ঢাকা,শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

চকরিয়া পৌরসদরের সড়ক গুলো হকারের দখলে: রোগী-শিক্ষার্থী-পথচারীদের ভোগান্তি চরম

pic-3নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া :::
চকরিয়া পৌর শহরের চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কসহ পৌরসভার বিভিন্ন সড়ক গুলো ফুটপাতগুলো চলে যাচ্ছে দখলবাজদের হাতে। দিন দিন বাড়ছে এ দখল পক্রিয়া। এতে যানজট সৃষ্টি’র পাশাপাশি পৌর শহরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্টানের শিক্ষার্থী ও পথচারীদের পড়তে হচ্ছে চরম ভোগান্তিতে। আর এই অব্যবস্থাপনা জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবহেলাকে দায়ী করছেন সচেতন মহল। প্রয়োজন স্থায়ী সমাধান। এদিকে ফুটপাত দখলবাজরা বলছেন, রাজনৈতিক প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গের আস্কারায় তারা ফুটপাতে অবস্থান করছেন। অন্যদিকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছেন বার বার উচ্ছেদ করা হলেও তারা পুনরায় অবস্থান করছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, পৌর শহরের প্রধান সড়কের দু’ পার্শ্বে থানা রাস্তার মাথা থেকে শুরু করে এনসিসি ব্যাংক পর্যন্ত ফল বিক্রেতা ও গরম কাপড় বিক্রেতারা দখল করে রেখেছে ফুটপাত। এছাড়া ওই জায়গার বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সম্মুখের ফুটপাতগুলো দখল হয়ে আছে ওই প্রতিষ্ঠানের বাড়তি স্থাপনা এবং টমটম, সিএনজি, মাহিদ্রা, জীপ, হাইচ মাইক্রোসহ বিভিন্ন গাড়ি।
প্রধান সড়কের দু’পাশ ছাড়াও ওয়াপদা রোড, বালিকা বিদ্যালয় সড়ক ফুটপাত দখলের দৃশ্য দেখা যায়। চকরিয়া সরকারী হাসপাতাল গেইট সহ গুরুত্বপূর্ণ সড়ক গুলো ছোট ছোট টমটম, সিএনজি, মাহিদ্রা, জীপ গাড়ির কারণে লোকজন দ্রুত যেতে পারেনা হাসপাতাল কিংবা মসজিদে নামাজ পড়তে। সড়কে’র রাস্তার দুই পাশের ফুটপাত দখল করে রীতিমত নিয়মিত বাজার বসছে। এই দখল থেকে বাদ যাচ্ছে না উপসড়ক পর্যন্ড। যেখানে বসছে ছোট-খাট বিক্রয় কেন্দ্র।
অবৈধভাবে গণহারে ফুটপাত দখল করায় পৌর শহরের বড় ক্ষতি হচ্ছে। এতে স্থানীয় লোকজনের পাশাপাশি, বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ছাড়াও হয়রানির শিকার হচ্ছে লামা, আলীকদম, পেকুয়া, মহেশখালী, কুতুবদিয়াসহ দুর-দুরান্ত থেকে আসা লোকদের। অভিযোগ বলছেন, ভোক্তভূগিরা।
ফুটপাত দখল করা ব্যবসায়ীদের দেওয়া তথ্যে জানা যায়, পৌরসভার কতিপয় কিছু লোকের মাধ্যমে অঘোষিত ভাবে তারা ফুটপাত দখল করে ব্যবসা পরিচালনা করছে। তবে দিতে হচ্ছে দৈনিক, সাপ্তাহিক কিংবা মাসিক চাঁদা।

চকরিয়ার পৌর শহরে বহিরাগত আসা এক গরম কাপড় বিক্রেতা জানান, কে বা কারা টাকা তুলে তাদের নাম বলতে পারবেন না। তবে সমিতির দু’ একজন ব্যক্তি এসে প্রতি দিন বা মাসে টাকা তুলে নিয়ে যায়। অনেক সময় প্রতি সপ্তাহে।
এছাড়া ফুটপাত ব্যবসায়ীদের মধ্যে আবুল কালাম নামে একজন জানান, অবৈধভাবে ফুটপাতের বিক্রেতাদেরও একটি সমিতি রয়েছে। এখানে ব্যবসা করতে গেলে তাদের কাছে যেতে হয়। সমিতির নেতাদের কথার বাইরে কেউ বসতে পারেনা ।

চকরিয়া নিউজ‘ র সম্পাদক জহিরুল ইসলাম বলেন, চকরিয়া পৌরসভা থেকে লীজ নেয়ার নামে একদল চাদাঁবাজ দল একত্রিত হয়ে পথচারী চলাচলের গুরুত্বপূর্ণ সড়কের পথ বন্ধ করে শতশত হকার বসিয়ে দিব্যি ব্যবসা করে গেলেও কেউ বাধাঁ দিচ্ছে না। পৌরসদর চিরিংগা বাসষ্টেশনের মহাসড়কের দু পাশে প্রায় ৫ শতাধিক দোকান বসিয়ে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিলেও শিক্ষার্থী, হাসপাতালের রোগী ও পথচারী চলাচলে যে বাধাঁর সৃষ্টি হচ্ছে সে দিকে প্রশাসনসহ কারো মাথা ব্যথা নেই বললেও চলে। তবে এ মুহুর্তে হকার উচ্ছেদ করে পথচারীদের চলাচলের রাস্তা পরিস্কার রাখা জরুরী হয়ে পড়েছে।

এ ব্যাপারে এডভোটেক ওমর আলী বলেন, পৌর শহরের সড়কগুলো এমনিতে ছোট তারমধ্যে ফুটপাত দখল। এটি খুবই অনিয়ম। এতে ভোগান্তি চরমে। এই ফুটপাত দখলের বিষয়টি প্রশাসন বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতা ছাড়া আর কিছুই না। তাদের যথেষ্ট অবহেলা রয়েছে ফুটপাত দখলমুক্ত করণে। প্রশাসন চাইলে পুরো শহরের ফুটপাতগুলো দখলমুক্ত করে সুন্দর ও পরিপাটি পৌর নগরী হিসেবে শহরের সুন্দর্য ফিরিয়ে আনতে পারে।

কলেজ শিক্ষক প্রফেসর ছরওয়ার আলম জানান, এই গরীব ব্যবসায়ীদের উচ্চেদের বিষয়টি প্রাথমিকভাবে দেখতে অমানবিক মনে হলেও অন্য ভাবে তাদের ব্যবসা করার সুযোগ সৃষ্টি করে দিতে পারে পৌর কর্তৃপক্ষ। সড়ক দখল করে জনগনের ভোগান্তি সৃষ্টি করা এটি পৌর শহরের জন্য বড় ধরনের ক্ষতি।
এ ব্যাপারে জানতে চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলম গীর চৌধুরীকে ফোন করলেও তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। পরে পৌর প্রশাসনের এক কর্মকর্তা জানান, সড়কের ফুটপাত থেকে অবৈধ দখল উচ্ছেদ করা হয়েছিল অনেক বার। কিন্তু পুনরায় এই দখলবাজরা বসেছে। এছাড়া ফুটপাত দখল মুক্ত করতে পৌরসভা বরাবরই সক্রিয় রয়েছে।

পাঠকের মতামত: