ঢাকা,মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪

অরক্ষিত বেড়িবাঁধ, ‍ঝুঁকিতে উপকূলের ৩ লাখ মানুষ

beribadকক্সবাজার প্রতিনিধি ::

সহসায় জোয়ার-ভাটার বৃত্ত থেকে মুক্তি পাচ্ছেন না কক্সবাজার উপকূলের অন্তত ৩ লাখ মানুষ। বেড়ীবাঁধ এক পাশে নির্মিত হলে অন্য পাশে খোলা থাকে, তাই কোন ভাবেই বন্ধ হচ্ছে না জোয়ার-ভাটা। উপকূলীয় এলাকায় স্থায়ী বেড়ীবাঁধ নির্মিত না হওয়া পর্যন্ত সহসায় জোয়ার-ভাটা থেকে মুক্তি পাচ্ছে না বলে মনে করছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও বিভিন্ন পেশার লোকজন।
সহসায় জোয়ার-ভাটা মুক্ত হচ্ছে না কক্সবাজার উপকূলের অন্তত ৩ লাখ মানুষ। প্রতি বছর জরুরী বরাদ্দের নামে মোটা অংকের টাকা বরাদ্দ হলেও তা কোন কাজে আসছে না বেড়ীবাঁধ নির্মাণে। যা বরাদ্দ করা হয় তা পকেটস্থ করেন সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা। যার ফলে দুর্ভোগ শেষ হচ্ছে না উপকূলের লোকজনের।
প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায় প্রতি বছর কক্সবাজারের উপকূলীয় এলাকায় অস্থায়ী বেড়ীবাঁধ নির্মাণের জন্য জরুরী ভাবে বরাদ্দ দেওয়া হয় মোটা অংকের টাকা। সদ্য সমাপ্ত বছরে ৪০০ কোটি বরাদ্দ দেওয়া হয় জরুরী বরাদ্দের নামে। কিন্তু ওই টাকা কাজ না করেই ভাগ করে নিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ঠিকাদাররা। যার ফলে জরুরী বরাদ্দের নামে প্রতি বছর সরকারের মোটা অংকের টাকা অপচয় হচ্ছে উপকূলীয় এলাকায়। কেউ ৩০ ভাগ কেউবা ৪০ ভাগ কাজ করেই গুটিয়ে নিয়েছেন নিজেদের কার্যক্রম। যার ফলে আসন্ন বর্ষা মৌসুমে উপকুলীয় এলাকাসমুহ আবারো অরক্ষিত থাকছে। স্থানীয় লোকজন জানান, অন্ততঃ ৬০ ভাগ কাজ করলেও জোয়ার ভাটা থেকে রক্ষা পেত উপকূলীয় এলাকার লোকজন।
কক্সবাজার জেলা পরিষদ সদস্য মোহাম্মদ রুহুল আমিন জানিয়েছেন, জরুরী বরাদ্দের নামে সরকারের অর্থ অপচয় করা হচ্ছে। যে টাকাগুলো অপচয় করা হচ্ছে তা দিয়ে স্থায়ী বেড়ীবাঁধ নির্মাণ করা যেত। তদন্ত করলে কি পরিমান কাজ তারা করেছেন তা বেরিয়ে আসবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার উপকূলের লোকজনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিয়মিত অর্থ বরাদ্দ দিলেও কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদের যোগসাজসের মাধ্যমে বরাদ্দকৃত টাকা ভাগ বাটোয়ারা করেন। যার ফলে কোন কাজই হয় না।
প্রাকৃতিক দূর্যোগের জন্য সবচেয়ে ঝুকিপূর্ণ এলাকা ধলঘাটা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামরুল হাসান জানিয়েছেন, ধলঘাটায় যে সামান্য কাজ করা হয়েছে তা একদিকে নিম্নমানের অপরদিকে অর্ধেকেরও কম। ৪/৫ জন টিকাদার ২৫ ভাগ কাজ করে সবকিছু গুটিয়ে নিয়েছেন। খন্দাকর শাহীন আহমদ কনস্ট্রাকশনের নামে নেওয়া ৪ কোটি টাকার কাজের মধ্যে করেছেন মাত্র ১ কোটি টাকার কাজ। যারা কাজ পেয়েছেন তারা সবাই শুধুমাত্র টাকা ভাগ বাটোয়ারা করেছেন, কাজ করে নি। যার ফলে ইতোমধ্যে স্থানীয়দের মাঝে জোয়ার ভাটার আতংক শুরু হয়েছে।
কুতুবদিয়া উপজেলার আলী আকবর ডেইলের জাহাঙ্গীর আলম জানিয়েছেন, জরুরী বরাদ্দের নামে প্রতি বছর লুটপাট করার জন্য প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। প্রতি বছর এ ধরণের বরাদ্দ দেওয়ার কারণে উপকূলীয় এলাকায় স্থায়ী বেড়ীবাঁধ হচ্ছে না। রোয়ানুর আঘাতে যে ক্ষতি হয়েছে তা একভাগও পোষিয়ে আসেনি। তাই আমরা জরুরী বরাদ্দ নয় চাই স্থায়ী বেড়ীবাঁধ।
এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান নির্বাহী সবিবুর রহমান জানিয়েছেন, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি অবগত আছেন। তাই আমাদের করার কিছু নেই।

পাঠকের মতামত: