ঢাকা,মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪

টেকনাফ তুলাতলী ও খারাইংগা ঘুনা ভিত্তিক শক্তিশালী ইয়াবা সিন্ডিকেট সক্রিয় ! হোয়াইক্যং সীমান্ত দিয়ে আসছে ইয়াবা মদ বিয়ার ও কারেন্ট জাল

yabaনিজস্ব প্রতিবেদক, টেকনাফ

পুলিশের ইয়াবা ও মাদক বিরোধী অভিযান স্বত্বেও থামছে না মাদক বিক্রেতা ও ইয়াবা ব্যাবসায়ীদের দৌরাত্ব। এলাকায় হাতের নাগালেই পাওয়া যায় ইয়াবা সহ বিভিন্ন মাদক দ্রব্য। টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের সীমান্ত পয়েন্ট ঝিমংখালী, কাঞ্জর পাড়া উনছিপ্রাং, লম্বাবিল, তেচ্ছিব্রীজ, হোয়াইক্যং খাল, খারাইংগা ঘুনা, উলুবনিয়া, কাটাখালী এলাকায় ইয়াবার পাশাপশি মদ, বিয়ার ও কারেন্ট জালের ব্যাবসা আবারো জমজমাট হয়ে উঠেছে। সম্প্রতি গত ২৪ মার্চ হোয়াইক্যং এর তুলাতলী এলাকার খারাইংগা ঘুনা নামক পয়েন্ট থেকে ক্রেতা সেজে আইনশৃংখলা বাহিনী কর্তৃক বড় মাপের ইয়াবার চালান আটক নিয়ে এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় চলছে। উদ্ধারকৃত উক্ত ইয়াবা তুলাতলী ভিত্তিক সিন্ডিকেট প্রধান এলাকার ইয়াবা ডন জনৈক শাহাব উদ্দিন,আরাফাত রহমান, ছৈয়দ আলম সিন্ডিকেটের বলে জানা গেছে। এব্যাপারে স্থানিয় পুলিশ ফাঁড়ির আইসি বিষয় টি আমাদের নলেজে ও আছে বলে এ প্রতিবেদক কে জানান।

জানা যায়, দীর্ঘ দিন থেকে একটি অসাধু চক্র হোয়াইক্যং মডেল ইউনিয়নের সীমান্ত জনপদ খারাইংগা ঘুনা, উলুবনিয়া,উনছিপ্রাং, লম্বাবিল,তেচ্ছিব্রীজ পয়েন্ট দিয়ে মিয়ানমার থেকে নিয়মিত আনছে ইয়াবার চালান, হুসকি মদও বিয়ার। পাশাপাশি উনছিপ্রাং ও কুতুবদিয়া পাড়া পয়েন্ট দিয়ে বার্মিজ সিগারেট, কারেন্ট জাল,পাইপ সহ নানা চোরাইপন্য আসছে দেদারসে। যাচ্ছে ভোজ্য তেল, চাল পিয়াজ ও বাংলাদেশী মেডিসিন। সীমান্তর এই চিহ্নিত চক্রটি প্রতিদিন সীমান্তের বিজিবির চোখে ফাঁকি দিয়ে মদ বিয়ার এনে উলুবনিয়া, হোয়াইক্যং বাজার,হ্নীলা বাজার, দমদমিয়া সেন্টমার্টিন যাতায়াতের ঘাঁট সহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় পাচার করে থাকে। একটি অসমর্থিত সূত্র জানায়, এই চোরাই সিন্ডিকেটের গডফাদারদের সাথে নাকি বিজিবির গোয়েন্দাদের দহরম মহরম রয়েছে। ফলে তারা এসব পাচারকাজ দেখে ও না দেখার ভাঁন করে। একটি বিশ^স্থ সূত্র জানায়, আইনশৃংলা রক্ষাকারী বাহিনীর লোকজনদের চলাচল,টহলের প্রতি খোঁজ খবর নিতে উল্লেখিত পয়েন্টের সুনির্দিষ্ট কয়েকটি জায়গায় চোরাচালানীদের গুপ্তচর থাকে। সারারাত জেগে পুলিশ বিজিবির টহলের প্রতি মিনিটে মিনিটে নজর রাখে। চোরাচালানীরা রাস্তায় থাকা দালালদের গ্রীন সিগনেল পেলেই মদ বিয়ার এনে তাদের আস্তানায় মওজুদ করে। অবস্থা বুঝে পরে তারা পাচারের ব্যবস্থা করে দেশের নানা প্রান্তে মদ বিয়ার ব্যাবসার সাথে বেশির ভাগ জড়িত উল্লেখিত এলাকার ইয়াবা ব্যাবসায়ীরা। একটি সুত্র জানায়, ইয়াবা ব্যাবসায়ীদের কারসাজিতে মিয়ানমার থেকে মদ বিয়ার আনে চোরাই সিন্ডিকেট টি। সম্প্রতি উনছিপ্রাং ও তেচ্ছিব্রীজ থেকে পরপর দুই বার চোরাইপন্যেও চালান আটক হলে ও রহস্যজনক কারণে জড়িত রা পার পেয়ে যাচ্ছে। এদিকে এক জরিপে দেখা যায়, ইয়াবা ব্যাবসায়ীরা বেশির ভাগই মদখোর। বিয়ার তো তাদের জন্য এনার্জি ড্রিংক। ফলে এসব মদ বিয়ার ব্যাবসার নেপথ্যে ইয়াবা ব্যাবসায়ীদের চাহিদা থাকায় বন্ধ হচ্ছেনা কিছুতেই। বর্তমানে হোয়াইক্যং এর যত্র তত্র মদ বিয়ার হাতের নাগালে পাওয়ায় উঠতি বয়সের যুবকরা এবং স্কুল,কলেজ,বিশ^বিদ্যালয় পড়–য়া ছাত্ররা ও এসব মদ বিয়ারের প্রতি ঝুঁকছে। মদ বিয়ারের সয়লাবের ফলে বিপথগামী হচ্ছে অসংখ্য যুবক ও ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে এসব পরিবারের। এলাকাবাসী জানায়, কতিপয় ইয়াবা মার্কা জনপ্রতিনিধি, অসাধু ইয়াবা ব্যাবসায়ী একটি রাজনৈতিক দলের আশ্রিতরাই বেশির ভাগ ইয়াবা ও মদ বিয়ার ব্যাবসার সাথে জড়িত। রাজনৈতিক আশ্রিত হওয়ায় তারা সর্বদা ধরাছোঁয়ার বাইরেই থাকে। ফলে এ সব ব্যাবসা কিছুতেই থামছেনা। ইউনিয়নের তুলাতলী ও খারাইগা ঘুনায় বেশির ভাগ ইয়াবা ব্যাবসায়ী এখন বে পরোয়া। ইয়াবা ডন জনৈক শাহাব উদ্দিন ওরফে ডিম বিয়ারীর নেতৃত্বে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট সক্রিয় রয়েছে। তারা পুলিশী অভিযানে ও ধরা ছোঁয়ার বাইরে থাকায় জনমনে নানা প্রশ্নের উকি দিয়েছে।

এব্যাপারে হোয়াইক্যং পুলিশের আইসি এস.আই রিপন কুমার দাশ এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলে, পুলিশের অভিযান চলমান আছে। ইয়াবা ব্যাবসায়ী যত বড় মাপের হোক কেউ রেহায় পাবেনা।

পাঠকের মতামত: