ঢাকা,শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

চালের দাম বৃদ্ধিতে সিন্ডিকের কারসাজি

riceকক্সবাজার প্রতিনিধি :::
হু হু করে বেড়ে চলছে চালের দাম। গত এক মাসের ব্যবধানে কয়েক দফা বেড়েও এখনো স্থিতিশীল হয়নি। বরং প্রতি সপ্তাহে নির্দিষ্ট হারে বেড়ে চলছে। এক মাসের ব্যবধানে প্রতি কেজিতে ১০ টাকা পর্যন্ত চালের দাম বেড়েছে। এভাবে মাত্রাতিরিক্ত বেড়েও দাম স্থিতিশীল না হওয়া ভোক্তারা হতাশ হয়ে পড়েছেন। এতে বিপাকে পড়ছে নিন্ম মধ্যভিত্তের লোকজন। ব্যবসীয়রা দাবি করছেন, সঙ্কটের কারণে বেড়ে চলছে চালের দাম। একই সাথে সরকারের ‘কেজি ১০ টাকা’ চালের কর্মসূচীর প্রভাব পড়েছে।
অভিযোগ উঠেছে, সঙ্কট আর ১০ টাকার কর্মসূচীকে পুঁজি করে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট কারসাজির করছে। ব্যবসায়ীদের একটি সিন্ডিকেট এই সুযোগকে ব্যবহার করে অনেক ক্ষেত্রে কৃত্রিম সঙ্কটও সৃষ্টি করছে। এই সঙ্কটের কারণে কৌশলে বাড়িয়ে দিচ্ছে চালের দাম। এই সিন্ডিকেটটি কক্সবাজারেও সক্রিয় রয়েছে। কক্সবাজার শহরের চাউলবাজার কেন্দ্রিক এই সিন্ডিকেটটি সক্রিয় রয়েছে। এই কারণে কক্সবাজারে উপজেলার চেয়ে জেলা শহরে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে চাল।
কক্সবাজার শহরের চাউলবাজার ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সভাপতি এইচ.এম জসিম উদ্দীন দাবি করেন, গত মৌসুমে দেশের বিভিন্ন স্থানে অনেক জমিতে ধানচাষ করা হয়নি। উৎপাদন খরচের সাথে বাজারদরে নি¤œমূখী তারতম্য থাকায় কৃষকেরা ধানচাষ করেনি। এই কারণে গত আমন মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার নির্ধারিত ধান উৎপাদন হয়নি। ফলে বাজারে চালের সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে।
শহরের একাধিক চাল ব্যবসায়ী জানান, উৎপাদনজনিত চাল সঙ্কটের বিষয়টি তাদের জানা নেই। তারা জানেন, সরকারের ১০ টাকার কর্মসূচীর কারণেই চালের দাম বেড়েছে। তারা জানান, ১০ টাকার কর্মসূচী চালু হওয়ার দাম পড়ে যাওয়ার ভয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা চাল আমদানি করেনি। এই কারণে পাইকারী বাজারে বাড়ানো হয়েছে চালের দাম।
শহরের পিটিস্কুল বাজারের দোকানী রিয়াদ হোসেন বলেন, আমরা পাইকারী ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চালের দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে তারা আমাদের জানিয়েছেন, ১০ টাকার কর্মসূচীর কারণে চালের দাম বেড়েছে। এছাড়া অন্য কোনো সমস্যার কথা জানানো হয়নি।
অনুসন্ধান করে জানা গেছে, ১০ টাকার কর্মসূচীতে দরিদ্রদের মাঝে সরকার তিন মাস চাল দিয়েছে। বর্তমানে কর্মসূচীটি বন্ধ রয়েছে। এই কর্মসূচী বন্ধ হওয়ার সাথে সাথে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট কারসাজি করে চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। সারাদেশজুড়ে সিন্ডিকেটের প্রভাব পড়লেও চট্টগ্রাম বিভাগে পড়েছে বেশি। চট্টগ্রাম কেন্দ্রিক সিন্ডিকেটের সাথে কক্সবাজারের ব্যবসায়ীদের একটি সিন্ডিকেট জড়িত রয়েছে। এই সিন্ডিকেটটে চাউল বাজারের ব্যবসায়ীরাও রয়েছে।
চাউলবাজার ঘুরে দেখা গেছে, মিনিকেট বস্তা প্রতি বিক্রি হচ্ছে ২২০০ টাকা, সোনার চাবি ২২০০ টাকা, চিনিগুড়া ৫২০০ টাকা, বাসুমতি মিনিকেট ২৪০০ টাকা, ২৬০০ টাকা, কাটারি আতপ ২৮০০ টাকা, মিনার পাইজাম ২২০০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। তবে খুচরা বাজারে দাম আরো বাড়তি রয়েছে। খুচরা বাজারে প্রতিকেজিতে ২ টাকা বেশি বিক্রি হচ্ছে। উপজেলাতে এই দাম আরো ২ থেকে ৪ টাকা হারে কম রয়েছে।
চাউলবাজার ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সভাপতি এইচ.এম জসিম উদ্দীন জানান, গত সপ্তাহেও সব রকম চাল বস্তা প্রতি ৫০ টাকা বেড়েছে। দামও এখনো স্থিতিশীল হচ্ছে না। হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘পৃথিবী কোনো দেশে বাংলাদেশে মতো চালের নিন্মমূল্য নেই। বর্তমানে যে দাম রয়েছে তাতে কৃষকেরা খুশি। এই দাম বজায় থাকলে ধান উৎপাদনে কৃষকদের আগ্রহ বাড়বে।’ তবে দাম বাড়াতে ব্যসায়ী সিন্ডিকেটের কারসাজির বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।’ চালের দাম বাড়াতে বাজার মনিটরিং করার দাবি জানিয়েছেন ভোক্তারা।

পাঠকের মতামত: