ঢাকা,শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স লামায় গণশুনানীতে দুদক কমিশনার ড. নাসিরউদ্দীন আহমেদ

মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা (বান্দরবান) প্রতিনিধি::01

প্রত্যেক সরকারি অফিসে অভিযোগের আলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সেবাগ্রহীতারা যেসব অভিযোগ করেছে তার সমাধান হিসেবে কি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তা জানার জন্য প্রতিমাসে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ফলোআপ করা হবে। অফিসগুলোতে দুর্নীতিমুক্ত সেবা নিশ্চিত করার জন্য সেবার মূল্য তালিকা এবং সিটিজেন চার্টার লাগাতে হবে। সাধারণ জনগণের হয়রানি রোধে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য প্রতিটি সেবাপ্রদানকারী প্রতিষ্ঠানকে সরকারী পরিপত্র অনুযায়ী প্রতি সপ্তাহে সম্ভব না হলেও মাসে অন্তত: একবার নিজ উদ্যোগে গণশুনানী আয়োজন করতে হবে। জনগণের তথ্য অধিকার নিশ্চিত করার জন্য তথ্য কর্মকর্তা নিয়োগ করতে হবে। প্রত্যেক অফিসকে তাদের তথ্য কর্মকর্তার নাম ও মোবাইল নম্বর তাদের দপ্তরে দৃশ্যমান স্থানে টাঙ্গাতে হবে। লামায় দুর্নীতির বিরুদ্ধে আয়োজিত গণশুনানীতে এইসব কথা বলেন দুদক কমিশনার ড. নাসিরউদ্দীন আহমেদ।

১২ এপ্রিল বুধবার লামা উপজেলা পরিষদ চত্বরে দুর্নীতি দমন কমিশন, সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক)-টিআইবি চকরিয়া ও দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি (দুপ্রক) লামা উক্ত গণশুনানীর আয়োজন করে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার খিন ওয়ান নু এর সভাপতিত্বে ও টিআইবি’র এরিয়া ম্যানেজার মোঃ জসিম উদ্দিনের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বান্দবানের জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক, বান্দরবার জেলা পুলিশ সুপার সঞ্জিব কুমার রায়, টিআইবি’র পরিচালক জসিম উদ্দিন ফেরদৌস, দুদকের পরিচালক (প্রতিরোধ ও গণসচেতনতা) মোঃ মনিরুজ্জামান, দুদকের বিভাগীয় পরিচালক মোঃ আবু সাঈদ, উপ-পরিচালক সৈয়দ আহমেদ, সনাক চকরিয়ার সভাপতি আলহাজ্ব ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী, দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি (দুপ্রক) এর উপজেলা সভাপতি মোঃ আইয়ুব প্রমুখ। এসময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান থোয়াইনু অং চৌধুরী, লামা পৌরসভার মেয়র মোঃ জহিরুল ইসলাম এবং স্থানীয় সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ।

আলোচনা সভা শেষে অনুষ্ঠিত গণশুনানীর মূল সেশনে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ জনগণের উত্থাপিত বিভিন্ন প্রশ্নের সরাসরি উত্তর দেন। যেসব অফিস গণশুনানীতে অংশগ্রহণ করেন সেগুলো হলো  যথাক্রমে উপজেলা ভূমি অফিস, সাব-রেজিষ্ট্রি আফিস, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, বিদ্যূৎ উন্নয়ন বোর্ড, হিসাবরক্ষণ অফিস, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস, প্রাথমিক শিক্ষা অফিস, সমাজেসেবা অফিস, সমবায় অফিস এবং উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়।

এক প্রশ্নকর্তার জবাবে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. উইলিয়াম লুসাই বলেন, আগামী এক মাসের মধ্যে এর এক্স-রে মেশিন মেরামত করে পুনরায় চালু ও এক সপ্তাহের মধ্যে এ্যাম্বুলেন্স চালু করার প্রতিশ্রুতি দেন। এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে জাল সার্টিফিকেট নিয়ে কয়েকজন শিক্ষক চাকুরী করছে। এবিষয়ে তথ্য চাইলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা দিতে চায় না। এ বিষয়ে শিক্ষা অফিসার যতিন্দ্র মোহন মন্ডল বলেন, সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে, কিন্তু তারা কোন তথ্য না দেয়ায় তথ্য দেয়া সম্ভব হয়নি। বিদ্যুৎ বিভাগের উপর এক প্রশ্নের জবাবে বিদ্যুৎ বিভাগের আবাসিক প্রকৌশলী অলিউল ইসলাম বলেন, মিটারের নামে আদায়কৃত অর্থ ফেরত দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

অপরদিকে কিছু লোকজন বলেন, আমরা গণশুনানীতে অংশ নিতে সকালে রেজিস্ট্রেশন করেছি। কিন্তু কেন যেন আমাদের শুনানীতে ডাকা হয়নি। তাছাড়া শুধুমাত্র ১০টি বিভগের বিষয়ে গণশুনানীর আয়োজন করার বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ। দুর্নীতি গ্রস্থ অনেক বিভাগগুলোকে কেন তালিকায় বাহিরে রাখা হল।

পাঠকের মতামত: