ঢাকা,বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জ-ডুলাহাজারা বিট কর্মকর্তা্ যোগসাজসের অভিযোগ চকরিয়ায় কোটি টাকা মূল্যের বনভূমি দখল

চকরিয়া অফিস :
চকরিয়ার ডুলাহাজরা মালুমঘাট বাজারের পাশে প্রভাবশালী ব্যক্তিরা রাতারাতি কোটি টাকা মূল্যের বনভূমি জবর দখল করে ঘেরা বেড়া দিয়ে নিয়েছে। বাজার কমিটি বাঁধা দেয়ার পরও প্রভাবশালীরা ওই জায়গায় গত কয়েকদিন ধরে প্রকাশ্যে মার্কেট নির্মাণ কাজ চালিয়ে আসছে। এতে বনকর্মীরা কোন বাঁধা দিচ্ছে না। অভিযোগ উঠেছে; ওই জায়গা দখলকারীদের কাছ থেকে ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জ  ডুলাহাজারা বিট কর্মকর্তা্  কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
এলাকাবাসি জানায়; গত কয়েকদিনের মধ্যে ডুলাহাজরা ইউনিয়নের আমিন ফিশারিজের মালিক প্রভাবশালী ব্যক্তি মোঃ রফিক উদ্দিন ও তার অংশীদার মন্জুর আলম মালুমঘাট বাজারে অবস্থিত বনবিভাগের মালিকানাধীন প্রায় কোটি টাকা মূল্যের একটি জায়গা দখল করে টিনের ঘেরা দিয়ে নিয়েছে। ঘেরার ভেতরে বহুতল মার্কেট করার জন্য ইটসহ নির্মাণ সামগ্রী মজুদ করছে। বাজার কমিটি তাতে বাঁধা দিলেও তারা কোন বাঁধা মানেনি। কিছুদিন আগে একই এলাকায় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা ক্ষমতাসীন দলের নাম ভাঙ্গিয়ে আরও বেশ কিছু মূল্যবান জমি জবরদখল করে মার্কেট নির্মাণ করেছে। ওই জায়গার ৫ শত গজের মধ্যে কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জ কর্মকর্তার কার্যালয় রয়েছে। ব্যবসায়ীরা জানান; রেঞ্জ ডুলাহাজারা বিট কর্মকর্তাকে খবর দিলেও তিনি কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। অভিযোগ রয়েছে; জবর দখলকারীরা বনবিভাগের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে নিয়েছেন। গত ৭ এপ্রিল মোঃ রফিক উদ্দিনকে রেঞ্জ কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়ে রেঞ্জ ও ডুলাহাজারা বিট কর্মকর্তার সাথে কথা বলতে দেখেছে এলাকাবাসি। এসময় ব্যবসায়ীরা মোঃ রফিক উদ্দিনের ছবিও তুলে রেখেছেন। এ জবর দখলের ঘটনায় বাজারের ব্যবসায়ীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।
এ ব্যাপারে রেঞ্জ কর্মকর্তা মোঃ মতিউর রহমানের সাথে কথা বলা হলে তিনি জানান; আমি আসার আগেও বাজারের পাশে বনভূমি জবর দখল করে অনেকগুলো মার্কেট হয়েছে। তখন তো কেউ কিছু বললেন না। তার প্রশ্ন এখন কোন এতো কথা ? পরে বলেন; বন ভূমি দখল হয়ে গেলে এগুলো মামলা করে উচ্ছেদ করতে হয়। এখন কিছুই করার নেই। তবে তিনি টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করেননি। বললেন যারা ক্ষমতায় থাকেন তাদের কিছু কিছু ছাড় দিতে হয়। বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, আমিন ফিশারিজের মালিক মোঃ রফিক উদ্দিন গত সরকারের আমলে বিএনপি নেতা ছিলেন, এখন ডুলাহাজরা ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি। মালুমঘাট বাজারে এর আগেও তিনি বনভূমি জবর দখল করে একটি দু’তলা ভবন ও একটি কলোনী নির্মাণ করেছেন। এ ব্যাপারে মোঃ রফিক উদ্দিন জানান, তিনি জমিটি টাকা দিয়ে কিনে নিয়েছেন। সেখানে তিনি বহুতল বিশিষ্ট একটি মার্কেট নির্মাণ করবেন। মালুমঘাট বাজারের সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইসহাক জানান; জবরদখলকারীদের বাঁধা দেয়া হলেও তারা তা মানেনি।
এলাকাবাসি জানায়; চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজরা ইউনিয়নের মালুমঘাট বাজারটি চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পাশে অবস্থিত। পার্শে রয়েছে বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক ও মালুমঘাট মেমোরিয়াল খ্রীস্টান হাসপাতাল। এতে ওই এলাকাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এতে বাজার সংলগ্ম বনবিভাগের জায়গাগুলো খুবই মূল্যবান হয়ে ওঠে। পুরো বাজারটি বনভূমির উপরে গড়ে উঠেছে। প্রতি বছরই এখানে প্রভাবশালীরা বনভূমি জবর দখল করে দোকানপাট, আবাসিক হোটেল ও মার্কেট গড়ে তুলেছে। এ সুযোগে বন কর্মকর্তা কর্মচারীরা হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। এলাকাবাসি জবরদখলকারীদের উচ্ছেদ করে কোটি টাকা মূল্যের বনভূমিটি উদ্ধারের দাবী জানান।

পাঠকের মতামত: