ঢাকা,বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

রাতেই জমে উঠে কক্সবাজার শিল্প ও বাণিজ্য মেলা

zzশাহজাহান চৌধুরী শাহীন, কক্সবাজার  ॥

দুপুর গড়িয়ে বিকেল না হতেই টিকিট কাউন্টারে শিশু-নারী-পুরুষের দীর্ঘ সারি। দর্শনার্থীদের পদচারণে উড়ছে ধুলা। পণ্যের পসরা সাজিয়ে ক্রেতার দৃষ্টি আকর্ষণে বিক্রেতারা ডেকে চলেছেন অনবরত। ফটকেও ভিড়। ফটক না পেরোতেই চোখে পড়ল লোকে লোকারণ্য হয়ে পড়েছে ফোয়ারার পাশে বিশাল জায়গাটি। স্টল-প্যাভিলিয়নে তিল ধারণের জায়গা নেই।

গত শনিবার ও শুক্রবার গনপূর্ত বিভাগ মাঠে চলমান কক্সবাজার শিল্প ও বাণিজ্য মেলার ভেতর এবং বাইরের চিত্র এটি। দিনের চেয়ে সন্ধ্যার পরপরই জমজমাট হয়ে উঠে মেলা প্রাঙ্গন। আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা ১৫ ডিসেম্বর। শীত ও পর্যটনের ভরা মৌসুম পাওয়ায় এই মেলাজমে উঠেছে এবার। শুক্রবার ছুটির দিন থাকায় ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সার্বিক সহযোগীতায় এবং বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও কক্সবাজার সাংবাদিক ইউনিয়ন মাসব্যাপী শিল্প ও বাণিজ্য মেলার আয়োজন করে।

মেলার ভেতরে যেমন ক্রেতা-বিক্রেতার দর-কষাকষি চলেছে, ঠিক বাইরেও সমানে চলেছে ক্রেতা-বিক্রেতার দরদাম। ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে নানা ধরনের ছাড় এবং উপহার দেওয়া হচ্ছে। প্রতিবারের মতো মেলার ১১৬টি স্টল এবং ১৮টি প্যাভিলিয়ন সেজেছে নতুন সাজে। এর মধ্যে আএফএল এর প্যাভিলিয়ন এবং বাংলাদেশ সেনা বাহিনী রামু ক্যান্টমেন্টের এর বেকারী সপ একেবারে নতুনত্ব নিয়ে হাজির হয়েছেন কক্সবাজারবাসীর কাছে। মেলার মুল ফটক অনেকটা রাজকীয় আদলে তৈরি করা হয়েছে। ফটক পেরোলেই চোখে পড়বে বাহারী স্টল ও প্যাভেলিয়নগুলো। এছাড়া প্রাণ নুডুলস, ইফাদ আটা ময়দা সুজি বিভিন্ন পণ্যেও প্রর্দশনী, কিয়াম ক্রোকারিজ, মিয়াকো ক্রোকারিজ, রাজশাহী সিল্ক, সালমান জামদানি, জুস ব্লেজার প্যাভেলিয়ন।

দেশের দামী দামী কোম্পানী গুলোর প্যাভিলিয়নে বিছমিল্লাহ লেদার হাউসে ব্যাগ, জুতা, গৃহস্থালি সামগ্রী, পোশাকের প্রাধান্যই চোখে পড়বে বেশি।

এছাড়া খাবারের দোকান দুলালের জনপ্রিয় ঢাকা চটপটি, শিশুদের জন্য রয়েছে মজাদার রাইডস, জাদু প্রর্দশনি, বিনোদন বিচিত্রানুষ্টান ও নাগরদোলা।

এই প্যাভিলিয়নে কেনাকাটা করতে আসা পূজা বড়–য়া পুজি বলেন, ‘শুধু এই মেলা থেকেই বিভিন্ন দেশের নানা পণ্যসামগ্রী একসঙ্গে পাওয়া যায়। তাই দেখেশুনে কেনাকাটা করা যায়।’ তবে এবারের মেলায় সবকিছুর দাম একটু বেশি বলে মনে করেন তিনি।

মেলার ভেতরে গিয়ে দেখা গেছে, প্লাস্টিক সামগ্রীর প্যাভিলিয়নে ভিড় ছিল সবচেয়ে বেশি। কেনাবেচাও অন্যান্য সামগ্রীর চেয়ে বেশি হচ্ছে। আরএফএল সহ প্লাস্টিক সামগ্রীর দোকানে নির্দিষ্ট টাকার পণ্য কিনলেই ক্রেতারা পাচ্ছেন আকর্ষণীয় মুল্য ছাড়।

আরএফএল প্লাস্টিক প্যাভিলিয়নের পণ্যবিক্রেতা বলেন, ‘মেলার শুরুর দিকে ক্রেতাসমাগম কম হলেও এখন বেশ বেড়েছে। সাপ্তাহিক ছুটির দিনেগুলোতে ক্রেতা সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে আমাদের।’পোষাকের পাশাপাশি আসবাবপত্র প্রতিষ্ঠানগুলোতেও ছাড়ের ছড়াছড়ি।

শিল্প ও বাণিজ্য মেলা পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়ক সাহেদ আলী সাহেদ জানান, গণপূর্ত বিভাগের নিজস্ব সম্পত্তির উপর সুবিশাল জায়গায় মেলা আয়োজন করা হয়েছে। মেলায় দেশীয় প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে ১৩৪টি।

তিনি আরো জানান, কক্সবাজারে দীর্ঘ সমুদ্র সৈকত ছাড়া বিনোদনের জায়গা খুব একটা নেই বললেই চলে। অনেকে এই মেলার জন্য মুখিয়ে থাকে। মেলায় পরিবারের লোকজনকে নিয়ে একসঙ্গে কিছু সময়ের জন্য ঘোরাঘুরি, কেনাকাটা, খাওয়া দাওয়া করা যায়। ছুটির দিনগুলোতে মেলা বেশি জমে ওঠে। পুরো মার্চ মাসই এই মেলা চলবে বলে তিনি জানান।

পাঠকের মতামত: