ঢাকা,শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

উখিয়ায় ধর্ষক গুন্ডাবাহিনীর ভয়ে সন্ত্রস্ত ধর্ষিতার পরিবার

শহীদুল্লাহ্ কায়সার ॥

জেলার উখিয়া উপজেলায় ধর্ষক গুন্ডাবাহিনীর ভয়ে সন্ত্রস্ত ধর্ষিতার পরিবার। গত ৬ নভেম্বর হাসপাতালের অভ্যন্তরে ধর্ষণের শিকার ক্লাস সিক্সের ওই ছাত্রীর পরিবার জানালো এই শংকার কথা। চার ধর্ষকের একজন গ্রেপ্তার হলেও বাকিরা দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে। পুলিশের নাকের ডগার উপর ঘুরে বেড়ালেও তাদের টিকিটি পর্যন্ত স্পর্শ করা হচ্ছে না। ধর্ষকদের এমন উন্মত্ত উল্লাস শংকায় ফেলে দিয়েছে ধর্ষিতার পরিবারকে। এ কারণেই ধর্ষিতার পরিবার চায় ধর্ষক গুন্ডাবাহিনীর সদস্যদের গ্রেপ্তার পূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি।

লাজ-লজ্জা ফেলে গতকাল ধর্ষিতাসহ (নাম প্রকাশ করা হলো না) পরিবারের অন্য সদস্যরা ১৪ ডিসেম্বর মঙ্গলবার বিকেলে এসেছিলেন কক্সবাজার প্রেস ক্লাবে। সেখানেই তাঁরা বললো, দরিদ্র হওয়ার কারণে ধর্ষণের বিচার বঞ্চিত হওয়ার আশংকা করছেন তাঁরা। মামলা তো বটেই স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি পর্যন্ত এখন তাঁদের নেই। উখিয়ার একটি গু-াবাহিনীর ভয় তাঁদের সারাক্ষণ তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে।

যে গুন্ডাবাহিনী সর্দার সরকারি দলের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের উখিয়া উপজেলা সাধারণ সম্পাদক (সেক্রেটারি) মিথুন। সরকারি দলের নাম ভাঙিয়ে ইতোমধ্যে উপজেলাটিকে মগের মুল্লুকে পরিণত করেছে বাহিনীটি। সরকারি হাসপাতলে কর্মরত থেকে শুরু করে থানা পুলিশ পর্যন্ত এসব গুন্ডার কথায় ওঠে আর বসে। ধর্ষকের সাথে যে পুলিশ অফিসারের গলায়-গলায় ভাব। তাকেই দেয়া হয়েছে তদন্তের দায়িত্ব। গুন্ডার সংখ্যা অত্যন্ত কম হলেও রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকার কারণে তাদের বিরুদ্ধে কেউ কিছুই বলার সাহস পাচ্ছে না।

দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ায় আর ঘরে বসে থাকতে পারলো ধর্ষিতা জোনাকি বেগম (ছদ্মনাম)। তার উপর পৈশাচিক কায়দায় হামলে পড়াদের ব্যাপারে মুখ খুললো। বললো, “ ৫ ডিসেম্বর রাতে আমি মায়ের সাথে হাসপাতালে আসি। মায়ের পেটের অসুখ বেশি হওয়ায় আমাকে তার সঙ্গে হাসপাতালেই থেকে যেতে হয়। গভীর রাতে প্রাকৃতিক কাজ সারতে টয়লেটে যাওয়ার সময়ই ধর্ষকরা আমাকে জড়িয়ে ধরে। এরপর ছুরির মুখে হাসপাতাল সংলগ্ন কবরস্থানে নিয়ে যায়। সেখানেই পালাক্রমে ধর্ষণ করে। একজন গায়ের উপর উঠে তো অন্যরা উল্লাস করে। এভাবে এক এক জন করে আমাকে ধর্ষণ করতে থাকে।” পরদিন হাসপাতালে এসেই আমার মা-বাবাকে প্রকাশ্যে যাচ্ছেতাই গালাগালি করে। আমাকে দেখেই মাগী-মাগী বলে চিৎকর করতে থাকে। পাশাপাশি হুমকিও দেয়। এ সবই করেছে মকবুল হোসেন মিথুন। পরে জেনেছি সে সরকারি দলের রাজনীতি করে।”

ধর্ষিতার বাবা দাবি করলো, ইতোমধ্যে গুন্ডা সর্দার মিথুন তাকে মামলা তুলে নেয়ার হুমকি দিয়েছে। আর এটি করা না হলে উল্টো পুলিশে দেয়া হবে বলেও হুংকার ছাড়ে। এ কারণে তিনিসহ পুরো পরিবারের সদস্যদের স্বাভাবিক জীবনের গ্যারান্টি নেই। পাশাপাশি মিথুনের সঙ্গে দহরম-মহরম থাকা এসআই মশিউরকে মামলার দায়িত্ব দেয়ায় ধর্ষণ মামলার ভবিষ্যত নিয়েও শঙ্কিত। তিনি চান পুলিশ সুুপার অথবা একজন সৎ পুলিশ কর্মকর্তা মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব গ্রহণ করুক।

পাঠকের মতামত: