নামে নিষিদ্ধ থাকলেও বাস্তবে গাইড বই যেন বাধ্যতামূলক। প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে গাইড বই কিনতেই হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে এক বিষয়ের একাধিক গাইড বইও কিনতে হয়। শিক্ষার্থী এবং অভিবাবকদের দাবি লাইব্রেরী এবং প্রকাশনা সংস্থার সাথে স্কুলের শিক্ষকদের চুক্তি থাকে। তাই তাদের পছন্দমত গাইড বই কিনতে হচ্ছে। এতে একদিকে লেখাপড়ার খরচ বাড়ছে অন্যদিকে গাইড বই বিক্রি করে বিপুল টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এক শ্রেনীর মধ্যসত্বভোগি। সচেতন মহলের দাবি সরকার নামে গাইড বই নিষিদ্ধ করলেও কাজে তার বাস্তবায়ন নেই। এর ফলে গাইড বইয়ের অবাধ ব্যবহার বেড়েছে। এটা শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশের অন্তরায়।
কক্সবাজার কেজি এন্ড মডেল হাই স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেনীতে ভর্তি হওয়া আদনান (ছদ্মনাম)) জানায়, আমি মাত্র কয়েক দিন স্কুলে ক্লাস করেছি। এর মধ্যেই আমার কয়েকজন বন্ধুর কাছে দেখছি তারা প্রায় বইয়ের গাইড বই কিনেছে। আমার ক্লাস শিক্ষক একটি লাইব্রেরীর নাম বলেছেন, সেখান থেকে গাইড বই কিনতে। আমি পরদিন সেই লাইব্রেরী থেকে ২টি গাইড বই কিনেছি। এখন দেখছি ক্লাসের সবাই গাইড বই কিনে নিয়েছে এবং ক্লাসেও গাইড বইয়ের ব্যবহার হচ্ছে। তার মতে, ৫ম শ্রেণির জেএসসি পরীক্ষার সময় ২টি গাইড বই কিনিয়েছিল শিক্ষকরা।
একইভাবে শহরের ঘোনারপাড়া নিবাসী শান্তা পাল নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা অনেক আগে থেকেই গাইড বই ব্যবহার করছি। এখানে দোষের কি আছে আমি জানি না। আমাদের স্কুলের শিক্ষকরাও দেখি অনেক সময় ক্লাসে গাইড বই নিয়ে আসে। আমি একা নই, ক্লাসের সবাই গাইড বই দিয়েই পড়ছে। এমন কি অনেক সহপাঠিদের হাতে একেকটি বিষয়ের একাধিক গাইড বইও রয়েছে। তারা সেখান থেকে মিলিয়ে একটি উত্তর তৈরি করে।
এদিকে শুধু শহর কেন্দ্রিক নয় গ্রামের স্কুলগুলোতেও এখন প্রতিটি শিক্ষার্থীর হাতে হাতে গাইড বই ধরিয়ে দিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
এ ব্যাপারে পিএমখালী উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেনীর বেশ কয়েকজন ছাত্রছাত্রী জানায়, ইতোমধ্যে
আমাদের স্কুল থেকে বেশ কয়েকবার তাগাদা দেওয়া হয়েছে। আর আগের ৮ম শ্রেনীতে গাইড বই কিনে নাই এমন ছাত্র পাওয়া যাবে না। এমন কি কেউ টাকার অভাবে কিনতে না পারলে তাকে ক্লাসে সবার সামনে অপমানও করা হয়েছে।
রামু উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন ছাত্রী জানায়, আমাদের বড় সমস্যা হচ্ছে সদ্য বহিষ্কার হওয়া আমাদের প্রধান শিক্ষক ছৈয়দ করিম। তিনি বাজারে যে দামে গাইড বই পাওয়া যায় তার থেকে বেশি টাকা আমাদের কাছ থেকে নিয়ে কিনে আনতো এবং সেটাই আমাদের নিতে হতো। আমাদের হোস্টেল সুপার ম্যাডাম এ কাজে সহযোগিতা করতো। স্কুলে এমন কোন ছাত্র নাইÑযে গাইড বই কিনতে হয় নি। বরং অনেক ছাত্রী কে কয়েকটি গাইড বইও কিনতে হয়েছে।
বাহারছড়া এলাকার অভিভাবক আহসান করিম বলেন, আমার ছেলেমেয়েদের জন্য এখন পর্যন্ত বেশ কয়েক দফায় গাইড বই কিনতে হয়েছে। তাদের দাবি স্কুলের শিক্ষকরা একটি গাইড বইয়ের নাম বলেলও কোচিং শিক্ষকরা আরেকটি গাইড বই কিনতে বলে। এখন যেহেতু শিক্ষকদের সাথে বিতর্ক করতে পারছি না তাই বাধ্য হয়ে তাদের পছন্দমত লাইব্রেরী থেকেই গাইড বই কিনেছি। এখন স্কুলে একটি নিয়ে যায় আর কোচিং-এ অন্যটি। মাঝেখানে আমাদের টাকা খরচ হচ্ছে। এ সময় আরেক অভিভাবক সিরাজুল ইসলাম বলেন, লাইব্রেরী এবং প্রকাশনা সংস্থার সাথে শিক্ষকদের একটি চুক্তি থাকে। সেজন্য শিক্ষকরা যাদের কাছ থেকে টাকা বেশি পায়, তাদের গাইড বই কিনতে শিক্ষার্থীদের চাপ দেয়। আর লাইব্রেরীগুলো ভাল ব্যবসা করে। তবে আমার মতে, এখানে সরকারের দোষ বেশি। কারণ যদি গাইড বই নিষিদ্ধই হয়ে থাকে তাহলে সেটা ছাপানো হয় কিভাবে? আর বাজারে আসে কিভাবে আসলে এগুলো জনগণকে ধোকা দেওয়ার একটা কৌশল। মুখে বলে এক, বাস্তবে করে আরেক। সেখানে শুধু লাইব্রেরীগুলোকে দোষারোপ করে লাভ কি? আমার মতে, হয় একেবারে উন্মুক্ত করে দেন না হলে একেবারে নিষিদ্ধ করে দেন। প্রতি বছর শুনি গাইড বই নিয়ে অনেক লেখালেখি। এগুলোর একটা সমাধান হওয়া দরকার।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কক্সবাজারের রক্ষিত মার্কেটের রহমানিয়া লাইব্রেরী, প্রধান সড়কের বুক ভিলা, অন্বেষা, বিদ্যা সাগর, পাঠকবন্ধুসহ বেশ কয়েকটি লাইব্রেরী স্কুলের শিক্ষকদের সাথে গোপন চুক্তি করে জমজমাট গাইড ব্যবসা করছে।
এ ব্যাপারে কক্সবাজারের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ এবং সচেতন মহলের দাবি গাইড বই নিয়ে সরকারের মনোভাব পরিষ্কার করা দরকার। না হলে শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আর এক শ্রেনীর মধ্যসত্বভোগিরা লাভবান হবে।
প্রকাশ:
২০১৭-০২-০৬ ১০:১৬:৫৬
আপডেট:২০১৭-০২-০৬ ১০:১৬:৫৬
- ঈদগাঁও উপজেলার ইউপি নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে প্রশাসন বদ্ধ পরিকর-জেলা প্রশাসক
- চকরিয়ায় যাত্রীবাহি জীপ গাড়ি ও মোটরসাইকেল মুখোমুখি সংর্ঘষে আরোহী যুবক নিহত
- সেলিম-শফির খুনীদের এলাকায় ডুকতে দেয়া হবে না
- চকরিয়া মানিকপুরে সন্ত্রাসী হামলায় আহত চৌকিদার শফিউলের মৃত্যু
- সরকার বিদেশ ফেরত কর্মীদের কর্মসংস্থান সুযোগসহ নানা সুবিধা দিয়ে যাচ্ছেন
- চকরিয়ায় মানিকপুরে চৌকিদারসহ ২ জনকে কুপিয়ে হত্যা
- চকরিয়া উপজেলা পরিষদে বঙ্গবন্ধুর নতুন ভাস্কর্য ও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপনে সম্ভাব্য স্থান নির্ধারণ
- বৃদ্ধা মরিয়মের বাড়ি থেকে লুটে নেওয়া দুইটি গরু ১৭ দিনেও উদ্ধার করতে পারেনি পেকুয়া থানা পুলিশ
- চকরিয়ায় মোটর সাইকেল থামিয়ে তল্লাশি, ৪ হাজার ৮শত পিস ইয়াবাসহ মাদক কারবারি গ্রেফতার
- চকরিয়া শাউউবি-২০০০ ব্যাচের বন্ধু ও পারিবারিক মিলিয়ন মেলা অনুষ্ঠিত
- চকরিয়ায় জমি বিরোধের জেরে সন্ত্রাসী হামলা, গুলিবর্ষণ, গুলিবিদ্ধ হয়ে নারীসহ ৬ জন আহত
- চকরিয়ায় জমি বিরোধের জেরে সন্ত্রাসী হামলা, গুলিবর্ষণ, গুলিবিদ্ধ হয়ে নারীসহ ৬ জন আহত
- চকরিয়ায় মানিকপুরে চৌকিদারসহ ২ জনকে কুপিয়ে হত্যা
- চকরিয়া শাউউবি-২০০০ ব্যাচের বন্ধু ও পারিবারিক মিলিয়ন মেলা অনুষ্ঠিত
- চকরিয়ায় মোটর সাইকেল থামিয়ে তল্লাশি, ৪ হাজার ৮শত পিস ইয়াবাসহ মাদক কারবারি গ্রেফতার
- বৃদ্ধা মরিয়মের বাড়ি থেকে লুটে নেওয়া দুইটি গরু ১৭ দিনেও উদ্ধার করতে পারেনি পেকুয়া থানা পুলিশ
- চকরিয়া উপজেলা পরিষদে বঙ্গবন্ধুর নতুন ভাস্কর্য ও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপনে সম্ভাব্য স্থান নির্ধারণ
- সরকার বিদেশ ফেরত কর্মীদের কর্মসংস্থান সুযোগসহ নানা সুবিধা দিয়ে যাচ্ছেন
- চকরিয়া মানিকপুরে সন্ত্রাসী হামলায় আহত চৌকিদার শফিউলের মৃত্যু
- ঈদগাঁও উপজেলার ইউপি নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে প্রশাসন বদ্ধ পরিকর-জেলা প্রশাসক
- চকরিয়ায় যাত্রীবাহি জীপ গাড়ি ও মোটরসাইকেল মুখোমুখি সংর্ঘষে আরোহী যুবক নিহত
- সেলিম-শফির খুনীদের এলাকায় ডুকতে দেয়া হবে না
পাঠকের মতামত: