ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

রুমা সড়কের ৪২টি বেইলি সেতু ঝুঁকিপূর্ণ

bb roবান্দরবান-রুমা সড়কের ৪২টি বেইলি সেতুর সব কটিই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়েই ১৯৮০–এর দশকে নির্মিত সেতুগুলোর ওপর দিয়ে চলছে যানবাহন। এসব সেতুর মধ্যে ওয়াইজংশন-রুমার অংশের ৩৬টি সেতু অতিরিক্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। বরাদ্দ না আসায় সেতুগুলো খুলে নতুন করে নির্মাণ করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন সড়কটি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা সেনাবাহিনীর ১৯ প্রকৌশল নির্মাণ ব্যাটালিয়নের (ইসিবি) কর্মকর্তারা।
সড়কের ৩৭ কিলোমিটার অংশে কুক্ষ্যংঝিরি এলাকায় গত ডিসেম্বর মাসে সিমেন্ট বহনকারী বড় ট্রাকসহ একটি সেতু ধসে যায়। কেউ হতাহত না হলেও তখন প্রায় এক সপ্তাহ ওই সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। পণ্যবাহী ট্রাক না হয়ে যাত্রীবাহী যানবাহন হলে এমন দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ঘটত বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন গণপরিবহনের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, ঝুঁকিপূর্ণ সেতুগুলোর কোথাও পাটাতন ক্ষয়ে গেছে, কোথাও সেতুর মূল ভিত বেঁকে গেছে। সেনাবাহিনী কয়েকটি সেতুর ওপর দিয়ে তিন টনের অধিক ভারী যানবাহন চলাচল না করার জন্য সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দিয়েছে। কিন্তু নিষেধ উপেক্ষা করে পাঁচ থেকে সাত টনের পাথর ও গাছের ট্রাক চলাচল করছে।
রুমা সড়কে কথা হয় ট্রাকচালক আমিনুর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ভারী গাড়ি নিয়ে সেতু অতিক্রম করার সময় আতঙ্ক ভর করে। সেতু এমনভাবে দোলে, মনে হয় এখনই পড়ে যাবে।
সেনাবাহিনীর ১৯ ইসিবির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বান্দরবান-রুমা সড়কে প্রায় ৪২টি সেতু রয়েছে। এগুলোর মধ্যে ওয়াইজংশন-রুমার অংশে ৩৬টি সেতু অতিরিক্ত ঝুঁকিপূর্ণ। সেগুলোর মধ্যে অতিরিক্ত ঝুঁকিপূর্ণ কয়েকটি সেতুতে তিন টনের অধিক ভারী যানবাহন চলাচলে নিষেধ করা হয়েছে।
সেনাবাহিনীর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা আরও জানান, ২৫-৩০ বছর আগে নির্মিত সব কটি সেতুই নড়বড়ে হয়েছে। সেগুলো ভেঙে নতুন করে নির্মাণ করা জরুরি। যেসব স্থানে সেতুর দৈর্ঘ্য বেশি, সেখানে বেইলি সেতুর পরিবর্তে গার্ডার সেতু করা দরকার। সে জন্য আটটি বেইলি সেতুকে গার্ডার সেতুতে রূপান্তর ও ২৮টি সেতু জরুরি ভিত্তিতে ভেঙে নতুনভাবে নির্মাণের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
১৯ ইসিবির কর্মকর্তারা বলেন, ওয়াইজংশন-রুমা অংশের সেতুগুলোসহ সড়কটি সংস্কার নয়, পুনর্নির্মাণ করা দরকার। কারণ, সার্বক্ষণিক রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কার করেও সড়কটি টেকসই করা যাচ্ছে না। এ জন্য পুনর্নির্মাণ করার লক্ষ্যে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) সেতু ও সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পটি অনুমোদিত হলে সড়কটি সংস্কার না করে পুনর্নির্মাণের কাজ শুরু করা হবে।

পাঠকের মতামত: