ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

বাঁধ নির্মাণের ৪শ’ কোটি টাকা লুটপাট

badসৈয়দুল কাদের, কক্সবাজার : 

প্রতি বছর বেড়ীবাঁধ নির্মাণের নামে দেওয়া জরুরী বরাদ্দই ‘কাল’ হয়ে দাড়িয়েছে উপকূলের ৬ লাখ মানুষের জন্য। প্রতি বছর জরুরী বরাদ্দের নামে কাজ না করে কয়েকশ কোটি টাকা করে হাতিয়ে নিচ্ছেন সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর নজরে আনার পাশাপাশি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত হওয়া জরুরী বলে মনে করছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।

প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায় বেড়ীবাঁধের জন্য জরুরী বরাদ্দ এখন আতংকের কারণ হয়ে দাড়িয়েছে উপকূলীয় লোকজনের জন্য। যেন লুটপাটের জন্য দেওয়া হয় এ সব বরাদ্দ। গত কয়েক মাস আগেও কক্সবাজারের উপকূলীয় এলাকার জন্য দেওয়া হয় প্রায় ৪০০ কোটি টাকার জরুরী বরাদ্দ।

কিন্তু ওই টাকা কাজ না করেই ভাগ করে নিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ঠিকাদাররা। যার ফলে জরুরী বরাদ্দের নামে প্রতি বছর সরকারের মোটা অংকের টাকা অপচয় হচ্ছে উপকূলীয় এলাকায়। কেউ ৩০ ভাগ কেউবা ৪০ ভাগ কাজ করেই গুটিয়ে নিয়েছেন নিজেদের কার্যক্রম। যার ফলে আসন্ন বর্ষা মৌসুমে উপকুলীয় এলাকাসমুহ আবারো অরক্ষিত থাকছে। স্থানীয় লোকজন জানান, অন্ততঃ ৬০ ভাগ কাজ করলেও জোয়ার ভাটা থেকে রক্ষা পেত উপকূলীয় এলাকার লোকজন। ঠিকাদার ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা বরাদ্দকৃত টাকা হাতিয়ে নেওয়ায় আতংকের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন উপকূলের লোকজন।

কক্সবাজার জেলা পরিষদ সদস্য মোহাম্মদ রুহুল আমিন জানিয়েছেন, জরুরী বরাদ্দের টাকা লুটপাট কোন ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। সিলেটের হাওর অঞ্চলে বাঁধ নির্মাণের অনিয়মের বিষয়টি নিয়ে দুদক তদন্ত করলেও কক্সবাজারের জন্য জরুরী বরাদ্দের বিষয়টি নিয়ে কেন মাথা ঘামায় না তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। জরুরী বরাদ্দের নামে সরকারের অর্থ অপচয় করা হচ্ছে। যে টাকাগুলো অপচয় করা হচ্ছে তা দিয়ে স্থায়ী বেড়ীবাঁধ নির্মাণ করা যেত। তদন্ত করলে কি পরিমান কাজ তারা করেছেন তা বেরিয়ে আসবে।

কুতুবদিয়া আলী আকবর ডেইলের চেয়ারম্যান নুরুচ্ছফা বিকম ও মাতারবাড়ির চেয়ারম্যান মাস্টার মোহাম্মদ উল্লাহ জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার উপকূলের লোকজনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিয়মিত অর্থ বরাদ্দ দিলেও কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদের যোগসাজসের মাধ্যমে বরাদ্দকৃত টাকা ভাগ বাটোয়ারা করেন। যার ফলে কোন কাজই হয় না। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত হওয়া ছাড়াও বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টিতে আনা প্রয়োজন।

ধলঘাটা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামরুল হাসান জানিয়েছেন, ধলঘাটায় যে সামান্য কাজ করা হয়েছে তা একদিকে নি¤œমানের অপরদিকে অর্ধেকেরও কম। ৪/৫ জন ঠিকাদার ২৫ ভাগ কাজ করে সবকিছু গুটিয়ে নিয়েছেন। খন্দাকর শাহীন আহমদ কনস্ট্রাকশনের নামে নেওয়া ৪ কোটি টাকার কাজের মধ্যে করেছেন মাত্র ১ কোটি টাকার কাজ। যারা কাজ পেয়েছেন তারা সবাই শুধুমাত্র টাকা ভাগ বাটোয়ারা করেছেন, কাজ করে নি।

এ ব্যাপারে কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সবিবুর রহমান জানিয়েছেন, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মতে কাজ করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। লুটপাটের বিষয়টি আমাদের জানা নেই।

 

পাঠকের মতামত: