ঢাকা,শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

সেয়ানা পর্যটক ও সেরের ওপর সোয়া সের

IMG_20170217_090159আতিকুর রহমান মানিক :::

পর্যটনের চলমান ভরা মৌসূমে জমজমাট হয়ে উঠেছে সমুদ্রশহর কক্সবাজার। সপ্তাহের অন্যান্য দিনের চেয়ে শুক্র-শনিবার সপ্তাহিক ছুটির দিনে বেড়ে যায় পর্যটক আগমন। হোটেল-মোটেল-রেস্তোঁরায় উপচে পড়ে পর্যটক। এ সুযোগে প্রতিবছর পর্যটন মৌসূমে গলাকাটা ভাড়া ও বিল আদায় করে নেয় ব্যবসায়ীরা। আবাসিক হোটেলগুলোতে রুম ভাড়া বাড়িয়ে রাখা হয় কয়েকগুন। খাওয়ার হোটেল ও রেস্তোঁরাসমূহেও বিভিন্ন আইটেমের দাম বাড়িয়ে নেয়া হয়।
নিরূপায় পর্যটকরা প্রতিবছর গলাকাটা ব্যবসার শিকার হতে হতে এখন “সেয়ানা” অর্থাৎ সচেতন হয়ে গেছেন। গত কয়েকবছর ধরে কক্সবাজার ভ্রমনে ভিন্নধারার সূচনা করেছেন একশ্রেনীর পর্যটক। হোটেল-মোটেলের খুব একটা ধার ধারেননা তারা। ৩০/৪০ জন মিলে আরামদায়ক আসনের বড় বাস রিজার্ভ করে কক্সবাজারে আসেন। আসার সময় বাসের ছাদে করে প্লাস্টিক চেয়ার,  বড় সাইজের হান্ডি-পাতিল, বাসন পেয়ালা, বাবুর্চি, গ্যাস ট্যাংক ও স্টোভসহ রান্না এবং খাওয়ার যাবতীয় সরঞ্জাম নিয়ে আসেন। সুবিধাজনক স্হানে গাড়ী পার্কিং। তারপর স্হানীয় বাজার থেকে পছন্দসই বাজার করে শুরু হয় রান্না ও পেটপুরে খাওয়া । এরপর সমুদ্র দর্শন, হৈ হুল্লোড় ও ঘুরাঘুরি। আর রাতে গাড়ীর সিট এলিয়ে দিয়ে আরামের ঘুম। জনপ্রতি ২/৩ হাজার টাকা রুম ভাড়া ও হোটেল-রেস্তোঁরায় গলাকাটা বিল দেয়া থেকে অনেক দুরে এরা। হোটেল-মোটেল মালিকদের ধার না ধেরে খরচ সাশ্রয়ী সিস্টেমে এভাবেই কয়েকবছর ধরে চলছে কক্সবাজার বেড়ানো।
“ঠেকায় পড়ে শেখা” অভিনব এ সিস্টেম দিনদিন জনপ্রিয়তা পাচ্ছে দেশের বিভিন্ন এলাকার পর্যটকদের কাছে। আর তাই, মেরিন ড্রাইভ রোড, হিমছড়ি এলাকা ও শহরের বাহারছড়া খেলার মাঠ এলাকা এখন এই শ্রেনীর পর্যটক বাসে ঠাসা। প্রতিদিন হাজারো পর্যটক এভাবে সম্পূর্ণ নিজস্ব ব্যবস্হাপনা ও খরচ সাশ্রয়ীভাবে কক্সবাজার ভ্রমণে আসছেন।
নিজস্ব ব্যবস্হাপনা ও সাশ্রয়ী সিস্টেমে কক্সবাজার ভ্রমনে আসা উপরোক্ত শ্রেণী এখন “সেয়ানা পর্যটক” হিসাবে পরিচিতি পেয়েছেন।
কক্সবাজার ভ্রমনে আসা পর্যটকদের পকেট কাটার গলাকাটা বাণিজ্যের প্রতিবাদ ও প্রতিরোধে এ যেন “সেরের ওপর সোয়া সের” !

পাঠকের মতামত: