ঢাকা,শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

দালাল থেকে সাবধান!

Chakaria Picture 28-02-2017,নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া :::

ভূমি অফিসগুলোতে দালাল ও ঘুষ ছাড়া কোনো কাজ হয় না। চাহিদা মতো না হলে কর্তারা ফাইলও চালাচালি করেন না। দীর্ঘদিন ধরে এমন অভিযোগের অন্ত নেই। আশার কথা, সেই চিত্র পাল্টানোর চেষ্টায় নানা উদ্যোগ নিয়েছেন চকরিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. দিদারুল আলম। মাসখানেক আগে তিনি এখানে যোগ দিয়েছেন।

উদ্যোগের অংশ হিসেবে অফিসের বাইরের প্রধান ফটকের দুই পাশের দেয়ালে বড় হরফে লিখে দেওয়া হয়েছে, ‘দালাল থেকে দূরে থাকুন, নিজের কাজ নিজে করুন’, ‘জমি কেনার পর মিউটেশন, জটিলতার হবে নিরসন’ এবং ‘আপনার ভূমি উন্নয়ন কর নিয়মিত পরিশোধ করুন। ’ তবে স্থানীয় জনগণের মাঝে প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে, ‘এই উদ্যোগ কি শেষপর্যন্ত বাস্তবায়ন হবে, ঘুষ ছাড়া কি সেবা মিলবে!

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চকরিয়া উপজেলা ভূমি অফিসে সেবাগ্রহীতা লোকজনকে হয়রানি থেকে রক্ষা করতে দালালমুক্ত করার জন্য ব্যতিক্রমী এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন মো. দিদারুল আলম। গত ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুতে তিনি এই অফিসে যোগদান করেন। ওই সময় তিনি সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে ভূমি অফিসকে দালাল ও ঘুষমুক্ত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছিলেন।

সূত্র জানায়, নতুন সহকারী কমিশনারের ঘোষণা অনুযায়ী ইতিমধ্যে দালাল চিহ্নিত করার জন্য অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে পরিচয়পত্র বিতরণ করেন তিনি। পাশাপাশি অফিসে আগত সেবাগ্রহীতা লোকজনকে সরকারি পরিসেবা নিতে করণীয় সম্পর্কে অবগত করতে অফিসের দেয়ালে ভূমি সংক্রান্ত নানা তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. দিদারুল আলম বলেন, ‘আমি এই অফিসে যোগদান করার পর বেশ কয়েকজন দালালকে দেখে হতচকিত হই। এর পর তাদেরকে অফিস এলাকা থেকে বের করে দিই। যাতে অফিসে আগত সেবাগ্রহীতারা কোনো অবস্থাতেই দালালের খপ্পরে না পড়েন। তবু যদি অফিস চলাকালীন সময়ে কোনো দালাল চোখে পড়লেই তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ’  তিনি জানান, দালালদের চিহ্নিত করতে ইতোমধ্যে ভূমি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে পরিচয়পত্র দেওয়া হয়েছে। অফিস চলাকালীন সময়ে তাদেরকে এই পরিচয়পত্র গলায় ঝুলিয়ে রাখতে হবে। যাতে কে কর্মচারী, কে দালাল চিহ্নিত করা যায়।

কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পরিচয়পত্র বিতরণের সময় উপস্থিত থাকা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) এরিয়া ম্যানেজার মো. জসিম উদ্দিন জানান, ভূমি অফিসে আগত সেবা গ্রহীতারা দালালের খপ্পরে পড়ে মোটা অংকের ঘুষ দিয়ে ভূমি বিষয়ক সেবা নিয়ে থাকেন। এ কারণে মানুষের মনে ভূমি অফিস সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা জন্মেছে। তাই এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে টিআইবিও পাশে রয়েছে ভূমি অফিসকে দালাল ও ঘুষমুক্ত করতে। সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) চকরিয়ার সভাপতি ও ডুলাহাজারা কলেজের অধ্যক্ষ ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘টিআইবির সহায়তায় সনাক চকরিয়া ভূমিখাতে নানা অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধে বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। নতুন সহকারী কমিশনারের নেওয়া নানা পদক্ষেপ বাস্তবায়ন হলে মানুষের মন থেকে ভূমি অফিস নিয়ে নেতিবাচক ধারণা দূর হবে।

পাঠকের মতামত: