ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

কক্সবাজারের বিশাল শব্দ ভান্ডার ,হতে পারে আঞ্চলিক ভাষার ব্যাকরণ : প্রফেসর মনসুর মুসা

কক্সবাজার সাহিত্য একাডেমীর সেমিনার

Coxsbazar-ancholic-bhasa-Saminorবার্তা পরিবেশক

বাংলা একাডেমীর প্রাক্তন মহাপরিচালক, আন্তর্জাতিক ভাষা ইন্সটিটিউটের প্রাক্তন পরিচালক, গণ-বিশ^বিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ভাষা বিশেষজ্ঞ প্রফেসর মনসুর মুসা বলেছেন, কক্সবাজার সাহিত্য একাডেমীর সভাপতি মুহম্মদ নূরুল ইসলাম ‘কক্সবাজারের আঞ্চলিক ভাষার বৈচিত্র্য’ শীর্ষক প্রবন্ধের মাধ্যমে কক্সবাজার তথা বৃহত্তর চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষার মহাসাগরে একটি ঢিল ছুঁড়ে দিয়েছেন। এরমাধ্যমে আঞ্চলিক ভাষা নিয়ে কাজ করতে যারা আগ্রহী তাদের জন্য একটি সুবর্ণ সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। কক্সবাজারের আঞ্চলিক ভাষার মধ্যে রয়েছে অনেক বৈচিত্র্য। পাশাপাশি কক্সবাজারে চমৎকার কিছু স্মৃতিরক্ষার মানুষ রয়েছে।

কক্সবাজার সাহিত্য একাডেমীর উদ্যোগে ও কক্সবাজার সিটি কলেজের ব্যবস্থাপনায় কলেজের বাংলা বিভোগের রিসোর্স ভবন মিলনায়তনে আজ ২৭ মে ২০১৭, ১৩ জ্যৈষ্ঠ ১০২৪, শনিবার অনুষ্ঠিত ‘কক্সবাজারের আঞ্চলিক ভাষার বৈচিত্র্য’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রফেসর মনসুর মুসা বলেন, প্রাকৃতিক ভাষা মানে স্বাভাবিক ভাষা। ভাষার শুরু এবং শেষের কোনো পরিসীমা নেই। ফলে কোনো দিন মরে না। আমাদের মুখ থেকে অনায়াসে যে ভাষা বেরিয়ে আসছে তাই-ই আমাদের মাতৃভাষা। মা’য়ের সাথে সম্পর্কযুক্ত বলেই তাকে আমরা মাতৃভাষা বলতেই পারি।

প্রফেসর মনসুর মুসা বলেন, প্রান্তিক জেলা কক্সবাজারের বসে মুহম্মদ নূরুল ইসলাম যে কাজটি শুরু করেছেন আপনারা এই কাজটিকে এগিয়ে নিবেন। এর মাধ্যমে কক্সবাজারের আলাদা ভাষার বৈশিষ্ট্যটি ফুটে উঠবে। নূরুল ইসলাম তাঁর প্রবন্ধে যে কটি শব্দের মাধ্যমে কক্সবাজারের ভাষার আলাদা বৈচিত্র্য ফুটিয়ে তুলতে চেয়েছেন তাতে তিনি সম্পূর্ণ সফল হয়েছেন।

কলেজের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য করে প্রধান অতিথি বলেন, কক্সবাজারে আঞ্চলিক ভাষার রয়েছে বিশাল শব্দ ভা-ার। এই শব্দ ভান্ডার থেকে দৈনিক ২০টি শব্দ সংগ্রহ ও সংরক্ষণের মাধ্যমে তালিকা প্রণয়ন করে একটি ডিকশানরী তৈরি করা সম্ভব। এর উপর ভিত্তি করে সৃষ্টি হতে পারে কক্সবাজারের ভাষার একটি ব্যাকরণ।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন কক্সবাজার সিটি কলেজের অধ্যক্ষ ক্য থিং অং। সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর এ কে এম ফজলুল করিম চৌধুরী, চট্টগ্রামস্থ অনারারি কনসাল জেনারেল অব জাপান মুহম্মদ নুরুল ইসলাম, কক্সবাজার কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক মুফীদুল আলম।

মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন কক্সবাজার সাহিত্য একামেডীর সভাপতি লোকগবেষক মুহম্মদ নূরুল ইসলাম।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কক্সবাজার সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর এ কে এম ফজলুল করিম চৌধুরী বলেন, পৃথিবীতে ভাষার শক্তি অবিনশ^র। আঞ্চলিক ভাষা মানে এই নয় যে, প্রমিত ভাষাকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা। বাংলা ভাষার বৈচিত্র্য আনতে স্থানীয় ভাষার গুরুত্ব অপরিসীম। কক্সবাজারের আঞ্চলিক ভাষার চমৎকার কথা ও শব্দগুলোকে সংরক্ষণের মাধ্যমে বাংলা ভাষার উৎকর্ষ সাধন করা সম্ভব।

সিটি কলেজের বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মিসেস শরমিন ছিদ্দিকা লিমার সঞ্চালনায় পঠিত প্রবন্ধের উপর আলোচনা করেন কক্সবাজার সরকারি কলেজের ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক আরিফ ইলাহী, কক্সবাজার সাহিত্য একাডেমীর স্থায়ী পরিষদ সদস্য কবি আদিল চৌধুরী।

সেমিনারের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য পেশ করেন কক্সবাজার সাহিত্য একাডেমীর সাধারণ সম্পাদক কবি রুহুল কাদের বাবুল, শুভেচ্ছা বক্তব্য পেশ করেন সিটি কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক আকতার উদ্দিন চৌধুরী এছাড়াও শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য পেশ করেন কক্সবাজার সিটি কলেজ পরিচালনা পরিষদের সদস্য এডভোকেট ফরিদুল আলম, কলেজের বাংলা বিভাগের অনার্স ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সোহেল রানা ও রোহেনা পারভিন তাইরিন।
কক্সবাজার সাহিত্য একাডেমীর নির্বাহী সদস্য ছড়াকার নূরুল আলম হেলালী ও কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান আকতার চৌধুরী আঞ্চলিক গান পরিবেশন করে সেমিনারে এবটি বৈচিত্র্য আনেন।

 

পাঠকের মতামত: