ঢাকা,শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

এখনো কূলে ফিরেননি হাজারো জেলে ও পর্যটক ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় কক্সবাজারে প্রশাসনের ব্যাপক প্রস্তুতি

aqফরিদুল মোস্তফা খান, কক্সবাজার ::

কূলে ফিরে আসেনি এখনো কক্সবাজার থেকে গভীর সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া অর্ধশতাধিক ফিশিং ট্রলার । এতে প্রায় হাজারের কাছাকাটি জেলে ও মাঝিমাল্লা থাকায় তাদের পরিবারে চলছে উদ্বেগ আর উৎকষ্ঠা। প্রবাল দ্বীপ সের্ন্টমার্টিনেও আটকা পড়েছেন শতাধিক পর্যটক। এ অবস্থায় মহাসেন, রোয়ানুর মতো এবার ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’। রাডারে দৃশ্যমান ঘূর্ণিঝড়টি ক্রমশ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। ফলে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজারও চলছে ৭নং বিপদ সংকেট । ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ মোকাবেলায় ইতোমধ্যে জরুরী প্রস্তুতি আহবান করেছে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসন। সোমবার সকাল ১১টায় শুরু হয়ে পৌনে ১২টা পর্যন্ত কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে চলে এই প্রস্তুতি সভা । সভায় ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ মোকাবেলায় করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলাপ হয়েছে। এরই মধ্যে জেলার কয়েকটি উপজেলায় খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। লোকজনকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের সূত্র মতে, ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’আরও উত্তর দিকে সরে বাংলাদেশ উপকূলের ৫০০ কিলোমিটারের মধ্যে চলে আসায় চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এছাড়া পায়রা ও মোংলা বন্দরকে ৪ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে ৫ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অফিস।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ আরো উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে মঙ্গলবার ভোরে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম করতে পারে। ঘূর্ণিঝড় অতিক্রমের সময় উপকূলীয় জেলাগুলোতে ঘণ্টায় ৭০-৯০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের মানে হল, সাগরে মাঝারী শক্তির একটি ঘূর্ণিঝড় এগিয়ে আসছে, যেখানে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটার। ঘূর্ণিঝড়টি সমুদ্রবন্দরের খুব কাছ দিয়ে অথবা উপর দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে৷ ৫ নম্বর বিপদ সংকেতের মাত্রা ৭ নম্বরের সমান, তবে দিক ভিন্ন। অর্থাৎ, সরাসরি পায়রা ও মোংলার দিকে না এসে ঘূর্ণিঝড়টি পূর্ব দিক দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে বলে এই দুই বন্দরকে ৫ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে একটি নিম্নচাপ সৃষ্টি হওয়ার পর রোববার মধ্যরাতে সেটি ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নেয়। এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সাগর তীরের আট দেশের আবহাওয়া দপ্তর ও বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্যানেলের তালিকা অনুযায়ী তখন এর নাম দেওয়া হয়ে ‘মোরা’ । ‘মোরা’ থ্যাইল্যান্ডের প্রস্তাবিত নাম। নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নেওয়ার পরপরই সমুদ্রবন্দরগুলোকে দুই নম্বর হুঁশিয়ারি সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়। পরে ভোর ৬টায় সংকেত বাড়িয়ে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত এবং ৯টায় বিপদ সংকেত জারি করা হয়। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সাগর উত্তাল থাকায় উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা, ট্রলার এবং সমুদ্রগামী জাহাজকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে। সর্বশেষ গত ১৫ এপ্রিল সকালে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি নিম্নচাপ সৃষ্টি হয় এবং পরদিন তা ঘূর্ণিঝড় ‘মারুথা’য় রূপ নেয়। পরে সেটি দক্ষিণপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম করে।

পাঠকের মতামত: