ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

বালুখালী পান বাজারে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে শেড নির্মাণের দাবী ব্যবসায়ীদের

eeeফারুক আহমদ, উখিয়া ॥

উখিয়ার সীমান্তবর্তী বালুখালী পানবাজারটি নানা অব্যবস্থাপনা, সুষ্ট নীতিমালার অভাব ও জবরদখলকারীদের অবৈধ স্থাপনা তৈরির কারণে ক্রেতা-বিক্রেতাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে বর্ষা মৌসুমের আগেই বাজার শেড নির্মাণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নিকট জোরদাবী জানিয়েছেন ব্যবসায়ীগণ।

সরজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, বালুখালী পানবাজারটি সংস্কারের অভাবে অযন্ত ও অবহেলায় দিন দিন নাজুক পরিস্থিতিতে অবতীর্ণ হয়। বিশেষ করে বালুখালী ঐতিহ্যবাহী বাজারটি বিলুপ্ত হয়ে গেলে বৃহত্তর এলাকায় হাজার হাজার লোকজনের একমাত্র নির্ভরশীল হয়ে পড়ে এ পানবাজারটি।

বাজার কমিটির সভাপতি সাবেক মেম্বার আলী আহমদ বলেন, প্রতিদিন পানবাজারে তরিতরকারী ও কাঁচা মাছ সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের হাট বসে। তবে বাজারে কোন প্রকার সরকারী শেড না থাকায় পণ্য সামগ্রী ক্রয়-বিক্রয় করতে সীমাহীন কষ্ট শিকার হতে হয়। বিশেষ করে কতিপয় মহল সরকারী জায়গার উপর অবৈধ স্থাপনা তৈরি করে বাজারটি জবরদখল করে রেখেছে। সাধারণ সম্পাদক ডাক্তার ফরিদ আলম জানান, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে নির্ধারিত জায়গায় শেড নির্মাণ করা হলে সরকার বাজার খাত থেকে বিপুল পরিমান রাজস্ব আদায় করতে সক্ষম হবে।

তরকারী ব্যবসায়ী শাহাব উদ্দিন ও নজির আহমদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বালুখালী পানবাজারটি উপজেলা প্রশাসন ইজারা প্রদান করলেও খুচরা ব্যবসায়ীদের বসার কোন স্থান নেই। সব জায়গায় অবৈধ স্থাপনা। এলাকায় উৎপাদিত কৃষি পণ্য সামগ্রী কিংবা সবজি জাতীয় পণ্য ক্রয়-বিক্রি কালে অবৈধ জবরদখলকারীরা জোরপূর্বক ভাবে অতিরিক্ত টাকা দাবী করে। টাকা না দিতে চাইলে বাজারে না আসার জন্য হুমকি ধমকি দেয়।

এদিকে বর্তমানে বৃহত্তর বালুখালীর প্রায় ১৫টি গ্রামের এক মাত্র হাট হচ্ছে এ পানবাজারটি। প্রতিদিন অসংখ্য ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগন ঘটে। তবে বেশ কয়েকবছর ধরে সরকারী জায়গার উপর অবৈধ স্থাপনা তৈরি করে বাজারটি এক প্রকার জবর দখল করে রেখেছে। কেউ হাট বাজারে উৎপাদিত পণ্য সামগ্রী ক্রয় ও বিক্রয় করতে চাইলে তাদেরকে অতিরিক্ত টাকা দিতে হয়। এ ঘটনা নিয়ে প্রায় সময় নানা ঝগড়া বিবাদের ঘটনাও ঘটে। সরকারী টোল আদায়কারী কাশেম মিয়া অভিযোগ করে বলেন, বাজারের ইজারা আদায় করতে গেলে জবরদখলকারী ও অবৈধ স্থাপনার মালিকগণ বাঁধা দেয়। ফলে সরকারী ভাবে নির্ধারিত রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্য মাত্রা পূূরণ নাও হতে পারে।

কাঁচা মাছ ব্যবসায়ী জিল্লুর রহমান ও ফরিদ আলম বলেন, সরকারী ভাবে কোন বাজার শেড না থাকায় রোদে পুড়ে ঝড়ে ভিজে আমাদেরকে ব্যবসা করতে হচ্ছে। এতে করে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের সীমাহীন দুর্ভোগে পড়তে হয়।

সচেতন নাগরিক সমাজ ও ক্রেতা-বিক্রেতাগণ অবিলম্বে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে বাজারে পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ের সুবিধার্থে শেড নির্মাণ করার জন্য নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট জোরদাবী জানিয়েছেন।

######################3

উখিয়া নতুন উদ্ভাবিত বিটি বেগুন চাষে অধিক

ফলন উৎপাদন, চাষীদের মুখে হাঁসি

ফারুক আহমদ, উখিয়া ॥ ।

উখিয়ায় নতুন জাতের উদ্ভাবিত নতুন জাতের বারি বিটি বেগুন চাষ করে অধিক ফলন উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছে চাষীরা। ফলন ছিদ্রকারী পোকা মুক্ত বিটি বেগুনের পরীক্ষামূলক চাষ করে ফলন ভাল হওয়ায় চাষীদের মুখে হাঁসি ফুটেছে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, কৃষি গবেষনা ইউনিস্টিউটের বিষেজ্ঞগণ ব্যাপক গবেষনা চালিয়ে নতুন জাতের বারি বিটি বেগুন উদ্ভাবন করা হয়। মূলত পোকা মাকড়ের হাত থেকে রক্ষা ও কীটনাশক ব্যবহার না করে বিটি বেগুন চাষ করা সম্ভব। গবেষনায় দেখা যায় উক্ত নতুন জাতের বেগুন চাষে ফল ছিদ্রকারী পোকা আক্রমন করতে পারে না।

এদিকে উখিয়ার রতœাপালং ইউনিয়নের ভালুকিয়া থিমছড়ি গ্রামের চাষী চলতি রবিমৌসুমে নতুন জাতের উদ্ভাবিত বিটি বেগুন চাষ করেছে। পরীক্ষামূলক ৬০ বিঘা জায়গায় তিনি চাষ করে দ্বিগুন ফলন উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছে। চাষী হারুন জানান, উখিয়া কৃষি বিভাগের পরামর্শে উদ্বুদ্ব হয়ে তিনি নতুন জাতের চাষ করে বেশ সফল হয়। তিনি আরও বলেন, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো: শরিফুল ইসলাম ও অন্যান্য উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ রোপন পদ্ধতি, পরিচর্যা, রোগ বালাইয় প্রতিরোধ, ফলন উৎপাদন বিষয়ে হাতে কলমে প্রশিক্ষণ প্রদান করেছেন। এছাড়াও বিনামূলে সার, বীজ সহ অন্যান্য কৃষি উপকরণ সামগ্রী প্রদান করেছে।

কক্সবাজার কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক আ.ক.ম শাহরিয়ার দৈনিক কক্সবাজার কে বলেন, নতুন উদ্ভাবিত বারি বিটি বেগুন চাষে কোন প্রকার পোকা মাকড় আক্রমণ করতে পারবে না। কৃষি গবেষনা ইউনিস্টিটিউ গবেষকগণ পোকামাকড় বিরোধী এক প্রকার জিন নতুন বেগুন জাতে সংযুক্ত করায় উক্ত জাত চাষীদের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

উখিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো: শরিফুল ইসলাম নতুন জাতের বিটি বেগুন পরীক্ষামূলক ভাবে চাষ করে ব্যাপক সফলতা এসেছে। বিশেষ করে ফল ছিদ্রকারী পোকার আক্রমন করতে পারবে না এ চাষে। ফলে রোগ প্রতিরোধে কীটনাশক যেমনি প্রয়োজন হবে না তেমনি ভাবে চাষীদের অর্থ ও সময় সাশ্রয় হবে।

এদিকে গত সোমবার নতুন জাতের বিটি বেগুন চাষের ফলন উৎপাদন প্রদর্শনী উপলক্ষে কৃষক মাঠ দিবস ভালুকিয়া থিমছড়ি এলাকায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। চাষী হাজী মোহাম্মদ আবুল কাশেমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মাঠ দিবসে প্রধান অতিথি ছিলেন, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো: শরিফুল ইসলাম। এসময় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ও স্থানীয় কৃষক, কৃষানীগণ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে বক্তারা অধিক ফলন উৎপাদন ও অর্থনৈতিক ভাবে লাভেবান হওয়ার জন্য নতুন জাতের উদ্ভাবিত বিটি বেগুন চাষ করার জন্য চাষীদেরকে উদ্বুদ্ব করা হয়।

পাঠকের মতামত: