ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

পুলিশের সহযোগিতায় জমি দখল প্রভাবশালীর

নিজস্ব প্রতিবেদক ::dokhol

চকরিয়ায় প্রতিমা বালা নাথ নামের এক বৃদ্ধ নারীর ক্রয়সূত্রে প্রায় ৩০ বছরের ভোগদখলীয় বিপুল পরিমাণ জায়গা জোরপূর্বক দখলে নিয়ে রাতারাতি ইমারত নির্মাণকাজ চালাচ্ছেন প্রভাবশালীরা। বিরোধীয় এই জায়গায় আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা না মেনে এবং পুলিশের সহযোগিতায় দখলবাজ চক্র আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। জায়গা দখলে বাধা দেওয়ায় বৃদ্ধ প্রতিমা বালাকে শারীরিক নির্যাতন চালানোরও অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে বৃদ্ধ প্রতিমা বালা বাদী হয়ে দখলবাজ চক্রের ৬ জনের নামে থানায় লিখিত এজাহার দিলেও বুধবার বিকেল পর্যন্ত তা মামলা হিসেবে নেওয়া হয়নি। তবে পুলিশ বলেছে, প্রতিমা বালার ওপর যদি কেউ হামলা বা শারীরিক নির্যাতন করার ঘটনা প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়, তাহলে মামলা নেওয়া হবে।
ডুলাহাজারা নাথপাড়ার বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, ডুলাহাজারা ইউনিয়নের উলুবুনিয়া গ্রামের জহির উল্লাহর ছেলে ছৈয়দ আহমদ সশস্ত্র একদল ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী নিয়ে এক মাস ধরে প্রতিমা বালা নাথের ক্রয়কৃত এক কানি (৪০ শতাংশ) জমির অর্ধেকাংশ দখলে নিতে বেশ তৎপর হয়ে ওঠে। এ নিয়ে প্রতিমা বালা কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে ১৪৪ ধারা জারি চেয়ে আবেদন করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট খালি জায়গায় স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে উভয় পক্ষকে নির্দেশনা দিয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কাছ থেকে প্রতিবেদন এবং থানার ওসিকে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে নির্দেশ দেন। কিন্তু ছৈয়দ আহমদ এসব নির্দেশনা অমান্য করে বিধবা নারীর জায়গা দখলে নিতে আরও বেশি বেপরোয়া হয়ে ওঠে।
মঙ্গলবার রাতে চকরিয়া থানায় প্রতিমা বালা বলেন, ‘৩০ বছর আগে আমি এক কানি জমি ক্রয় করার পর খতিয়ান সৃজনসহ সরকারি নানা খাজনা পরিশোধ করে অদ্যাবধি ভোগদখলে রয়েছি। কিন্তু আমার ক্রয়কৃত জমিতে গত কয়েক মাস আগে হঠাৎ করে এসে জায়গা দাবি করে ছৈয়দ আহমদ। এ নিয়ে আমি আদালতের শরণাপন্ন হলেও সে কোনো কিছুই মানছে না। আমাকে জায়গা থেকে উচ্ছেদ করতে ছৈয়দ আহমদ সদলবলে সেখানে অবস্থান করে জোরপূর্বক জায়গা দখলে নিয়ে ইমারত নির্মাণ করছে।
অভিযুক্ত ছৈয়দ আহমদ বলেন, ‘আমি এক বছর আগে ওই জায়গা ক্রয় করেছি। আমার ক্রয়কৃত জায়গায় ইমারত নির্মাণকাজ চালাচ্ছি। এখানে কোনো হিন্দু নারীর জায়গা দখলে নেওয়া হয়নি এবং কাউকে মারধরও করিনি। আমি যা করছি তার সব কিছুই থানার অফিসার দেবব্রত স্যার জানেন। মঙ্গলবার রাতেও থানায় গিয়ে স্যারের সঙ্গে দেখা করেছি।’ ওসি মো. বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘প্রতিমা বালাকে মারধর করার বিষয়টি সত্য হয়, তাহলে তদন্তপূর্বক ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাছাড়া শুরু থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার দেবব্রত রায়ের পরিবর্তে প্রতিমাকে মারধরের বিষয়টি তদন্তের জন্য নতুন একজন অফিসারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’

পাঠকের মতামত: