ঢাকা,বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের কাজে দুর্নীতি

জহিরুল ইসলাম :
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহা সড়কের ১৯ কিলোমিটার অক্ষত সড়কে ‘ওভারলে’ (আস্তরণ) প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজে ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ কাজে বরাদ্দ দেয়া ১৯ কোটি ৯ লাখ টাকা লুটপাটের মহোৎসব শুরু হয়েছে। উল্লেখিত পরিমান সড়কের অংশে কোন খানাখন্দকের চিহ্নও নেই। তারপরও ওই পরিমান কাজে এতো বিশাল অংকের টাকা বরাদ্দ নিয়ে জনমনে নানা পশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।
সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে; কক্সবাজার সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী, উপবিভাগীয় প্রকৌশলী ও সংশ্লিষ্ট শাখা কর্মকর্তা ছাড়া একজন নিন্ম পদস্থ কার্যসহকারীর তদারকীতে ঠিকাদারী প্রতিষ্টান যেনতেন ভাবে ওই কাজ বাস্তবায়ন করছে। অক্ষত সড়কের উপরিভাগে সিড়িউল বর্হিভূত নিন্মমানের বিটুমিন মিশিয়ে তার উপর প্রতিবর্গ ফুটে যে পরিমান খোয়ার মিশ্রণ ঘটিয়ে ওভারলে’র কাজ করার কথা সে নিয়মগুলো কোথাও মানা হচ্ছে না। সড়কে স্থান ভেদ উপরের স্তরে গড়ে ৫০ মিলিমিটার পুরুত্ব বজায় রাখার কথা থাকলেও এ ক্ষেত্রে তা মানা হচ্ছে না। এলাকাবাসি জানান কয়েক বছর আগে ডিবিএস (ডাবল বিটুমিন ওয়্যারিং কোর্স সার্ফেসিং)’র কাজ সম্পন্ন হওয়া এ অক্ষত সড়কে এই বিপুল পরিমান অর্থের বরাদ্দ এনে বেশীরভাগ টাকা আত্মসাত করা হচ্ছে। তারা এটি তদন্ত করলে থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে বলে জানান।
চকরিয়া উপবিভাগীয় সড়ক ও জনপথ বিভাগের তদারকী কর্মকর্তা আজিজুল হাকিম এহেছান জানান, চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজরা হতে উত্তর হারবাংয়ের জালিয়ার ঢালা পর্যন্ত সড়কের বিভিন্ন অংশের ১৫ কিলোমিটার এলাকায় ও কক্সবাজার সড়ক ও জনপথ উপবিভাগের ৪ দশমিক ৫ কিলোমিটার সহ মাট ১৯ দশমিক ৫ কিলোমিটার এ ওভারলে কাজ বাস্তবায়নের জয়েন্টবেঞ্চারে দায়ীত্ব পায় ঠিকাদারী প্রতিষ্টান রানা বিল্ডার্স প্রাইভেট লিঃ ও হানান বিল্ডার্স লিঃ। তৎমধ্যে ১৯ দশমিক ৫ কিলোমিটার ওভার লে, ১৮০ মিটার ড্রেইন, ৩৫টি সাইন সিগনাল, বিভিন্ন অংশে গাইড় ওয়াল, হার্ড সোল্ডারের উপর কার্পেটিংয়ের কাজ বাস্তবায়নের কথা রয়েছে। ওভারলে কাজে চার ধরণের ইন্ডিয়ান পাকুয়া পাথরের সাথে মিশ্রন ঘটিয়ে প্রতি বর্গফুটে যে পরিমান বিটুমিন সংমিশ্রিত পাথর বসানোর কথা সে নিয়ম কোথাও মানা হচ্ছে না। এলাকাবাসি জানায় আগামী বর্ষ মৌসুমে বৃষ্টি শুরু হলে এসবকাজ নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশংকা রয়েছে। তারা এ মহাসড়কের এই কাজ যথাযথ ভাবে আদায় করতে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের তদন্তের দাবী জানান। তদারকী কর্মকর্তা জানান, ইতোমধ্যে ওভারলে’র কাজ ৪০ভাগ ও অন্যান্য কাজগুলো শতভাগ শেষ হয়েছে। কিন্তু সড়কের দু’পাশে কোথাও হার্ড সোল্ডারের কাজ ও ওই কাজের উপর কার্পেটিংয়ের কাজ দেখা যায়নি।
এলাকাবাসি জানান; সড়কের দু’পাশে হার্ড সোল্ডারের কাজগুলো আগেই করা ছিল। বর্তমান দায়ীত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান হার্ড সোল্ডারের ৮শ’ মিটারের কাজ করেছেন বলে দাবী করেছেন। গত ডিসেম্বর মাসে কাজটি শুরু করে চলতি মে মাসে কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহা সড়কের ওই জায়গায় যে পরিমান টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়ে তার অর্ধেক টাকাও ব্যয় হবে না বলে অভিজ্ঞমহল অভিমত ব্যক্ত করেছেন। সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আর. পি বড়–য়া বলেন, হার্ড সোল্ডার সড়কের সব জায়গায় দিতে হচ্ছে না, যেখানে দেয়া দরকার সেখানে দেয়া হচ্ছে।

পাঠকের মতামত: