ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে মহান বিজয় দিবস পালিত

02-775x540-775x540চবি প্রতিনিধি ::::
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহাসমারোহে ও আনন্দঘন পরিবেশে দু’দিন ব্যাপী কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে মহান বিজয় দিবস উদযাপন করা হয়েছে। বিজয়ের ৪৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে ১৫ ডিসেম্বর ২০১৬ সন্ধ্যা থেকে বিশ্ববিদ্যালয় স্বাধীনতা স্মৃতি সৌধ, শহীদ মিনার ও স্মৃতি সৌধ ‘স্মরণ’ সহ সকল গুরুত্বপূর্ণ ভবন দৃষ্টিনন্দন আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়। ১৬ ডিসেম্বর দিবাগত রাত ১২.০১ মিনিটে বিউগল বাজিয়ে বিজয় দিবসের সূচনা লগ্নকে স্বাগত জানানো হয়। ফজরের নামাজের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল মসজিদে মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মুনাজাত এবং অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের স্ব স্ব উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয় এবং সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবনসমূহে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। সকাল ৮.৩০ মি. চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় স্বাধীনতা স্মৃতি সৌধে পুস্পমাল্য অর্পণ করে লাখো শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন সমাজ বিজ্ঞানী প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী।

পরে পুস্পমাল্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন চ.বি. উপ-উপাচার্য বিশিষ্ট কথা সাহিত্যিক প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার, শিক্ষক সমিতি, অনুষদ সমূহের ডিনবৃন্দ, হল সমূহের প্রভোস্টবৃন্দ, বিভাগীয় সভাপতি ও ইনস্টিটিউট এবং গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালকবৃন্দ, অফিসার সমিতি, চ.বি. ক্লাব (ক্যাম্পাস ও শহর), চ.বি. মহিলা সংসদ, সমন্বয় কর্মকর্তা বিএনসিসি, চ.বি. ল্যাবরেটরী স্কুল এন্ড কলেজ, কর্মচারী সমিতি, কর্মচারী ইউনিয়ন, সাংবাদিক সমিতি, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ছাত্র ফেডারেশন সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনসমূহ। পুস্পমাল্য অর্পণ শেষে উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত হয় বিজয় র‌্যালী এবং র‌্যালী শেষে চ.বি. বঙ্গবন্ধু চত্বরে উপাচার্য ও উপ-উপাচার্য মহাকালের মহানায়ক স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুস্পমাল্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর বঙ্গবন্ধু চত্বরে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা। আলোচনা সভায় চ.বি.  উপাচার্য প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ভাষণ দেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন মাননীয় উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার।

উপাচার্য তাঁর ভাষণে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সকলকে মহান বিজয় দিবসের রক্তিম শুভেচ্ছা জানান। তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু, জাতীয় চারনেতা, মহান মুক্তিযুদ্ধে শাহাদাৎ বরণকারী ত্রিশলক্ষ শহীদ, ‘৭৫ এ নির্মমভাবে শহীদ বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যবর্গের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে নির্যাতিত দু’লক্ষ কন্য-জায়া-জননীর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেন।

তিনি বাঙালির স্বাধীনতা অর্জনের দীর্ঘ সংগ্রাম ও আন্দোলনের ইতিহাস এবং সর্বোপরি মহান মুক্তিযুদ্ধ আলোকপাত করে বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতা অর্জন বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শী, সম্মোহনী ও বলিষ্ট নেতৃত্ব এবং দেশপ্রেমিক আপামর জনগণের অপরিসীম ত্যাগের মহিমায় ভাস্মর। তিনি বিজয়ের এ দিনে দেশের তরুন প্রজন্মকে জ্ঞান-বিজ্ঞানে সমৃদ্ধ হয়ে সকল চক্রান্ত ও জঙ্গী-সন্ত্রাস প্রতিরোধ-প্রতিহত করে ইতিহাসের সত্যকে হৃদয়ে ধারণ করে বঙ্গবন্ধু তনয়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনার নির্ভীক ও সাহসী নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাঙ্খিত দৃশ্যমান ভূমিকা রাখার আহবান জানান।

উপ-উপাচার্য তাঁর ভাষণে সকলকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর আহবানে লাখো লাখো বাঙালির রক্তøাত ভালোবাসায় সিক্ত আমাদের মহান স্বাধীনতা। তিনি এ বিজয় ও স্বাধীনতাকে সুরক্ষা করতে দেশবাসীকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সকল চক্রান্তের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানান।

আলোচনা অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন অনুষ্ঠান উদযাপন কমিটির আহবায়ক চ.বি. প্রক্টর জনাব মোহাম্মদ আলী আজগর চৌধুরী। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ডেপুটি রেজিস্ট্রার (তথ্য) জনাব মো. ফরহাদ হোসেন খান। আলোচনা সভার শুরুতে পবিত্র কোরআন, পবিত্র গীতা ও পবিত্র ত্রিপিটক থেকে পাঠ করা হয় এবং শহীদদের সম্মানে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।

অনুষ্ঠানে চ.বি. বিভিন্ন অনুষদের ডিনবৃন্দ, শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ, হলসমূহের প্রভোস্টবৃন্দ, বিভাগীয় সভাপতি ও ইনস্টিটিউটের পরিচালকবৃন্দ, অফিসার সমিতি, চ.বি. ক্লাব (ক্যাম্পাস ও শহর) নেতৃবৃন্দ, চ.বি. মহিলা সংসদের সভানেত্রী সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ, কর্মচারী সমিতি, কর্মচারী ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দ সহ বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা সভা শেষে বঙ্গবন্ধু চত্বরে অনুষ্ঠিত হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং বিকেল ৩ টায় শারীরিক শিক্ষা বিভাগের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয় প্রীতি ক্রীড়া প্রতিযোগিতা।

পাঠকের মতামত: