ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

অসাধু ব্যবসায়ীরা বিক্রি করছে মেয়াদ উত্তীর্ণ ঔষধ

ovi medকক্সবাজার প্রতিনিধি :::
কক্সবাজার সদর উপজেলার চৌফলদন্ডী এলাকার অসুস্থ মোহাম্মদ ছিদ্দীক (২৬) চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ কিনতে যায় হাসপাতাল সড়কস্থ নতুন শেভরণ এর ‘রামু মেডিকো’ ফার্মেসীতে। ফার্মেসীতে ওই ঔষধটি না থাকায় বিক্রেতা শাহাবউদ্দীন (২৪) পাশ^বর্তী ‘মেসার্স প্রেসক্রিপশন’ ফার্মেসী থেকে ঔষধটি সংগ্রহ করে দেন। রাতে ওই ঔষধ খেয়ে খুবই অস্বস্তি বোধ করেন মোহাম্মদ ছিদ্দীক।
তার সন্দেহ হলে, ঔষধের প্লাষ্টিক কৌটায় দেখে তিনি চমকে উঠেন। ওই ঔষধের মেয়াদ শেষ হয়েছে এক মাস আগে। শুধু তাই নয় ওই ঔষধের দামও রাখা হয়েছে বাড়তি।
তিনি এই ঔষধ ক্রয় করেছেন বৃহস্পতিবার বিকালে। রাতে তিনি এই মেয়াদ উত্তীর্ণ ঔষধ খাওয়ার পরে শনিবার সকালে ‘রামু মেডিকো’ ফার্মেসীতে আসে আর বিষয়টি জানালে বিক্রেতা শাহাবউদ্দীনকে জানান, তিনি খেয়াল করেননি। এছাড়া মেয়াদ উত্তীর্ণ ওই ঔষধটি আনা হয়েছে পাশ^বর্তী ফার্মেসী ‘মেসার্স প্রেসক্রিপশন’ থেকে। এই বিষয়ে জানতে ‘মেসার্স প্রেসক্রিপশনে’ গেলে তারা প্রথমে স্বীকার করলেও পরে অস্বীকার করে আর রেগে যায়। এ নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়াও হয়। পরে মোহাম্মদ ছিদ্দীক প্রশাসনের সহযোগিতা নেন। ভূক্তভোগী মোহাম্মদ ছিদ্দীক চৌফলদন্ডীর মৃত আব্দুল গণির ছেলে।
শনিবার দুপুরে ঘটনাস্থলে ভ্রাম্যমান আদালত যায়। শনিবার দুপুরে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ইমরুল কায়েসের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমান আদালত অভিযান চালিয়ে মেয়াদ উত্তীর্ণ ঔষধ বিক্রির অপরাধে রামু মেডিকো ফার্মেসী’র শাহাবউদ্দিনকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করে। ঔষধ বিক্রেতা শাহাবউদ্দিন হলেন চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার নুরুল কবিরের ছেলে। এসময় ‘মেডিকো ফার্মেসী’তেও অভিযান চালানো হয়। তাদের কাছ থেকে ঔষধ নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে। যদিও শাহাবউদ্দিন বার বার ওই ফার্মেসী থেকেই ঔষধ কিনেছেন বলে দাবী করছিল। প্রমাণ না থাকায় তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়নি। এসময় হাসপাতাল সড়কস্থ আরো ৬টি ফার্মেসীতে অভিযান চালানো হয়। খতিয়ে দেখা হয় মেয়াদ উত্তীর্ণ ঔষধ আছে কিনা। আর কাগজ-পত্র ঠিক আছে কিনা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় লোকজন বলছেন, শুধু এই ফার্মেসীতে নয় বেশ কিছু ফার্মেসীতে মেয়াদ উত্তীর্ণ ঔষধ রয়েছে। যারা রোগী বুঝে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এসব বিক্রি করছে।
এ ব্যাপারে কলেজ শিক্ষক লিয়াকত মিয়া জানান, যারা মেয়াদ উত্তীর্ণ ঔষধ বিক্রি করে জনস্বাস্থ্যের ক্ষতি করছে তারা সমাজের অপরাধী। তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। আর ক্রেতাদেরও সচেতন থাকতে হবে ঔষধের গায়ে মেয়াদ দেখার ক্ষেত্রে। মনে রাখতে হবে অবশ্যই যেন মেয়াদ দেখে ঔষধ ক্রয় করে।
নিবার্হী ম্যাজিষ্ট্রেট ইমরুল কায়েস জানান, মেয়াদ উত্তীর্ণ ঔষধ বিক্রির অপরাধে শাহাবউদ্দিনকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। কেউ এধরণের জঘন্য অপরাধ করলে তাকে অবশ্যই শাস্তি ভোগ করতে হবে।
অভিযান নিবার্হী ম্যাজিষ্ট্রেটকে সহযোগিতা করেন, কক্সবাজার সদর থানার একদল পুলিশ ও একদল আনসার ব্যাটেলিয়ান সদস্য।

পাঠকের মতামত: