্ন পাহাড়ি নির্জন জায়গায় স্থান বদল করে কারখানা স্থাপন করে অবৈধ অস্ত্র তৈরী করে থাকেন।
একই ইউনিয়নের পাইন্যাসিয়াঘোনা এলাকার মৃত আবুল শামার ছেলে মোস্তাক আহমদ ও মোস্তাফিজুর রহমান কালুর নেতৃত্বে ৭/৮ জনের একটি দল পশ্চিমপাহাড়ে গুয়াইল্যাঝিরি, পানিস্যাছড়াসহ বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকায় কারখানা স্থাপন করে অস্ত্র তৈরী করে থাকে। পরে এলাকার কিছু মহিলা দিয়ে কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় অস্ত্র পাচার করে থাকে। ঈদগড় ইউনিয়নে তৈরী করা দৈশীয় অস্ত্র পাচারে জড়িত রয়েছে একাধিক নারী ও পুরুষ সদস্য। এদের মধ্যে জান্নাতুল ফেরদাউস (৩৬) নামের এক নারী ২০১৩ সালের ১৮ অক্টোবর পাইন্যাসিয়াঘোনা এলাকায় অস্ত্র পাচারকালে ৩টি দেশীয় তৈরী অস্ত্র সহ পুলিশের হাতে ধরা পড়েন। অন্যান্য পাচারকারিদের মধ্যে আবদুল জলিলের মেয়ে মনোজা বেগম (৩০), সোলেমানের মেয়ে মাহমুদা বেগম (২৫), আবদুল জলিলের মেয়ে পাখি (২৭), জাফর আলমের ছেলে রুবেল, ঈদগড় ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি মনিরের বড় ভাই সাইফুল ইসলাম কালু, চৌকিদার কালু । মিঠাছড়ি চলছে ইউনুছ ভূট্টোর পরিচালিত ভূট্টো বাহিনীর রাজত্ব।
চকরিয়া উপজেলায় রয়েছে ৩৬ টি বাহিনী । তবে এর মধ্যে সবচেয়ে ভয়ংকর বাহিনীগুলো হচ্ছে, ডনের কোদাল বাহিনী , জনতা মার্কেটের রেজাউল বাহিনী প্রকাশ ইয়াবা রেজাউল, ভাংগার মুখের ধলু বাহিনী, চিংড়ী প্রজেক্টের আমিন বাহিনী, হারবাংয়ের নজরু বাহিনী, ডুলাহাজারর ইনু বাহিনী, পৌরসদরের হালকাকারার হাজী আবুল কালাম বাহনী কালামবাহিনী।
পেকুয়ার সবচেয়ে দুর্ধর্ষ বাহিনীর নাম বোরকা বাহিনী। এম ইউপি শাহাদত ও এমইউ?পি জ?লিল ওই বাহিনী পরিচালনা করে। তারা দুজনই সাহাব উদ্দিন ফরায়েজী হত্যা মামলার আসামী।  এরপরের দা বা?হিনী দাপটে অসহায় হয়ে পড়েছে এলাকাবাসী। বাহিনী প্রধান নাসির বর্তমানে মালেশিয়া অবস্থান করলেও তার অবর্তমানে রয়েছে চম্পাইয়্যা ও মৌওলা। রাজাখালীর ডাকাত বদু ও ছৈয়দ নুর বা?হিনী। বারবা?কিয়ার ব?নের রাজা জাহাঙ্গীর বর্তমানে জেল হাজতে তার অবর্তমানে সাহাবউদ্দিন বাহিনী প্রধানের ভুমিকায় রয়েছে। আরেক দূর্ধর্ষ বাহিনী ডাকাত গুরা বাদশার দল। তার সেল্টারদাতা যুবলীগের সম্পাদক মোঃ বা?রেক ও উজানটিয়ার রহিম উদ্দিন। আওয়ামী লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বখতিয়ার চৌধুরীকে  গুলি করে হত্যা চেষ্টার মামলা রয়েছে ওই বাহিনীর বিরুদ্ধে। মগনামার এখলাজ ও বাদশা। তারা সাগরে জলদূস্যতা করে। সদরের মুকুট বাহিনী। তার বিরু?দ্ধে নাশকতাসহ অসংখ্য মামলা রয়েছে।
সন্ত্রাসী জনপদ আর অস্ত্র তৈরির কারখানা মহেশখালি। যেখানে রাজনৈতিক নেতারাই ক্ষমতার লোভে সন্ত্রাসী তৈরি করে থাকেন। মহেশখালির উপজেলার সবচেয়ে দূর্ধর্ষ বাহিনীগুলো হচ্ছে কুতুবজুমের জাম্বু বাহিনী, জলদূস্য স¤্রাট নাগু বাহিনী, ল্যাং ফরিদ বাহিনী, হোয়ানকের এনাম বাহিনী, জোনাব আলী বাহিনী, ফেরদৌস বাহিনী, কালারমারছড়ার তারেক বাহিনী, ঝাপুয়ার মির কাসেম বাহিনী, সাহাব উদ্দিন বাহিনী, মোঃ আলী বাহিনী, আধাঁরঘোনার বদাইয়া বাহিনী, ডুনাইয়া বাহিনী,  উত্তর ঝাপুয়ার জসিম বাহিনী।
উখিয়ায় রয়েছে হাতেগোনা কয়েকটি বাহিনীর রাজত্ব । তৎমধ্যে ফলিয়াপাড়ার শাহজাহান, কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আবু শামা, আবু তৈয়ব, মনির আহমদ, মধুরছড়ার আবদুস সালামের বাহিনী সবচেয়ে ভয়ংকর।
দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়া জলদূস্য আর ডাকাত বাহিনীর নিরাপদ আস্তানা। এর মধ্যে আলী আকবর ডেইলে বাবুল বাহিনী ও তার প্রতিদ্বন্দী  বক্তার বাহিনী। আর বক্তার বাহিনীকে অস্ত্রের যোগান দেয় তবলার চরের শীর্ষ সন্ত্রাসী নাছির উদ্দিন। এছাড়া চাদা আদায় ও ইয়াবা ব্যবসা নিয়ন্ত্রন করে আকতার কামাল ও শাহেদ কুতুবী সিন্ডিকেট। এরা এতটাই বেপোরোয়া সাবেক উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ছৈয়দ আলম কুতুবীর কাছ থেকে চাদা চেয়ে র্ব্যথ হয়ে তার উপর হামলাও করে। এ ঘটনায় কুতুবদিয়া থানায় মামলা রয়েছে।  বড়কূপ ইউনিয়নে সাজ্জাদ বাহিনী ও রুস্তম বাহিনী। কৈয়ারবিলে ৩ টি গোষ্ঠীর মধ্যে দাঙ্গা চললে বর্তমানে একক দাপিয়ে বেড়াচ্ছে চট্টগ্রাম আট হত্যা মামলা ও স্ত্রী হত্যা মামলার আসামী উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আওরঙ্গজেব মাতবরের ছোট ভাই জামায়াত নেতা সেলিম পরিচালিত সেলিম বাহিনী।  দক্ষিণ ধুরং রয়েছে জলদূস্য আলাউদ্দিন আল আজাদের পরিচালিত আজাদ বাহিনী। জলদূস্য স¤্রাট বাদল ক্রসফায়ারে নিহত হওয়ার পর থেকেই ওই বাহিনীর বেপোরোয়া হয়ে উঠেছে। উত্তর ধুরুং রয়েছে অর্ধশতাধিক মামলার  আসামী জলদূস্য স¤্রাট রমিজ বাহিনী । কৈয়ারবিলে কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক সদস্য খোরশেদ আলম কুতুবীর নাম ব্যবহার করে সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তুলেছে তার ফুফাত ভাই মীর কাশেম। লেমশখালিতে রয়েছে ৩ জনের একটি সিন্ডিকেট বাহিনী। চট্টগ্রাম, শীলখালি ও আনোয়ারার ডাকাতদের মালামাল ক্রয় ও বিক্রয় করা এদের মূল পেশা। এছাড়া সিন্ডিকেট টেকনাফ থানা সমুদ্রপথে আসা ইয়াবা ব্যবসাও নিয়ন্ত্রন করে। ওই সিন্ডিকেটের ৩ জন হচ্ছেন মো. রাসেল, জয়নাল ও ফজল কাদের। তবে কুতুবদিয়ার সবচেয়ে আলোচিত নাম বড়খোপের দিদার কোম্পানি। অভিযোগ এর তার মালিকানাধীন ৭ টি ট্রলারই জলদূস্যরা ব্যবহার করে। এছাড়া ওইসব ট্রলারে ইয়াবা পরিবহনে ব্যবহৃত হয়।
টেকনাফে এক সময় অনেকগুলো ডাকাতদল থাকলেও বর্তমানে অনেকটা নিস্ক্রিয়। ইয়াবা ব্যবসা ও মানব পাচার সংশ্লিষ্ঠ হয়ে পড়েছে এসব বাহিনীগুলো। তারপরও মাঝেমধ্যে এসব বাহিনীগুলো নিজেদের মধ্যে দাপট দেখায়।এরমধ্যে হোয়াইক্যং খারাংখালি, হ্নীলার ধেচুয়া প্রাং, রং্গিখালি, আলীখালি, লেদা, দমদমিয়া নেচারপার্ক, সদরের লেঙ্গুর বিল, কচুবনিয়া, নাজিরপাড়া, মৌলভীপাড়া ও হাবিবপাড়া, মন্ডুর ডেইল, পেন্ডল পাড়া, হারিয়াখালি, শাহপরীরদ্বীপ উত্তর পাড়া ও জালিয়াপাড়ায় রয়েছে ওইসব বাহিনীর আস্তানা। সুত্র : দৈনিক কক্সবাজার

পাঠকের মতামত: