ঢাকা,শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

সীতাকুন্ডে নিহত নারী জঙ্গির বাড়ি নাইক্ষ্যংছড়ির বাইশারীতে

gfgf_1-1-566x540-566x540হাফিজুল ইসলাম চৌধুরী, নাইক্ষ্যংছড়ি :

চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে জঙ্গি আস্তায় নিহত নারী জঙ্গির পরিচয় মিলেছে। তার বাড়ি বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী।নিহত নারীর নাম জুবাইরা ইয়াসমিন (২২)। শিশুটিও তার। সে বাইশারী ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের যৌথ খামারপাড়ায় বসবাসকারী নুরুল আলম এবং জান্নাত আরার মেয়ে। নুরুল আলম মহেশখালী থেকে গত ২০বছর আগে এই এলাকায় বসতি গড়ে তোলেন।

বৃহস্পতিবার ৪ ঘন্টার রুদ্ধশ্বাস অভিযানে আত্মঘাতী বিস্ফোরণ এবং গুলিতে ওই নারীসহ চার জঙ্গির পাশাপাশি এক শিশু প্রাণ হারান।

শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৫টায় সরেজমিন বাইশারী বাজার হতে উত্তর দিকে অন্তত সাড়ে তিন কিলোমিটার দূরবর্তী যৌথ খামারপাড়ার অরণ্যে গিয়ে এসব তথ্যের সত্যতা পাওয়া যায়। টিনের চালায় নির্মিত মাটির ঘরেই জুবাইরা ইয়াসমিনের বাবা-মা’সহ স্বজনেরা বসবাস করছেন। প্রতিবেদকের উপস্থিতি দেখে ছোট্ট দুটি শিশু দৌঁড়ে এলেন। বললেন হারে চনদে (কাকে খোঁজছেন)। জুবাইরার মাকে-বলার সাথে সাথে ঘর থেকে বেরিয়ে এলেন তিনি।

জুবাইরা ইয়াসমিনের মা জান্নাত আরা জানান, গত আট মাস ধরে মেয়ের খবর নেই। তাকে স্বামী কামাল হোসেন বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে চট্টগ্রাম নিয়ে যায়। তবে কামাল হোসেনের বাড়িও বাইশারীর যৌথ খামারপাড়ায়। কিছুদিন পর ছেলে জহিরুল হকও তাদের কাছে চলে যায়। সেখানে জুবাইরার একটি ছেলে হয়েছিল বলে জানায়। ওই সন্তানের দেখাশুনার কথা বলে আরেক মেয়ে মনজি বেগমকে (১৬) তার দোলাভাই চট্টগ্রামে নেয়। কিন্তু এর পর থেকে তাদের সঙ্গে আর দেখা হয়নি। মাঝে মধ্যে মুঠোফোনে জানাত যে, তারা খুব সুখে আছেন। ভালো টাকা পয়সা পাচ্ছেন।

তিনি আরো জানান, জহিরুল হক ইসলাম পাগল ছেলে। জুবাইরা এবং মনজিও ধার্মিক ছিল। এখন জানতে পেরেছে যে জুবাইরা ইয়াসমিন এবং শিশু বোমা বিস্ফারণে মারা গেছে। আর কামাল হোসেন এবং মনজিরও কোন খবর নেই। তার ৮ ছেলে এবং ৪মেয়ের মধ্যে ৩জন হারিয়ে গেছে।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আবু তাহের বলেন, যৌথ খামারপাড়ায় কিছু রোহিঙ্গা এবং নোয়াখালিসহ দেশের নানা প্রান্তের লোকজন বসতি গড়েছেন। হয়তো এই জন্যে অনেকে বিপদগামী হচ্ছে। আমরা এলাকার নিখোঁজ ব্যক্তিদের তালিকা করা সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

বাইশারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলম বলেন, ‘বিষয়টি খুবই উদ্বেগের। বাইশারী প্রবেশমূখে পুলিশের তল্লাসি চৌকি বসানো উচিত। এ ব্যাপারে আমরা সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলবো।

বাইশারী পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের উপপরিদর্শক (এসআই) আবু মুসা বলেন, সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে খবরের সত্যতা মিলেছে। তা ওপর মহলকে অবগত করেছি। তাঁদের নির্দেশে এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা ইতোমধ্যে জোরদার করা হয়েছে।

পাঠকের মতামত: