ঢাকা,বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

চকরিয়ার শতাধিক গ্রামে ১০ দিন ধরে বিদ্যুৎ নেই

চকরিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি ::

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার অন্তত শতাধিক গ্রামের মানুষ পল্লী বিদ্যুতের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। টানা ১০ দিন ধরে এসব গ্রামে বিদ্যুতের দেখা নেই।

একদিকে পবিত্র রমজান মাস, অন্যদিকে তীব্র গরমের মধ্যে দিনের পর দিন বিদ্যুৎ না পাওয়ায় ক্ষোভে ফুঁসছে গ্রাহকরা। অনেক স্থানে বিদ্যুতের দাবিতে বিক্ষোভ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। এলাকাবাসী জানায়, ঘূর্ণিঝড় মোরা আঘাত হানার সংকেত দেওয়ার সময়ই উপজেলাজুড়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। এরপর ঘূর্ণিঝড় বিদায় নেওয়ার পর একনাগাড়ে সাত-আট দিন বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল। তবে অনেক বাদ-প্রতিবাদের পর কোনো কোনো গ্রামে বিদ্যুতের দেখা পেলেও তা এক ঘণ্টাও স্থায়ী হচ্ছে না বলে অভিযোগ গ্রাহকদের।

হারবাং পল্লী বিদ্যুৎ গ্রাহক ফোরামের সভাপতি জাহেদ হোছাইন খান জানান, ‘ঘূর্ণিঝড় মোরায় আঘাত হানার ধুয়া তুলে দিনের পর দিন বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রাখা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার এক মাস আগে থেকেই বিদ্যুৎ পরিস্থিতি নিয়ে আমরা সোচ্চার ছিলাম। শত শত গ্রাহক হারবাং ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে প্রতিবাদ সভার পাশাপাশি পল্লী বিদ্যুৎ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে স্মারকলিপি দেয়। কিন্তু উল্টো ঘূর্ণিঝড়ের দোহাই দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রাখা হয়েছে।

জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার সাত-আট দিন পর ইউনিয়নের গুটিকয়েক গ্রাম বিদ্যুতের দেখা পেলেও উত্তর হারবাংয়ের ভিলেজারপাড়া, করমুহুরীপাড়া, গয়ালমারা, উত্তর নুনাছড়ি, ইটাছড়ি, ভাণ্ডারির ডেবা, জমিদারপাড়া, গোদারপাড়া, সিকদারপাড়া, উত্তর ওং দক্ষিণ পহরচাঁদা, কাটাখালী, লালব্রিজ, রাখাইনপাড়া, রোসাইঙ্গাপাড়া, কালা সিকদারপাড়া, মল্লিকপাড়া, ধরপাড়া, নাথপাড়া, পালপাড়াসহ অন্তত ৫০ গ্রাম এখনো বিদ্যুত্হীন। তা ছাড়া ডুলাহাজারা, ফাঁসিয়াখালী, খুটাখালী, চিরিঙ্গা, পূর্ব বড় ভেওলা, পশ্চিম বড় ভেওলা, বদরখালী, কৈয়ারবিল, লক্ষ্যারচর, কোনাখালী, ঢেমুশিয়া ইউনিয়নে বিদ্যুতের একই অবস্থা।

পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহকরা জানায়, গত ১০ এপ্রিল দুর্নীতির বিরুদ্ধে ফলোআপ গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে পল্লী বিদ্যুতের নানা অনিয়ম-দুর্নীতি ও ভয়াবহ লোডশেডিংয়ের বিষয়টি জোরালোভাবে উত্থাপনের পরিপ্রেক্ষিতে গ্রামাঞ্চলের বিদ্যুতের লোডশেডিং মে মাসের মধ্যে সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসার ব্যাপারে উপস্থিত দুদক কমিশনার ড. নাসির উদ্দিন আহমেদকে আশ্বস্ত করেছিলেন পল্লী বিদ্যুতের কক্সবাজারের জিএম নুর মোহাম্মদ আজম। কিন্তু ওই আশ্বাসের পর উল্টো বিদ্যুৎ পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়েছে।

এ বিষয়ে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাহেদুল ইসলাম বলেন, ‘পল্লী বিদ্যুতের ভয়াবহ এ অবস্থা থেকে উত্তরণে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রতিনিয়ত তাগাদা দিয়ে যাচ্ছি। তাঁরা জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে ৮০ শতাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। শিগগিরই শতভাগ এলাকার গ্রাহকরা বিদ্যুৎ পাবে। ’

পাঠকের মতামত: