ঢাকা,মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪

বান্দরবান সদর হাসপাতালে বেড সংকট, ফ্লোরে চলছে চিকিৎসা

11এনামুল হক কাশেমী, বান্দরবান ::

বান্দরবান সদর হাসপাতালে রোগীরা ন্যূনতম চিকিৎসা সেবাটুকুই পাচ্ছেন না। ভারপ্রাপ্ত আবাসিক ডাক্তারসহ কতিপয় ডাক্তার তাদের প্রাইভেট চেম্বারে রোগী দেখার কাজে মহাব্যস্ত সময় কাটানোয় রোগীরা যথাযথ ও সঠিক চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত থাকছেন। নারী ওয়ার্ডে ভর্তি হওয়া শিশুসহ নারী রোগীদের মেঝেতেই চিকিৎসা গ্রহণ করতে হচ্ছে। অথচ ৫০ বেডের ২টি পুরুষ ওয়ার্ডের বেশির ভাগ শয্যাই খালি পড়ে আছে। শীতের এ সময় বেড সংকটে শিশুসহ নারী রোগীরা মেঝেতে অবস্থান করায় তারা আরো অসুস্থ হয়ে পড়ছে। এছাড়া নানা দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। ভারপ্রাপ্ত আবাসিক চিকিৎসকের একগুঁয়েমি এবং দায়িত্বের চরম অবহেলায় সদর হাসপাতালে অব্যবস্থাপনা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে অভিযোগ রোগী ও তাদের স্বজনদের। হাসপাতালের রোস্টার মতে প্রতিদিন বিভিন্ন বিভাগে ১৪ জন করে ডাক্তারের উপস্থিতি এবং চিকিৎসার্থে আসা রোগীদের প্রয়োজনীয় সেবাপ্রদানে নিয়ম রয়েছে। কিন্তু সদর হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে মাত্র ৫/৭ জন ডাক্তারই কেবল উপস্থিত থাকেন, অর্ধেক ডাক্তারই কর্মস্থলে থাকেন না। আবার এ হাসপাতালের ২ জন ডাক্তার কথিত ছুটির নামে কর্মস্থলে নেই। ডাক্তার শাহানা রহমান এবং ডা. লোকেশ চন্দ্র দাশের চেম্বারেই নারী-পুরুষ রোগীদের ভিড় থাকে বেশি। কয়েকজন রোগী বলেন, সদর হাসপাতালে ২৪ ঘন্টাই উপস্থিত পাওয়া যায় ডা. লোকেশ চন্দ্র দাশকে। ভারপ্রাপ্ত আবাসিক ডা. প্রবীর বণিক অফিস সময়ে কর্মস্থলে উপস্থিত থাকলেও বিকেল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত তিনি প্রাইভেট চেম্বারে রোগী নিয়ে মহাব্যস্ত থাকেন। ফলে জরুরি চিকিৎসা সেবা এ খানে চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। অন্যদিকে ভারপ্রাপ্ত আবাসিক ডাক্তারসহ কতিপয় ডাক্তার রুটিনভিত্তিক প্রাইভেট চেম্বারে বেশি সময় কাটানোয় রোগীরা হাসপাতালের চেম্বার ছেড়ে তাঁদের প্রাইভেট চেম্বারের দিকেই বেশি ঝুঁকছেন বাধ্য হয়ে। হাসপাতালের এসব ডাক্তার রোগীদের প্রাইভেট চেম্ববারে দেখা করতে বাধ্য করায় গরিব রোগী ও তাদের অভিভাবকরা আর্থিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সদর হাসপাতালে চিকিৎসার্থে আসা বেশিরভাগ রোগীকে দোকান থেকে ওষুধপত্র কিনতে হয়, বিভিন্ন সুত্রে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে- আবাসিক ডাক্তারসহ কতিপয় ডাক্তার তাদের প্রাইভেট চেম্বার বা প্রাইভেট হাসপাতাল ঘিরে গড়ে উঠা দোকানগুলোতেই ওষুধপত্র কালোবাজারে বিক্রি করে আসছেন। ফলে মূল্যবান ওষুধপত্র সরবরাহ পায়না রোগীরা সদর হাসপাতাল থেকে। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত পর্যবেক্ষণে এসব তথ্য জানা গেছে।

অভিযোগ বিষয়ে তথ্য জানতে চাইলে সদর হাসপাতালেল ভারপ্রাপ্ত আবাসিক ডাক্তার প্রবীর বণিক এ প্রতিনিধিসহ ২ জন সাংবাদিককে বলেন, আমার কাছে কোন তথ্য নেই, অফিসই সব জানেন। তিনি অভিযোগ বিষয়ে কোন কথাই বলতে রাজি নন। সিভিল সার্জন ও সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. উদয়শংকর চাকমা বলেন, সদর হাসপাতালে নারী ও শিশু রোগীর সংখ্যা বর্তমানে বেশি। সদর হাসপাতালসহ পুরো জেলায় বিভিন্ন বিভাগে ১০৮ জন ডাক্তারের পদ থাকলেও বর্তমানে কর্মরত ডাক্তারের সংখ্যা মাত্র ৫১ জন, আবার তাদের মধ্য থেকেও ৭ জন ডাক্তার উচ্চতর প্রশিক্ষণে চলে গেছেন। সিভিল সার্জন বলেন, পুর্ণাঙ্গ আবাসিক মেডিকেল অফিসার নিয়োগ না থাকায় মৃতদেহ ময়না তদন্তের ক্ষেত্রে খুবই অসুবিধা হচ্ছে, তবু ম্যানেজ করে কাজ চালিয়ে যেতে হচ্ছে।

পাঠকের মতামত: