ঢাকা,শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

মিয়ানমারে আটক দুই সাংবাদিকের অবিলম্বে মুক্তি দাবি

cpjঅনলাইন ডেস্ক :::

মিয়ানমারে আটক দু’জন প্রথম সারির সাংবাদিকের বিরুদ্ধে আনা ‘ফৌজদারি মানহানী’র (ক্রিমিনাল ডিফেমেশন) মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার ও তাদের মুক্তি দাবি করেছে সাংবাদিকদের অধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে)। নিজস্ব ওয়েসবাইটে ৫ই জুন দেয়া এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, সরকার এমন অভিযোগে আটক করেছে দ্য ভয়েস পত্রিকার সম্মাদক কাইওয়া মিন সয়ে এবং কলাম লেখক কো কাইওয়া জওয়া নাইংকে। শেষোক্তজন বৃটিশ কো কো মুয়াং নামে কলাম লিখে থাকেন। গত ২ রা জুন পুরিল তাদেরকে গ্রেপ্তার করে। সেনাবাহিনী আনীতি অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের বিচার করার আগেই আটক করে রাখা হয়েছে। কাইওয়া মিন সয়ে রেডিও ফ্রি এশিয়াকে বলেছেন, ইয়াঙ্গুনের বাহান টাউনশিপ জেলার পুলিশ প্রথমে তাদেরকে বলেছে, তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হবে না। পুলিশ শুধু বলেছিল, ‘ওথ অব দ্য নেশন অব বুলেটস’ শীর্ষক শিরোনামে গত ২৭ শে মার্চ তারা একটি স্যাটায়ার রিপোর্ট লেখেন। এটি সেনাবাহিনী নির্মিত ‘ফেইথফুল টু দ্য নেশন’ ছবির ব্যাঙ্গ বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এর ফলে মিয়ানমারের টেলি যোগাযোগ বিষয়ক আইনের আর্টিকেল ৬৬(ডি) অধীনে তাদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনী অভিযোগ করেছে। সেই অভিযোগের বিষয়ে পুলিশ শুধু তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায়। গ্রেপ্তার করা এই দু’ সাংবাদিককে ৪ঠা জুন আদালতে হাজির করা হলে তাদের জামিন চাওয়া হয়। কিন্তু আদালত তা নামঞ্জুর করে। উল্টো পরবর্তী শুনানী পর্যন্ততাদেরকে আটক রাখার নির্দেশ দেয় আদালত। রিপোর্ট অনুযায়ী ওই শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে ৮ই জুন। যদি এতে তারা দোষী সাব্যস্ত হন তাহলে তাদের সর্বোচ্চ তিন বছরের জেল ও জরিমানা হতে পারে। সিপিজের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া বিষয়ক প্রতিনিধি শন ক্রিসপিন বলেছেন, আমরা অবিলম্বে সাংবাদিক কাইওয়া মিন সয়ে এবং কো কাইওয়া জাওয়া নাইংয়ের মুক্তি দাবি করি মিয়ানমার সরকারের কাছে। একই সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে আনীত মানহানির অভিযোগ প্রত্যাহার দাবি জানাই। তিনি আরো বলেন, মানহানি কখনোই ফৌজদারি অপরাধ হতে পারে না। মানহানি আইনের অধীনে সাংবাদিকদের কণ্ঠ রোধের জন্য যে চেষ্টা হচ্ছে এটা সেনা শাসনের অন্ধকার সময়ের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত অং সান সুচি সরকারের কাছে গভতন্ত্রের ভবিষ্যত এমন হবে এটা কেউ আশা করেন না।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের নভেম্বরে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ একই আইনের অধীনে গ্রেপ্তার করেছে ইলেভেন মিডিয়া গ্রুপের প্রধান নির্বাহী থান হটাট অং, এই গ্রুপের প্রকাশনা ডেইলি ইলেভেনের প্রধান সম্পাদক ওয়াই ফাইয়ো’কে। বিচারহীনভাবেই তাদেরকে প্রায় দু’মাস আটকে রাখা হয়। তারপর শুরু হয় বিচারিক কার্যক্রম। ওদিকে গত ৩০ শে মে প্রকাশিত এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, কানতারাওয়াড্ডি টাইমসের সাংবাদিক মাও ওও মায়ার এক সহকর্মীকে নিয়ে একটি মোটরসাইকেলে যাচ্ছিলেন। এ সময় তাকে জোর করে ওই মোটরসাইকেল থেকে তুলে নেয় দু’ব্যক্তি। তারা তাকে পাশে অপেক্ষমাণ একটি গাড়িতে জোর করে উঠিয়ে নেয়। এরপর তারা ওই গাড়িটি একটি দুর্ঘটনায় ফেলে। এতে ওই সাংবাদিক চেতনা হারান। ওইদিন স্থানীয় সময় বিকাল সাড়ে পাঁচটায় তাকে নিয়ে যাওয়া হয় একটি হাসপাতালে। সেখান থেকে স্থানান্তর করা হয় লোইকাও জেনারেল হাসপাতালে। এখন পর্যন্ত স্বাভাবিকভাবে কিছু খেতে, কথা বলতে, এমনকি চলাচল করতে পারেন না। পুলিশ বলেছে, তারা ওই দুই সন্দেহভাজনকে খুঁজছে।

পাঠকের মতামত: