ঢাকা,শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

আওয়ামীলীগে নাকি কাউয়া ঢুকেছে! পেঁচা ঢুকার অপেক্ষায়

M r MAHAMOOD

এম.আর মাহমুদ :::

যোগাযোগ মন্ত্রী ও আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মনের দুঃখ ও ক্ষোভে বলে ফেলেছেন সত্য কথাটি। বিলম্ব হলেও ওনার উপলব্ধিতে দেশবাসী সাধুবাদ জানাচ্ছে। কথাটি হচ্ছে ‘দলে নাকি কাউয়া ঢুকেছে’। অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে কথাটি যথার্থ। এক সময়ের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতা, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি, সাংবাদিক ও প্রজ্ঞাবান রাজনৈতিক নেতা হিসেবে তিনি দলের বর্তমান অবস্থা দেখে হয়তো সত্য কথাটি অকপটে বলে ফেলেছেন। ত্যাগী ও প্রবীণ আ’লীগের নেতাকর্মীরা দলে কাউয়ার উপস্থিতি অনেক আগেই টের পেয়েছে। তাদের মতে ‘ভাত ছিটালে কাকের অভাব হয় না’। কারণ এখন দলের সুদিন। তাই কাউয়ারা দলে আশ্রয় নেয়া স্বাভাবিক। বসন্তকাল আসলে কোকিলের মধুর সুর শোনা যায়। কিন্তু দুঃসময়ে এসব কোকিলের সন্ধান পাওয়া যায় না। প্রবীণ আওয়ামীলীগ নেতার অভিমত, দলের জন্য ভাগ্য অনেক ভালো, এখন কাউয়া ঢুকেছে, এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য অমঙ্গলের প্রতীক হিসেবে খ্যাত প্যাঁচাও ঢুকবে। তখন কিন্তু অমঙ্গল থেকে পরিত্রাণ পেতে গোঁসাই (গোয়াই) পূঁজার আয়োজন করা ছাড়া বিকল্প কিছু থাকবে না। দলের সাধারণ সম্পাদক এমন মন্তব্য করায় দলের কাউয়ারা বড়ই নাখোশ। কারণ অন্ধকে অন্ধ, গুজাকে গুজা, বধিরকে বধির বললে বিপদ। তারা কিন্তু প্রচন্ড মাইন্ড করেন। সে জন্য অন্ধকে অন্ধ না বলে ‘পদ্মলোচন’ বললে সন্তুষ্ট হয়। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালো রাতে ঘাতকদের হাতে বঙ্গবন্ধুসহ পরিবারের সব সদস্য শহীদ হয়েছিল। ভাগ্যক্রমে ঘটনার সময় দেশে অনুপস্থিত থাকায় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ 45হাসিনা ও ছোট বোন শেখ রেহেনা বেঁচে যায়। তখন বঙ্গবন্ধু পরিবারে নির্মম ঘটনার পর কয়জন নেতাকর্মী রাস্তা ছিলেন তা নিয়ে রয়েছে নানা প্রশ্ন। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে বঙ্গবন্ধুর যোগ্য উত্তরসূরী আজকের প্রধানমন্ত্রীর দল ক্ষমতায় যাওয়ার পর বসন্তের কুকিলের ও কাকের অভাব হচ্ছেনা। যারা এক সময় আওয়ামীলীগের সাথে জড়িত ছিল না বা বঙ্গবন্ধুর করুণ মৃত্যুর পর উল্লাস নৃত্য করেছে, তারা এখন দলের জন্য ত্যাগী নেতাকর্মী হিসেবে কাউয়ার মতো দলে ঢুকে হরেক রকমের অঙ্গ সংগঠনের নাম ভাঙ্গিয়ে আখের গুছাতে ব্যস্ত। এসব তৎপরতা অনুধাবন করে দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও যোগাযোগ মন্ত্রী মনের দুঃখে বলে ফেলেছেন, দলে কাউয়া ঢুকেছে। আবার দলের ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাকর্মীরা মনে করছেন, এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে দলে শুধু কাউয়া নয় পেঁচাও ঢুকার অপেক্ষায়। এখন থেকে সচেতন না হলে এখন থেকে কাউয়া তাড়ানো উদ্যোগ না নিলে প্যাঁচার আগমন ঠেকানো কষ্টকর হবে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কাউয়া ও প্যাঁচাদের কারণে বিপর্যয় সৃষ্টি হতে পারে। কাউয়া নিজেকে খুবই ধুর্ত মনে করলেও কোকিলের ডিম তা দিয়ে বাচ্চা ফোটায় কাক। পরে যখন ডিম ফুটে কোকিলের ছানা বের হয়, তখন বুঝতে পারে ডিমগুলো কাউয়ার নয়। একটি প্রবাদ আছে ‘কাকের বাসায় কোকিলের ছা, জাত স্বভাবে করে রাঁ’। বর্তমানে দলের অঙ্গসংগঠনের নাম ভাঙ্গিয়ে বেশিরভাগ অনুপ্রবেশকারী কাউয়া রাতারাতি হাইব্রিড নেতা টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, দখল বেদখল, বন উজাড় সহ নানা অপকর্মে জড়িত। আবার কিছু কিছু কাউয়া যুবক মরণ নেশা ইয়াবাসহ মাদক দ্রব্য বেচা-বিক্রি করে রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনছে। তাদের চেহারা দেখলেই বুঝা যায়, কবে দলের সাথে যুক্ত হয়েছে। পুরানো মুজিব ভক্তদের চেহারা দেখলে বুঝা যায়, তারা কতই ত্যাগী। গায়ে মুজিব কোট জীর্ণশীর্ণ আর যারা নবাগত (কাউয়া) তাদের কোট চিকচিক করছে, পুরাতন হয় না। দল ক্ষমতায় যাওয়ার পর রাতারাতি দলে নেতাকর্মীর সংখ্যা ও হুহু করে বাড়ছে। আওয়ামীলীগের প্রাবীণ এক নেতা দুঃখ করে বলতে শোনা গেছে, জন্মসূত্রে হিন্দু পরিবারের কোন সদস্য ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলে সে নাকি গরুর মাংস বেশি খায়। তার কারণ হচ্ছে অতীতে যা খায়নি, তা পুষিয়ে নেয়ার জন্য। অনুরূপ অবস্থা চলছে আওয়ামীলীগের অনুপ্রবেশকারী কাউয়াদের। রসিক এক প্রবীণ ব্যক্তি মন্তব্য করতে শোনা গেছে, ‘ভাত ছিটালে কাউয়ার অভাব হয় না।’ পক্ষির মধ্যে কাক (কাউয়া) ধুর্ত, প্রানির মধ্যে শিয়াল, হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য অমঙ্গলের পাখি পেঁচা থেকে সাবধান হওয়া জরুরী। কাউয়ার সাথে সাথে পেঁচা ঢুকার সম্ভাবনা প্রবল। তাই এখনি সময় কাউয়া না তাড়ালে ফুলবাগানে ডালে ডালে হুতুম পেঁচা বসে যাবে। তখন বাগানের সৌন্দর্য্য নষ্ট হতে বেশি সময় অপেক্ষা করতে হবেনা। অতএব, সময় থাকতে কাউয়া তাড়ানোর উদ্যোগ না নিলে দলের বিপর্যয় অনিবার্য। ##

পাঠকের মতামত: