ঢাকা,শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

কক্সবাজারে পর্যটক ও নাগরিক ভোগান্তি চরমে, পৌরসভায় উত্তেজনা

coxmফরিদুল মোস্তফা খান, কক্সবাজার :::

মেয়রের অভাবে ভারপ্রাপ্তের ভারে নুঁইয়ে পড়ছে কক্সবাজার পৌরসভা। নাগরিক যন্ত্রণায় অতিষ্ট প্রায় ৪ লাখ মানুষ। শহরের সবর্ত্রে ময়লা আবর্জনার উৎকট দূর্গন্ধ। বেওয়ারিশ কুকুর ও মশা-মাছি উৎপাতে অতিষ্ট পর্যটক, পথচারী ও সাধারণ মানুষ। ছোট্ট এই শহরে শুধু নিজের আখের গোছাতে প্রতিটি টমটমের লাইসেন্স থেকে ৫০-৬০ হাজার টাকা করে নেয়া সেই টমটমই ভোগান্তির অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে কক্সবাজারে । পৌর বাসটার্মিনালে গাড়ি রাখার কথা থাকলেও নীতিমালা উপেক্ষা করে সেখানে নতুন নতুন দোকান বরাদ্ধ দেয়ায় টার্মিনালটি রূপ নিয়েছে মার্কেটে। শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে মুখ দেখে দেখে কিছু স্থাপনা ও অবৈধ দখল উচ্ছেদ হলেও ভারপ্রাপ্ত মেয়রের পছন্দের অনেকেই এখনো থেকে গেছেন অবৈধ দখলে। শুধু তাই নয়, তাঁর রহস্যজনক নিরবতায় শহরে বৌদ্ধ মন্দীর সড়কে পৌরসভার একটি জায়গায় ইতোমধ্যে গড়ে উঠেছে ৫তলা ভবন। পেশকার পাড়ার একাধিক ব্যক্তি জানান, নির্বাচন হলে জনগণের ভোটে প্রতিনিধি বদলায়, কিন্তু কোনদিনই তাদের ভাগ্য বদলায় নি। উন্নয়নের অভাবে এই এলাকার রাস্তা-ঘাট কোন দূর্ঘম এলাকার চেয়ে খারাপ। শুধু পেশকার পাড়া নয় পুরো এলাকায় অনুরূপ অবস্থা বিদ্যমান। এই পরিস্থিতিতে ভারপ্রাপ্তকে বাদ দিয়ে নিবার্চিত মেয়রকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়া সংক্রান্ত হাইকোর্টের একটি আদেশ উপেক্ষার বিষয়কে কেন্দ্র করে কক্সবাজার পৌরসভায় উত্তেজনাও বাড়ছে । ইতোমধ্যে দেশের প্রায় ৩৮৪টি সিটি কর্পোরেশন, ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভার জন্য দেয়া এ রকম আদেশ কার্যকর হলেও এখানে অকার্যকর হয়ে পড়েছে।

অভিযোগ উঠেছে, ক্ষমতার লোভে পৌরসভায় ভারপ্রাপ্ত মেয়র মাহবুবুর রহমান চৌধুরী নির্বাচিত মেয়র সরওয়ার কামালকে অসযোগীতা ও অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীদের হুমকি-ধমকি অব্যহত রাখায় অবস্থাটি প্রকট আকার ধারণ করেছে। তবে ভারপ্রাপ্ত মেয়র মাহবুব বলেছেন, পৌরসভা চলে স্থানীয় সরকারের অধিনে। তাই তিনি যে মন্ত্রণালয়ের আদেশের মেয়রকে বহিস্কার পূর্বক তাঁকে ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে, সেই মন্ত্রনালয়ের আদেশ না পাওয়া পর্যন্ত ক্ষমতা ছাড়তে পারবেন না। ভারপ্রাপ্ত মেয়র এও বলেছেন, আদালত আদেশ দিলে মন্ত্রনালয়কে দেবেন। মন্ত্রণালয় আদেশ দিলে তিনি অবশ্যই তা পালন করবেন।

নির্বাচিত মেয়র সরওয়ার কামাল বলেন, ইতোপূর্বে মন্ত্রনালয়ের আদেশে দেশব্যাপী যারা বহিস্কৃত হয়েছেন উচ্চ আদালতের আদেশ সবাই দায়িত্ব ফিরে পেয়েছেন। এক্ষেত্রে উচ্চ আদালতের বাইরে মন্ত্রনালয়ের আলাদা কোন আদেশ লাগেনা। তাই এটি অহেতুক তাঁকে হয়রানী ও আদালত অবমাননা বলে উল্লেখ করে মেয়র সরওয়ার আরো বলেন, উচ্চ আদালতের আদেশে রাজশাহী, সিলেট, গাজিপুর, খুলনা, মেহেরপুর, হবিগঞ্জ ও কক্সবাজার সদর উপজেলার চেয়ারম্যানরা দায়িত্ব ফিরে পেলে আমি কেন পাব না? তাই এ ব্যাপারে জরুরী পদক্ষেপ নিতে তিনি সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, প্রধান বিচারপতি, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, ন্যায় বিচারের শেষ আশ্রয়স্থল উচ্চ আদালত, পৌরসবাসী ও কক্সবাজার জেলা প্রসাসকের তড়িৎ হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এদিকে ক্ষমতার জন্য দু প্রতিনিধির এমন আচরণে ক্ষুদ্ধ পড়েছেন কক্সবাজার পৌরসভার সচেতন জনগণ। পৌরসভার সাধারণ কর্মকর্তা কর্মচারী ও কাউন্সিলররাও রয়েছেন হতাশায়। তাদের অনেকেই বলেন, আসলে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি না থাকলে পৌর এলাকায় বড় ধরণের কোন উন্নয়ন সম্ভব নয়।

পাঠকের মতামত: