ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

‘এবার ঘরে ঘরে তৈরি হবে বালিশ ব্যাংক—-’

taka_1অনলাইন ডেস্ক :::

২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ব্যাংক হিসাবধারীদের ওপর নেমে এসেছে শুল্কের খড়গ। যার ফলে ব্যাংক আমানতের পরিমাণ দিন দিন কমবে বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় চলছে নানা মহলে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও পক্ষে বিপক্ষে নানা অভিমত ফুটে উঠছে।

বৃহস্পতিবার প্রস্তাবিত বাজেটে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত জানান, ব্যাংক হিসাবে কমপক্ষে ১ লাখ টাকা থাকলে আবগারি শুল্ক বাড়বে। এক লাখ টাকা থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত থাকলে আবগারি শুল্ক দিতে হবে ৮০০ টাকা; যা বর্তমানে রয়েছে ৫০০ টাকা। আর ১০ লাখের ওপর থেকে এক কোটি টাকায় বর্তমানে দেড় হাজার টাকা আবগারি শুল্ক দিতে হয়। এখন তা বাড়িয়ে আড়াই হাজার টাকা করা হয়েছে। নতুন এ হিসাব কার্যকর হবে পয়লা জুলাই থেকে।

ব্যাংক হিসাবের ওপর আবগারী শুল্ক বাড়ানোয় অর্থমন্ত্রীর সমালোচনা হচ্ছে বেশি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এসএম মফিউর রহমান লিখেছেন, ‘এবার বাংলার ঘরে ঘরে তৈরি হবে বালিশ ব্যাংক….. ব্যাংক অব বালিশ….. কারো থাকবে না কোন নালিশ….. ভ্যাট হবে পালিশ… তাইনা দেখে ভ্যাটমন্ত্রী ডাকবে একটা শালিশ….. ব্যাংক অব বালিশ…………….’।

শুধু বিপক্ষেই নয়, পক্ষেও লিখেছেন অনেকেই। কিন্তু এরকমের যেসব মন্তব্য এসেছে তার বেশিরভাগই সমালোচনামূলক। ইমন আহমেদ নামের একজন লিখেছেন, ‘আসুন আগে জানি পরে বিচার করি।… মাত্র ৩০০ টাকা (১ লাখ টাকার উর্ধ্বে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত বিদ্যমান ৫০০ টাকার পরিবর্তে ৮০০) বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে তাতেই দেখি অনেকে বলছেন সরকারকে ভোট দিবেন না। তা ভাইজান, যখন বেতন বাড়ানো হল তখন তো বলেন নাই এই সরকারকে ভোট দিব।…..’। তার এমন পোস্ট প্রথম ২৭টি মন্তব্যের বেশিরভাগই নেতিবাচক।

লুমি অ্যাডলিন রোজারিও নামে একজন লিখেন, ‘সরকারি আমলাদের বেতন বেড়েছে বন্ধু সাধারণ চাকুরীজীবীদের নয়। তাই আমাদের মতো সাধারণ মানুষের কষ্ট হবে এটাই স্বাভাবিক’।

জহিরুল ইসলাম রুদ্র নামে একজন লিখেন, ‘ভাই, এদেশের সবাই সরকারী চাকরি করে না যে বেতন বাড়ালে খুশি হবে। আর আমাদের মতো কোটি কোটি মধ্যবিত্তের জন্য ৩০০ টাকা বাড়ানো অনেক বেশি। যেসব খাতে উন্নয়নের টাকা বাড়ানো হয়েছে সেগুলো সব রাজনীতিবিদদের পকেটে যাবে। খেটে খাওয়া মানুষের কোনো কাজে আসবে না। নিত্যকিছু জিনিসের উপর ভ্যাট না বাড়িয়ে বিলাসবহুল পণ্যের উপর কর বাড়ানো দরকার ছিল। এত বড় আর ফালতু আর কখনোই হয় নাই’।

জাসদ খান নামের একজন লিখেন, ‘ব্যাংক থেকে জমানো টাকা ইচ্ছামতো কেটে নেওয়া এটা তাদের জন্য ঠিক আছে যারা দুর্নীতি করে ব্যাংক-এ টাকা জমিয়ে রাখে, আমাদের মত খেটে খাওয়া মানুষের টাকা কাটা গেলে কোটি মানুষ আওয়াজ উঠাবে এটাই স্বাভাবিক’।

ব্যাংকিং তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে সুদের হার কমে দাঁড়িয়েছে ৫ থেকে ৬ শতাংশ। পাশাপাশি রয়েছে বিভিন্ন ধরনের মাশুল। এছাড়া মুনাফার ওপর ১০ থেকে ১৫ শতাংশ কর দিতে হয়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, হিসাব স্থিতির ওপর আবগারি শুল্ক বাড়ানোয় আমানতকারীরা ব্যাংকবিমুখ হয়ে পড়বেন। তারা এখন ছুটবেন শেয়ার বাজার বা সমবায় সমিতিতে। এতে ছায়া অর্থনীতি আরও বাড়বে।

পাঠকের মতামত: