ঢাকা,শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি জয়ের সেই ‘প্রতিক্রিয়া’ স্ট্যাটাস নিয়ে আবারও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড়

Untitled-2 copy(1)শাহজাহান চৌধুরী শাহীন, কক্সবাজার ॥

বরাবরই আলোচিত স্ট্যাটাস লিখে রাজনৈতিক নেতাকর্মী, সাধারণ মানুষ আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ব্যবহারকারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে আসছে কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি ইশতিয়াক আহম্মদ জয়।

কক্সবাজারের টেকনাফ-উখিয়া আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি আবদুর রহমান বদি ও প্রভাবশালী ছাত্রলীগ সভাপতি ইশতিয়াক আহম্মদ জয়ের মধ্যে সঠিক ! বুঝাবুঝির ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাসের সুত্র ধরে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।

দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তাকে অভিনন্দন জানান, লাইক ও কমেন্টস করে অনেকেই। আবার কর্মী সমর্থক ও ভক্তদের অনেকেই তার ছবি দিয়ে নিজ নিজ ফেসবুক আইডিতে ভবিষ্যত ‘ বীরের কন্ঠে বীরের আওয়াজ। সৎ ব্যক্তিরা সর্বদা তাদের লক্ষ্যে পৌঁছতে পারে ভাই। চালিয়ে যান। এধরনের কমেন্টস দিয়েছে।

এ নিয়ে পুরো পর্যটন জেলা কক্সবাজার টক অব দি টাউনের পাশাপাশি ফেসবুকে লেখা ছড়িয়ে পড়েছে। এতে করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড় শুরু হয়েছে।

জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি ইশতিয়া আহম্মদ জয়ে ফেজবুক পেইজ ওয়ালে দেয়া স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো।

 “প্রতিক্রীয়া”

 “এমপি বদির সাথে কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ইশতিয়াকের সকল ভুল বুঝাবুঝি ও দ্বন্দের অবসান”

গতকাল রাত থেকেই বিভিন্ন প্রিন্ট এবং অনলাইন সংবাদ মাধ্যমে এরকম নিউজ আসছে। এই সকল নিউজের প্রেক্ষিতে আমি বলতে বাধ্য হচ্ছি, এমপি বদির সাথে আমার কোন ভুল বুঝাবুঝি ছিলো না, এখনো নাই। তাঁর যেসব কর্মকাণ্ড দেশ ও দশের জন্য ক্ষতিকর তা নিয়ে আমি প্রতিবাদ করেছি এবং ভবিষ্যতেও করবো। এটাকে ভুল বুঝাবুঝি না বলে “সঠিক বুঝাবুঝি” বলে আখ্যায়িত করা উচিৎ বলে আমি মনে করি।

গতকাল ( সোমবার) কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে অনেকটা কাকতালীয়ভাবে এমপি বদির সাথে আমার দেখা হয়ে যায়। ওইসময় জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সর্বজন শ্রদ্ধেয় এডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা মামা ও সাধারণ সম্পাদক আমার অত্যন্ত শ্রদ্ধেয় প্রিয়নেতা মুজিব ভাই (মুজিবুর রহমান চেয়ারম্যান) সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

নানা কথাবার্তার এক পর্যায়ে আমাকে জিজ্ঞেস করা হয়, এমপি বদির সাথে আমার কি সমস্যা? তোমাদের মধ্যে সমস্যা থেকে থাকলে মিটমাট করে ফেলাটাই শ্রেয়। উত্তরে আমি উনাদের বলি-“কোন সমস্যা নাই আমার উনার সাথে। তবে তাঁর কিছু কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে আমাদের সমস্যা আছে।”

পাশেই চেয়ারে বসে থাকা এমপি বদি এরপর যে কথাগুলো বলেন তা আমার ভাল্লাগে, কথাগুলো অফ দ্য রেকর্ড ও একান্ত হওয়ায় তা প্রকাশ না করাটাই ভালো।

তবে তাঁর মূল কথা-“অতীতের ভুলগুলো নিয়ে পারস্পারিক অসহযোগিতাপূর্ণ আচরণ অব্যাহত থাকলে তা মূলত দল ও কক্সবাজারের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে।”

আমি স্পষ্টভাবে উনাকে বলি-” আপনি চাইলে ইয়াবা ও রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান খুব সহজেই হবে। শুধুমাত্র মৌখিক প্রতিশ্রুতি দিয়ে লাভ নাই, দরকার আপনার সদিচ্ছা। “ওই সময় আমার কথা শুনতে শুনতে এমপি মহোদয় রং চায়ের কাপে বিস্কুট ভিজিয়ে নিচ্ছিলেন আর মাথা নাড়াচ্ছিলেন।

এক পর্যায়ে এমপি বদি আমার কথার প্রত্যুত্তরে বলেন-

“ছাত্রলীগ আমাকে সহযোগীতা না করলে আমার একার পক্ষে সম্ভব না। তুমি আমার ভালো কাজের সহযোগীতা করো, আমি তোমার বড় ভাই, আমি তোমার প্রত্যাশা পূর্ণ করবো এবং আমার নিজের অবস্থান সুদৃঢ় ও স্পষ্ট করবো।”

আমি একমত হই এবং জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অনুরোধে এমপি বদির সাথে হ্যান্ডশেখ করি। তারপর উপস্থিত সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আমার সাথে আসা ছাত্রলীগের বিভিন্ন ইউনিটের নেতা কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে দলীয় কার্য্যালয় হইতে বের হয়ে পড়ি।

এই ব্যাপারটাকে যারা অন্যভাবে দেখছেন এবং এমপি বদির সাথে মোটা কিছুর বিনিময়ে রফাদফা বা দ্বন্দের অবসান হয়েছে বলে অপপ্রচার চালাচ্ছেন তাদের প্রতি একটা কথাই আমি বলতে চাইঃ

” টাকা বা কোন কিছুর বিনিময় দিয়ে আমাকে কেনা কখনোই সম্ভব না কারণ আমার লালন করা স্বপ্ন ও আদর্শ টাকার চেয়ে অনেক অনেক অনেক বড়।”

অপ-প্রচারকারীদের জীবন সুন্দর হোক। তাহাদের মস্তিষ্কে যেন শুভবুদ্ধির উদয় হয় মহান আল্লাহর কাছে আজকের দিনে এইটাই আমার প্রত্যাশা। বদি ভাই সহ সকলের জন্য ভালবাসা নিরন্তর ।

মঙ্গলবার বেলা ২টার সময় দেয়া এই স্ট্যাটালে হাজার হাজার লাইক ও কমেন্টস পড়ে যায়। অনেকে লিখেছেন দলের প্রতি সম্মান থেকেই দুজনের মধ্যে ভুল বুঝাবুঝির অবসান হয়েছে। যারা এমপি বদির সাথে মোটা কিছুর বিনিময়ে রফাদফা বলে সমালোচনা করছেন তারা মনে হয় মূল বিষয়টি উপলব্দি করতে পারেননি।’

পাঠকের মতামত: